অবিলম্বে শিক্ষার অধিকার আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ করার জন্য আর্জি জানিয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী কপিল সিব্বল। কেন্দ্র প্রায় দু’ বছর আগে ওই আইন কার্যকর করলেও তা এখনও করে উঠতে পারেনি রাজ্য। ফলে আটকে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় অনুদান। আইন কার্যকরী করার প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যর্থ হচ্ছে বলেই মনে করছে মন্ত্রক।
দেশের সমস্ত শিশু (৬ থেকে ১৪ বছর) যাতে নিখরচায় বাধ্যতামূলক শিক্ষা পায়, তার জন্য গত ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে ওই আইন কার্যকর করেছিল কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। কিন্তু তার পরেও প্রায় দু’বছর কেটে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ওই আইন বলবৎ করতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাত, কর্নাটক ও গোয়া। মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, সিব্বল অবশ্য শুধু পশ্চিমবঙ্গকেই নন, কর্নাটক ও গুজরাতকেও অবিলম্বে ওই আইন কার্যকর করার অনুরোধ জানিয়েছেন। মন্ত্রকের বক্তব্য, ওই আইন কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত রাজ্য সরকারগুলির যে ৬৫ শতাংশ কেন্দ্রীয় অনুদান পাওয়ার কথা, তা-ও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হচ্ছে।
মন্ত্রক জানাচ্ছে, শিক্ষার অধিকার আইন কার্যকর হওয়ার এক বছর পর যে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল, তাতে দেখা গিয়েছে, গোটা দেশের প্রায় ৮১ লক্ষ শিশুকে শিক্ষার আঙিনায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। সে সময়ে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে স্কুলছুট পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল প্রায় ৭ লক্ষের কাছাকাছি। রাজ্যে অভাব রয়েছে শিক্ষক এবং বিদ্যালয়েরও। পশ্চিমবঙ্গের মতোই বছরখানেক আগে চিত্রটি কম-বেশি একই ছিল উত্তরপ্রদেশেও।
বহু তদ্বিরের পরে গত সেপ্টেম্বর মাসে ওই আইন কার্যকর করে মায়াবতী সরকার। ছয় মাস পরে মন্ত্রক উত্তরপ্রদেশের উদাহরণ দিয়ে জানাচ্ছে, ওই রাজ্যে আইন বলবতের পরে প্রায় ১০,৩৬৬ নিম্ন বুনিয়াদী ও এক হাজার উচ্চ বুনিয়াদী স্কুল নির্মাণের জন্য অর্থ মঞ্জুর করতে পেরেছে কেন্দ্র। মন্ত্রকের যুক্তি হল, রাজ্যগুলি ওই আইন বলবৎ করলে কেন্দ্রীয় অনুদান অনেক সহজে দেওয়া সম্ভব হয়। আজ কার্যত সেই যুক্তি দিয়েই যে সব রাজ্যে এখনও ওই আইন বলবৎ হয়নি, তাদের চিঠি দিয়েছেন সিব্বল। ৩০ জানুয়ারি দিল্লিতে শিক্ষার অধিকার আইন নিয়ে সমস্ত রাজ্যের শিক্ষা সচিবের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানেও ওই সব রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। |