শীত-রোদে বাড়তি মজা স্বামীজির জন্মদিনে পাওয়া ছুটি
কেবারে সপ্তাহের মাঝখানে একটা ছুটি। না-হয় তা স্বামী বিবেকানন্দের জন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে, তবু ভরপুর শীতের আমেজে তাতে ষোলো আনা উৎসবের মেজাজই তো! সকাল থেকেই ঝলমলে রোদে ফিরেছে বেরিয়ে পড়ার আনন্দ। আর তার সঙ্গেই যোগ হয়েছে বিবেকানন্দ-স্মরণে নানা অনুষ্ঠান।
শীতের ছুটির চেনা ফুর্তির ছবিটা ছিলই। গড়ের মাঠ থেকে ভিক্টোরিয়া, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দলে দলে হাজির হয়েছেন মানুষ। সঙ্গে সরকারি উদ্যোগেই হোক বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে, বা নিখাদ ভক্তির টানে, সকাল থেকেই স্বামী বিবেকানন্দের জন্মের সার্ধ শতবর্ষ পালনে মেতেছে শহর। কোথাও ট্যাবলো-মিছিলে, কোথাও অন্য নানা অনুষ্ঠানে উদ্যাপনের পালা। বেড়াতে যাওয়ার ভিড়টা তাই ঘুরপাক খেয়েছে বিবেকানন্দের বাড়ি, বেলুড় মঠ-সহ নানা প্রতিষ্ঠানেও। সব মিলিয়ে কলকাতার পাওয়ার খাতায় একটা অন্য রকম ছুটি।
তোমারি ইচ্ছা করো হে পূর্ণ...
জীবনমাঝে: সার্ধশততম জন্মদিনে স্বামী বিবেকানন্দকে সশ্রদ্ধ প্রণাম। বৃহস্পতিবার,
উত্তর কলকাতার সিমলাপাড়ায় স্বামীজির বাসভবনে। ছবি: রাজীব বসু
আর পাঁচটা ১২ জানুয়ারির মতো অল্পস্বল্প অনুষ্ঠানে বিবেকানন্দ-স্মরণ নয়। এ বছর সার্ধশতবর্ষ বলেই উদ্যাপনের চেহারাটা আরও বড়সড়, অন্য রকম। সকালটাও তো শুরু হয়েছিল অন্য ভাবেই। সরকারি তরফে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মলগ্নে সাইরেন বাজানোর ব্যবস্থা হয়েছিল। সরকারি অনুরোধ রেখেই সাইরেনের সঙ্গে শাঁখ বাজিয়ে দিনটা শুরু করেছে কলকাতা। তার পরেই মিছিল-ট্যাবলো নিয়ে বেরিয়ে পড়ার পালা। সকাল সকাল তাতে পা মিলিয়েছে কচিকাঁচা থেকে বড়রা, তারকারাও। পাড়ায় পাড়ায় বিবেকানন্দের ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পরেই শুরু হয়ে গিয়েছে নানা অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে ফুটবল ম্যাচ, রক্তদান শিবির থেকে পিঠেপুলি উৎসব বাদ যায়নি কিছুই। ভোর থেকেই দর্শনার্থীর ঢল ছিল বিবেকানন্দের বাড়ি থেকে বেলুড় মঠ, সর্বত্রই। রামকৃষ্ণ মিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দলে দলে এসেছেন মানুষ। সন্ধ্যা নামতে আলোয়-প্রদীপে সেজে উঠেছেন বিবেকানন্দই।
রবিশঙ্কর গুপ্ত, ফিরোজ শেখদের মনে অবশ্য বিবেকানন্দ-উৎসব দাগ কাটেনি। তাঁদের কাছে এই দিনটার মাহাত্ম্য একটাই। নির্ভেজাল ছুটি। গড়ের মাঠে ভেলপুরি বিক্রেতা রবিশঙ্কর বা ঘোড়াওয়ালা ফিরোজের কাছে ছুটির কলকাতা মানেই বাড়তি খদ্দের। আর সেখানেও তো নিরাশ করেনি কলকাতা। কয়েকটা দিন গোমড়ামুখো আকাশ, বৃষ্টির মহাসাগরীয় নিম্নচাপের প্রকোপ কমতেই জাঁকিয়ে পড়েছে শীত। তার উপরে আচমকা একটা অপ্রত্যাশিত ছুটি। স্কুল ছুটি। কলেজ ছুটি। পুরসভা ছুটি। অফিস ছুটি। এমন একটা দিনে কলকাতা যে দল বেঁধে বেরিয়ে পড়বেই, তাতে আর সন্দেহ কী! তাই গড়ের মাঠে বেলুনওয়ালাকে ঘিরে কচিকাঁচাদের ভিড়, ভিক্টোরিয়ায় দলে দলে এ-দিক-সেদিক ছড়িয়ে পড়া গিজগিজে মাথা। গঙ্গাসাগর যাওয়ার পথে ঢুঁ মেরে যাওয়া পুণ্যার্থীর সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। ধর্মতলা-গ্র্যান্ড হোটেলের ফুটপাথে বিকিকিনির ভিড়টাও বেড়ে গিয়েছে বেশ কয়েক গুণ।
রবিবার নয়, বছর শেষ বা শুরুর উৎসবে মাতোয়ারা দিনও নয়। সপ্তাহের মাঝখানে হঠাৎ ছুটির শহরে ফিরোজদের আনন্দটাও কম নয়। দুপুরের ভিড়ে ঠাসা গড়ের মাঠে একের পর এক খদ্দেরের ভেলপুরি মাখতে মাখতে বছর পঁয়ত্রিশের রবিশঙ্কর তাই বলেই ফেলেন, “পনেরো বছর ধরে গড়ের মাঠে এই কাজেই আছি। শীত বাড়লে গড়ের মাঠে ভিড় বাড়ে। শীত কমলে ভিড় কমে। নিউ ইয়ারের পর আজ কোনও কারণে ছুটি পড়েছে। সেই কারণে লোকজন বেশি।’’ সন্ধ্যা গড়িয়েও তাই বাবুদের ঘোড়ায় চড়ার শখ মিটিয়ে চলেন অক্লান্ত ফিরোজও।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.