|
|
|
|
অবশেষে ধান কেনা শুরু ঝাড়গ্রামে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
গত সেই ২৪ নভেম্বর খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঝাড়গ্রামে এসে পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘প্রতীকী’ ধান কেনার সূচনা করেছিলেন। সে দিন সরকারি সহায়কমূল্যে মোটে ৪০ কুইন্টাল ধান কেনা হয়েছিল। তার পর দু’মাস ধরে জঙ্গলমহলের প্রাণকেন্দ্র এই ঝাড়গ্রাম ব্লকে আর ধান কেনার কোনও শিবিরের আয়োজনই করতে পারেনি সরকার। পাক্কা দু’মাস পর, মঙ্গলবারই কার্যত প্রথম সহায়কমূল্যে ধান কেনার শিবির হল এই ব্লকে।
ইতিমধ্যে মকর পরবও চলে গিয়েছে। সরকারের শিবিরের আশায় বসে থেকে থেকে হতাশ গরিব চাষিরা অনেকেই এই দু’মাসে ফড়ে-দালালদের কাছে কম দামে অভাবি বিক্রিতে বাধ্য হয়েছেন। মঙ্গলবারের শিবিরেও মাত্র ৪০ জন চাষি মোটে ৫ কুইন্টাল করে ধান সহায়কমূল্যে বেচতে পেরেছেন। বুলাই শবর, গোবিন্দ মান্ডি, জগন্নাথ মাহাতোদের বক্তব্য, “দু’মাস আগে এমন শিবির হলে কাজ হত। আমরা তো মকর-পরবের জন্য ৭৫০-৮০০ টাকা কুইন্টাল দরেই বাজারে ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছি।” আজ, বুধবারও অবশ্য শিবির বসবে। আরও ৪০ জন চাষি সেখানে ধান বিক্রির সুযোগ পাবেন। |
|
জোড়াখালি গ্রামের শিবিরে চলছে ধান কেনা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
এ দিন রাধানগর পঞ্চায়েতের জোড়াখালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে শিবিরের আয়োজন হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন ‘অত্যাবশ্যক পণ্য সরবরাহ নিগম’-এর ঝাড়গ্রাম মহকুমার আধিকারিক তপন পাল। তপনবাবু জানান, গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের একটি সমবায় সমিতির মাধ্যমে দহিজুড়ির একটি চাল-কল কর্তৃপক্ষ জোড়াখালি ও সংলগ্ন এলাকার চাষিদের কাছ থেকে ৪০০ কুইন্টাল ধান কিনবেন। দাম মেটানো হচ্ছে চেক-এ। মঙ্গলবার শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বিডিও সুদীপনারায়ণ ওঝা, মহকুমা খাদ্য-সরবরাহ দফতরের সরকার মনোনীত প্রতিনিধি তথা তৃণমূল নেতা প্রশান্ত রায়, স্থানীয় সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য মমতা মাহাতো প্রমুখ। প্রশান্তবাবু ও মমতাদেবীদের একযোগে দাবি, “প্রকৃত প্রান্তিক চাষিদের চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের থেকেই ধান কেনা হচ্ছে।” চাষিদের অবশ্য বক্তব্য, গত দু’মাসে সিংহভাগ প্রান্তিক-চাষিই অভাবি বিক্রিতে বাধ্য হয়েছেন। এখন শিবিরে লাভ সামান্যই।
সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার ক্ষেত্রে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সবচেয়ে পিছিয়ে ঝাড়গ্রাম মহকুমাই। খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের একটি সূত্রের বক্তব্য, টাকা এবং পরিকাঠামোর অভাবেই কোনও কোনও জায়গায় ধান কেনা যাচ্ছে না। এ বার ফলন বেশি হওয়ায় কোনও জায়গায় শিবির করা হলেই প্রচুর চাষি জড়ো হচ্ছেন। শুরু হচ্ছে অশান্তি। জঙ্গলমহল আপাতত শান্ত থাকলেও মাওবাদী জুজুর অজুহাত দেখিয়েও অনেক জায়গায় ধান কেনার বিষয়টি বিলম্বিত হচ্ছে। অন্য দিকে, মিল মালিকদের একাংশের বক্তব্য, নিজেদের গ্যাটের কড়ি খরচ করে ধান কিনতে হচ্ছে। সেই ধান থেকে চাল তৈরি করে ৬৮ শতাংশ চাল সরকারি গুদামে জমা দিতে হবে। চালের দাম বাবদ সরকারি টাকা পেতে অনেক ঝক্কি রয়েছে। খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের অবশ্য দাবি, এই অবস্থার মধ্যেও ঝাড়গ্রাম মহকুমার সাঁকরাইল ব্লকে ৭০০ কুইন্টাল ধান কেনা হয়েছে। গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকেও ১৮০০ কুইন্টাল ধান কেনা হয়েছে। |
|
|
|
|
|