|
|
|
|
রায়গঞ্জে মিছিলে প্রাক্তনীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে ভাঙচুর ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে মারধরের মামলায় তৃণমূল নেতা তিলক চৌধুরী সহ সব অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে পথে নামলেন প্রাক্তনীরা। বুধবার বিকেলে কলেজের কয়েকশো প্রাক্তনী শহরে মিছিল করেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার, রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত, দুই সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ এবং সন্দীপ বিশ্বাস, জেলা পরিষদের কংগ্রেস দল নেতা পূর্ণেন্দু দে, রায়গঞ্জ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি লিয়াকত আলি। শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক, শিক্ষিকা সহ বিদ্বজ্জনেরাও মিছিলে পা মেলান। মিছিল থেকে কলেজের প্রাক্তনীরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সরব হন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার বলেন, “রায়গঞ্জ কলেজের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মা মাটি মানুষের সরকার জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করে জামিন পাইয়ে দিল। কারণ, অভিযুক্তরা সবাই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের নেতা সমর্থক। অথচ একই ঘটনায় মাজদিয়ায় অভিযুক্তরা বিরোধী ছাত্র সংগঠনের সদস্য হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য মামলা করল রাজ্য সরকার। সরকারের এই দলতন্ত্র ও পক্ষপাতমূলক ভূমিকার প্রতিবাদে কলেজের প্রাক্তন পড়ুয়ারা পথে নামতে বাধ্য হলেন।” |
|
ছবি: তরুণ দেবনাথ। |
মোহিতবাবু জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে মারধর ও কলেজে তান্ডব চালিয়ে তৃণমূল নেতা সমর্থকরা শহরে ঘুরছেন। তাঁর আশঙ্কা, অভিযুক্তদের শাস্তি না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। স্বচ্ছভাবে নির্বাচন পরিচালনা করার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার তিলকবাবু ও প্রিয়ব্রতবাবুর নেতৃত্বে তৃণমূলের একদল সমর্থক কলেজে ভাঙচুর চালিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকারকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তৃণমূলের ৯ জন সমর্থককে গ্রেফতার করে। লঘু ধারায় মামলা করায় তারা জামিন পেয়ে যান। অভিযুক্ত তিলকবাবু ও প্রিয়ব্রতবাবুও আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ দেখা দেখা দেয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর জায়গায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক শত্রুঘ্ন সিংহ। জেলা কমিটির নেতাদের একাংশের অভিযোগে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব দলের জেলা সভাপতি অসীম ঘোষকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেন। অসীমবাবু ঘটনার পর নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ধরে রাখতে অভিযুক্তদের পাশে না দাঁড়ানোয় তাঁকে পদ থেকে সরানো হয়েছে বলে দলেই জল্পনা। তাঁর জায়গায় জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্যকে। এ দিকে অভিযুক্ত তিলকবাবুর বিরুদ্ধে দল এখনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করেনি। মঙ্গলবার রাত থেকে অসীমবাবু তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন বলে এ দিন দাবি করেছেন। অসীমবাবু বলেন, “ক্রীড়ামন্ত্রী তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মদন মিত্র ফোন করে আমাকে রাজ্য সম্পাদক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। আমি পদের প্রত্যাশী নই। দলের সৈনিক হয়েই থাকতে চাই। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাই আমার প্রধান লক্ষ্য।” প্রাক্তনীদের পথে নামা প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম সরকার বলেন, “প্রাক্তনীদের নামে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা রাজনৈতিক স্বার্থে এদিন রাস্তায় নেমেছেন।” বুধবারও স্বাভাবিক হয়নি রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ। পুলিশ মোতায়েন ছিল। কলা ও বিজ্ঞান বিভাগের কয়েকটি ক্লাস হয়েছে। |
|
|
|
|
|