নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় মণিপুরে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন আর একজন। এই সঙ্গেই অভিযোগের আঙ্ল উঠেছে নাগা জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন মুইভা গোষ্ঠীর দিকে। ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এ বার পার্বত্য মণিপুরের মোট ১৮টি বুথে ফের ভোট চেয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন মণিপুরের শিক্ষামন্ত্রী ডি ডি থাইসি। নাগা জঙ্গিদের কবল থেকে পাঁচজন পুরুষ ও মহিলা আজ পালিয়ে এসেছেন।
সব মিলিয়ে, শান্তি আলোচনায় থাকা নাগা জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন (আই এম) মণিপুর নির্বাচনে, হত্যা, অপহরণ, বুথ দখল-সহ যে ভাবে সংঘর্ষ বিরতির নিয়ম তছনছ করেছে, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্য ও কেন্দ্র। গত কাল জঙ্গিরা বুথ দখলের চেষ্টা চালায়। মারা গিয়েছেন এক জওয়ান, এক নাবালিকা ও পাঁচজন পোলিং অফিসার। ভোটের আগের দিনেও জঙ্গিদের গুলিতে দুই সিআরপি জওয়ান মারা যান।
আজ সকালে, চান্দেল জেলার চাকপিকারং এলাকা থেকে দুই যুবক ও তিন মহিলা ইম্ফলে আসেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা দাবি করেন, এস এস ওলিশ নামে নির্দল প্রার্থীর কর্মী ছিলেন তাঁরা। কিন্তু নাগা এলাকায় নাগা পিপ্লস ফ্রন্টকে সমর্থন না করার ‘অপরাধে’ ২৭ জানুয়ারি এনএসসিএন (আই এম) জঙ্গিরা তাঁদের অপহরণ করে। একটি বাড়িতে তিন দিন আটকে রেখে পেটানো হয়েছে তাঁদের। সুযোগ বুঝে কাল সন্ধ্যায় তাঁরা পালান। এস কে সামপেম নামে দলের এক মহিলা সদস্য মাথায় গুরুতর চোট নিয়ে আপাতত রিমস্ হাসপাতালে ভর্তি।
পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের দাবি, চান্দেল জেলায় এনপিএফকে সমর্থন না করায় বহু লোককে মারধর করা হয়েছে। চান্দেলের পাশাপাশি, নাগা অধ্যুষিত সেনাপতি জেলাতেও ব্যাপক বুথ দখলের অভিযোগ তোলেন,স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক তথা শিক্ষামন্ত্রী ডি ডি থাইসি। তিনি জঙ্গিদের হাতে দখল হওয়া ১৮টি বুথের তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দেন। কংগ্রেস সভাপতি গাইখংগামের অভিযোগ, “নির্বাচন কমিশন পর্যাপ্ত নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করলেও, পার্বত্য মণিপুরে, বুথ দখল ও নাগা জঙ্গিদের দাপট রুখতে জওয়ানরা তেমন সক্রিয় ভূমিকা নেননি।” মণিপুরের ভোটে নাগা জঙ্গিদের অত্যাচারের বিষয়টি বিশদে জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরে প্রতিবাদ জানাচ্ছে মণিপুর সরকার।
এ দিকে, নির্বাচন পরবর্তী মণিপুরে, মণিপুর স্টেট কংগ্রেস ও সিপিআই প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে কাল রাতে পুলিশ গুলি চালায়। ঘটনাটি ঘটেছে থৌবালে। মোইরাংথেম রাগিনী দেবী নামে এক মহিলা গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা যান। নাওরেম সরোধিনী নামে অন্য এক মহিলা গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনার প্রতিবাদে, আজ সকাল থেকে আগামিকাল সন্ধ্যা অবধি থৌবালে বন্ধ ডাকা হয়েছে।
আজ সন্ধ্যা অবধি আসা খবর অনুযায়ী মণিপুরে মোটামুটি ৮২ শতাংশ ভোট হয়েছে। তবে, এখনও নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে পুরোপুরি এসে পৌঁছায়নি। কটি বুথে ফের ভোট নেওয়া হবে তা কমিশন পরে জানাবে। |