সিজানো উৎসবে মাছ চাই-ই। তাই সিজানো উৎসবের আগের দিন শনিবার, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় চড়া দরে মাছ বিক্রি হল। বাজার চড়লেও উৎসবের আমেজেই বাসিন্দারা রুই, কাতলার সঙ্গে চিংড়ি, পমফ্রেট ব্যাগে ভরলেন। রবিবার পঞ্চব্যাঞ্জনের সঙ্গে মাঠের নানা পদ দিয়েই সিজানো ভাত অথাৎ পান্তা খেলেন। এ ভাবেই রবিবার সিজানো উৎসবে মাতলেন বাসিন্দারা।
প্রতি বছর সরস্বতী পুজোর পরের দিন এই সিজানো উৎসব হয়। শতাব্দী প্রাচীন রীতি। এ দিন রান্নাবান্না বন্ধ থাকে। শিল-নোড়াতেও হাত দেওয়া হয় না। আগের দিনই রান্না সেরে রাখা হয়। তাই সরস্বতী পুজোর দিন দুই জেলার বাজার অনেক বেলা পর্যন্ত সরগরম হয়ে থাকে। মানবাজারের বাসিন্দা সুভাষ বন্দোপাধ্যায়, গণেশ দত্তরা বলেন, “মাছের দাম অন্য দিনের থেকে এ দিন বেড়ে যায়। কিন্তু উপায় নাই। সিজানো উৎসবে যে মাছ লাগবেই। তাই দামের পরোয়া করা যায় না।” আরেক বাসিন্দা স্বপন দত্ত বলেন, “রীতি বজায় রাখতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছি। মাছের বাজার আগুন। দাম কম হলে আরও একটু বেশি মাছ নেওয়া যেত।” |
অন্যান্য দিনের অপেক্ষায় এদিন মাছের বাজার যে চড়া তা স্বীকার করেছেন মাছ ব্যবসায়ীরাও। স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী মোহন ধীবর, স্বপন ধীবর বলেন, “এই উৎসবের কথা মাথায় রেখে সরস্বতী পুজোর দিন বেশি পরিমাণে মাছ নিয়ে আসি। বাজার চড়া থাকায় আমাদের কিছু করার থাকে না।” আবার কয়েক জন মৎসজীবী জানান, গত বছর বৃষ্টি না হওয়ায় ধান চাষ মার খেয়েছিল। ডোবা-পুকুর শুকিয়ে যাওয়ার জন্য মাছের চাষও হয়নি। দক্ষিণ ভারতের মাছ এনে বাজার ধরে রেখেছিলাম। ইদানিং মেদিনীপুরের ময়না থেকে মাছের জোগান আসছে। চলতি বছরে বৃষ্টি ভাল হওয়াতে ডোবা পুকুর ভর্তি হয়েছে। মাছ চাষও হয়েছে। তবে তা নেহাতই ছোট। এই সময় বড় মাছের চাহিদা বেশি থাকে। দক্ষিণ ভারতের এক থেকে তিন কেজি ওজনের রুই মাছের দর ছিল ১২০-১৩০ টাকা, কাতলার দর ছিল প্রতি কেজি ১৪০-১৮০ টাকা। দেশি রুই মাছের দাম ছিল কেজি প্রতি ১৫০-২০০ টাকা। দুই থেকে পাঁচ কেজি ওজনের কাতলার দাম ছিল ২৫০ টাকা প্রতি কেজি। রসিকজনের কথায়, মাছের দর বৃদ্ধির রক্তচক্ষুর কাছে রসনাকে কি বলি দেওয়া যায়? |