আজ থেকে সিপিএমের জেলা সম্মেলন শুরু
জ, সোমবার থেকে সিপিএমের ২১তম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলন শুরু হচ্ছে মেদিনীপুর শহরে। শহরের জেলা পরিষদ হলে সম্মেলন চলবে। সম্মেলনের শেষ দিন, অর্থাৎ ১ ফেব্রুয়ারি কলেজ মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশ হবে। উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র প্রমুখ। জেলা সম্মেলন ঘিরে ইতিমধ্যেই সেজে উঠেছে জেলা পরিষদ হল ও তার আশপাশের এলাকা। শহরের চারিদিকে লাল পতাকা লাগানো হয়েছে। তৈরি হয়েছে তোরণ। জেলা পরিষদ হলের অদূরে রয়েছে বিদ্যাসাগর হল। ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় এখানেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার সকালে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে সম্মেলন।
এ বারের জেলা সম্মেলন ঘিরে অবশ্য সিপিএম নেতা-কর্মীদের মধ্যে তেমন ‘চাপানউতোর’ নেই। কারণ, জেলা কমিটিতে বড় ধরনের কোনও রদবদল হচ্ছে না বলেই দলীয় সূত্রে খবর। কমিটির রাশ থাকছে সেই জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের হাতে। দীপকবাবুই জেলা সম্পাদক পদে পুনর্নির্বাচিত হচ্ছেন বলে খবর। এর আগে ২০তম জেলা সম্মেলন হয়েছিল খড়্গপুরের কলাইকুন্ডায়। সে বারও দীপকবাবুকে কোনও ‘লড়াই’-এর মুখে পড়তে হয়নি। খুব সহজেই সর্ব্বসম্মতিক্রমে সম্পাদক হন তিনি। জেলা কমিটির এক নেতার কাছে জানা গেল, সেই অর্থে ‘লড়াই’ হয়েছিল ২০০৪ সালে। তাঁর কথায়, “সেই বার রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে শেষমেশ সম্পাদক পদে থাকে যান দীপকদা। তারপরই বিক্ষুব্ধ-শিবিরের অনুগামী বলে পরিচিত বেশ কয়েকজনের ডানা ছাঁটেন তিনি।” কলাইকুন্ডার সম্মেলন থেকে ৮১ জনের জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এ বারও সদস্য সংখ্যার বড় হেরফের হবে না। দলীয় সূত্রে খবর, বয়সজনিত কারণে এ বার কয়েকজনকে জেলা কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। বদলে ‘নতুন মুখ’ হিসেবে কয়েকজন জেলা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন। জেলা কমিটির এক প্রবীণ সদস্য বলেন, “সংগঠনের কথা ভেবেই কিছু নতুন মুখ জেলা কমিটিতে আনা উচিত। সম্ভবত তা আসছেও।”
জেলা সম্মেলনের প্রস্তুতি মেদিনীপুরে। ছবিটি তুলেছেন সৌমেশ্বর মণ্ডল।
এই প্রথম ‘প্রতিকূল’ পরিস্থিতিতে সম্মেলন হচ্ছে জেলা সিপিএমের। এ কথা কবুল করছেন পার্টির অধিকাংশ নেতা-কর্মীই। যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ‘লাল-গড়’ বলে পরিচিত ছিল, রাজ্যে পালাবদলের পর সেই জেলার অধিকাংশ এলাকাই এখন সিপিএমের নিয়ন্ত্রণের বাইরে! দলের কয়েকশো শাখা অফিস বন্ধ। খুলছে না বেশ কয়েকটি লোকাল ও জোনাল কমিটির অফিসও। বহু নেতা-কর্মী বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে ঘরছাড়া। তপন ঘোষ, সুকুর আলি, অনুজ পাণ্ডে, এন্তাজ আলি’রা ‘পলাতক’। এই পরিস্থিতিতে গড়বেতা, কেশপুর, লালগড়ের মতো বেশ কয়েকটি জোনাল কমিটির সম্মেলন ‘গোপনে’ মেদিনীপুর শহরে করতে হয়েছে। জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় সম্মেলনের প্রচার করাও সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি কতটা ‘প্রতিকূল’, তা আরও একটি ঘটনা থেকে স্পষ্ট। ১ ফেব্রুয়ারির প্রকাশ্য সমাবেশের জন্য পর্যাপ্ত বাসও পায়নি জেলা সিপিএম। দলের জেলা কমিটির এক নেতা বলেন, “এত দিন চাইলেই বেসরকারি বাস পাওয়া যেত। এখন মালিকেরা আর এক কথায় বাস দিতে চাইছেন না। নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন। পর্যাপ্ত বাস না-পাওয়ায় এখন লরি ভাড়া করতে হচ্ছে!” এর পরের দিনই অর্থাৎ, ২ ফেব্রুয়ারি শহরের কলেজ মাঠে তৃণমূলের প্রকাশ্য সমাবেশের জন্য অবশ্য বাসের ‘অভাব’ হচ্ছে না।
আগে জেলা সিপিএমের সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৩ হাজার। ‘পরিবর্তিত’ পরিস্থিতিতে সদস্য সংখ্যা কিছুটা কমেছে বলেই দলীয় সূত্রে খবর। ফলে, জেলা সম্মেলনে প্রতিনিধির সংখ্যাও কমেছে। জেলা সিপিএমের এক নেতা জানান, এ বার প্রায় ৪০০ জন প্রতিনিধি যোগ দেবেন। গত বার সংখ্যাটা আরও বেশি ছিল। সম্মেলনে অনুপস্থিত থাকলেও তপন ঘোষের মতো দলের ‘সম্পদেরা’ এ বারও জেলা কমিটিতে থাকছেন বলেই দলীয় সূত্রে খবর। জেলা নেতৃত্বের বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়ে নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ সম্মেলনে আদৌ হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.