ভোলবদলের কাজ শুরু হল রবীন্দ্রসরোবরের।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রবীন্দ্রসরোবরকে ‘সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পীঠস্থান’ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তা মেনে, কেআইটি এবং কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরা ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করতে চান সৌন্দর্যায়নের প্রথম পর্যায়ের কাজ। যদিও প্রায় চার বছর ধরে এই পরিকল্পনা ফাইলবন্দী ছিল। কেন এই অবস্থা জানতে চেয়ে, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী কেএমডিএকে অবিলম্বে কাজ শুরুর নির্দেশ দেন।
প্রায় ১৯২ একরের রবীন্দ্রসররোবরের মধ্যে ৭৩ একর জলাশয়। সরোবরের অব্যবস্থা ও অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ ওঠে। কয়েক বছর আগে কেআইটি-র তরফে জাতীয় হ্রদ সংরক্ষণ প্রকল্পের অধীনে রবীন্দ্রসরোবরের উন্নয়নের জন্য টাকা চাওয়া হয়। কেআইটি সূত্রে খবর, সেই টাকা এলেও তার বেশির ভাগ অংশই খরচ হয়নি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা কী ভাবে সৌন্দর্যায়ন হবে তা নিয়ে একটি রূপরেখাও জমা দেন কেআইটি-কে। কিন্তু বেশিরভাগ কাজই হয়নি। কেন এত দিন কাজ হয়নি? কেএমডিএ-র চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার বিবেক ভরদ্বাজ বলেন, “কিছু কাজ হয়েছে। অনেক জায়গায় ভাঙা পাঁচিল মেরামতি হয়েছে। সরোবরের ভিতরে চলার পথের কিছুটা সারাই হয়েছে। আমরা সরোবরে গিয়ে সব কিছু খতিয়ে দেখে দ্রুত পরিকল্পনা রূপায়ণের নির্দেশ দিয়েছি। দু’পর্যায়ে হবে এই কাজ।”
কেএমডিএ সূত্রে খবর, প্রথম পর্যায়ে খরচ হবে প্রায় এক কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ে, হকার ঢোকা বন্ধ করা হবে। ভ্রমণকারীদের নিরাপত্তার উপরে বিশেষ নজরদারি থাকবে। সরোবরের জল পরিষ্কার রাখা হবে। বাগান সাজানো হবে। রাতে সাড়ে আটটা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। স্টেডিয়ামের লাগোয়া ৬৫০ আসনের একটি বন্ধ প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারের পরে ফের চালু করা হবে। পাশাপাশি ওখানে ছবি তোলার উপরে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
কেন হকার-নিয়ন্ত্রণ করা হবে? বিবেকবাবু বলেন, “অধিকাংশ হকার প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে জিনিসপত্র বিক্রি করেন। ফলে দূষণ ছড়ায়। দূষণ ঠেকাতে আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছি না।” নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তাঁর ব্যাখ্যা, “মহিলারা যাতে নিরাপদে একা ঘুরতে পারেন তা নিশ্চিত করতে চাই।” বন্ধ প্রেক্ষাগৃহটি কী ভাবে চালু করা যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যে বিবেকবাবু চলচ্চিত্রমহলের অভিজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
সৌন্দর্যায়নের দ্বিতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্রসরোবরে তিন কিলোমিটার সাইক্লিং ট্র্যাক তৈরি হবে। জলে বেশ কিছু হাঁস ছাড়া হবে। গাছে যাতে পাখি আসে তার ব্যবস্থাও করা হবে। অন্য দিকে, সরোবর-সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে আজ, ২৯ জানুয়ারি, বিশেষ দৌড়-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূলত কেআইটি-র শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে এই আয়োজন। পাঁচ এবং ১০ কিলোমিটার দুই বিভাগে হবে এই দৌড়। বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছেলেমেয়ে ছাড়া সেলিব্রিটিরাও অংশ নেবেন।
|