|
|
|
|
|
ছায়ামণ্ডপ |
|
খননের আগের ছবি: সমিত ঘোষ |
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার অন্তর্গত শিববাড়ির (বাজিতপুর মৌজা) মধ্যে অবস্থিত ঐতিহাসিক বাণগড়। জায়গাটি পুরাতাত্ত্বিক উপাদানে সমৃদ্ধ। ১৯৩৮-৪১’এ পুরাতত্ত্ব বিভাগ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় অধ্যাপক কুঞ্জগোবিন্দ গোস্বামী প্রথম বার বাণগড়ে খনন কাজ চালান। এর পর ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব সর্বেক্ষণ ২০০৭, ২০০৯ ও ২০১০-এ খনন হয়। উঠে আসে অনেক অজানা ইতিহাস। সব শেষে ২০১১-এর প্রত্নখননে চ্যালকোলিথিক যুগের ইতিহাসও উঠে এসেছে, যা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
এর পাশাপাশি আছে জনশ্রুতি। বাণগড়ে ছিলেন পরাক্রমশালী রাজা বাণাসুর। তাঁর রূপসী কন্যা ঊষাকে হরণ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণের পৌত্র অনিরুদ্ধ। ঊষার সঙ্গে অনিরুদ্ধের গভীর প্রণয় ছিল। বাণরাজা তা মেনে নিতে পারেননি। শেষে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে যুদ্ধে বাণরাজ নিহত হন। ঊষা ও অনিরুদ্ধের বিয়ে হয়ে যায়। বাণগড়ে ঊষার বিয়ের ছায়ামণ্ডপটি আজও বর্তমান। মণ্ডপটির চার দিকে চারটি বড় পাথরের স্তম্ভ রয়েছে। স্থানীয় লোকেরা এদের ‘কলাগাছ’ বলেন। অনেক পর্যটক কলাগাছকে আলিঙ্গন করে তাঁদের মনের সুপ্ত বাসনাকে পূরণ করার জন্য প্রার্থনা জানান। এই প্রত্নস্থানের অল্প দূরেই আছে ‘ঊষাহরণ রোড’ নামের একটি সড়ক। বাণকন্যা ঊষার নামেই যে এই প্রাচীন সড়কের নামকরণ হয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। ২০১০-এ প্রত্নতত্ত্ব সর্বেক্ষণ স্তম্ভগুলির কিছু অংশ খনন করে মাটির তলা থেকে মূল মন্দিরের কাঠামোটির অংশ আবিষ্কার করে। সেখানে মাটির তলা থেকে বেরিয়ে এসেছে পাথরের সিঁড়ি এবং চার দিকে ইটের ভাঙা স্থাপত্য। বর্তমানে জায়গাটির চার পাশে রয়েছে নানা অবৈধ নির্মাণ। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক অশোককুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ১৯৯২-এর পর যে সব অবৈধ নির্মাণ হয়েছে, সেগুলো ভেঙে ফেলে নাগরিকদের বিকল্প বাসস্থান গড়ে দেওয়া হবে। বর্তমানে খনন কার্যের নেতৃত্বে থাকা তপনজ্যোতি বৈদ্যের মতে, বাণগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অপরিসীম। সকলের সহযোগিতায় বাণগড় উত্তরবঙ্গের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে, জেলাবাসী সেই সোনালি দিনের আশায় দিন গুণছেন।
|
ব্রতচারী |
স্বপন অধিকারী গরিব মানুষ। বালুরঘাটের পাশে পাগলিগঞ্জ পোল্লাপাড়ায় ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে থাকেন। রিক্শ চালান সকাল থেকে সন্ধে। ছোট্ট ঘরে থাকলেও তাঁর স্বপ্ন আকাশছোঁয়া। মনটা বিশাল। পুরনো রিক্শ চালিয়ে প্রৌঢ় স্বপন সারা দিনে যা উপার্জন করেন, তার নির্দিষ্ট একটি অংশ জমিয়ে রাখেন। সেই জমানো অর্থ দিয়ে স্বপ্নকে ছুঁতে চান তিনি। পয়সার অভাবে নিজের লেখাপড়া হয়নি। তাঁর ইচ্ছে, কারও যেন লেখাপড়া বন্ধ না হয়। তাই শিক্ষাবর্ষের শুরুতে দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেন বই, খাতা, কলম সহ নানা শিক্ষাসামগ্রী। প্রতি বছর ছোটখাট অনুষ্ঠান করে দুঃস্থ শিক্ষার্থীদের মুখে হাসি ফোটান। ২০১১-তে স্বপনবাবুর এই ব্রতের ২৫ বছর পূর্ণ হল। এ কাজের মধ্যেই তিনি তৃপ্তি খোঁজেন। ভুলে থাকেন নিজের পরিবারের দুঃখ-কষ্ট-বেদনা। বিভিন্ন সংস্থার সংবর্ধনা পেয়েছেন। আবার বিরূপ সমালোচনাও তাঁকে বিদ্ধ করে। কিন্তু কোনও কিছুই তাঁকে ব্রত থেকে সরিয়ে নিতে পারেনি। স্বপন অধিকারী সত্যিই এক মহান ব্রতচারী।
|
অযান্ত্রিক |
|
ছবি: সুদীপ দত্ত |
‘কু-ঝিক-ঝিক করে চলত’। না, কোনও ভ্রমণ কাহিনির কথা বলতে এই শব্দের অবতারণা নয়। পথ নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত একটি স্টিম রোলারের স্মৃতিচারণ করতে গিয়েই ‘কু-ঝিক-ঝিক’ উচ্চারণ করলেন শংকরপ্রসাদ গুহ। রোলারটি ব্যবহার করা হত গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে। তৈরি করেছিল ইংল্যান্ডের জন্ ফাওলার অ্যান্ড কোম্পানি, লিডস্ লিমিটেড, লিডস্। ১৮০০ অশ্বশক্তি’র স্টিম রোলারটি বর্তমানে জলপাইগুড়ির তিস্তা উদ্যানে সংরক্ষিত রয়েছে। পড়তে অসুবিধে হলেও রোলারের সামনে ও পেছনে খোদাই করা নম্বরটি (বি২৭৮৪৭) এখনও বোঝা যায়। রীতিমতো বেদি তৈরি করে তার ওপর রাখা হয়েছে স্টিম রোলারটি। বেদির চার পাশ ঘেরা। ফুল ফুটে রয়েছে চার দিকে। মরচে পড়া থেকে বাঁচাতে রোলারটি রং করা হয়েছে। হেরিটেজ যন্ত্রটিকে স্মারক হিসেবে রাখতেই এই উদ্যোগ। জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় পূর্ত-দফতরের সাব-ডিভিশনাল অফিস ও কোচবিহারের পূর্ত-দফতরে রয়েছে এমন দু’টি পুরনো স্টিম রোলার।
ব্রিটিশ আমলে এ ধরনের বহু রোলার ব্যবহার করা হত। কিন্তু সেগুলো তেমন ভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। ব্যতিক্রম এই দু’টি রোলার। জলপাইগুড়ির পূর্ত-দফতরটি তিস্তা উদ্যানের গা-ঘেঁষেই। ১৯৫৫ সালে এই দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন গোবিন্দলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিয়সিন্ধু গুহ তখন উপ-সহকারী ইঞ্জিনিয়ার। স্টিম রোলারটিকে সংরক্ষণের জন্য তাঁরা উদ্যোগী হন। তাঁদের প্রস্তাব পূর্ত দফতরে প্রশংসিত হয়। পূর্ত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী পার্থপ্রতিম সেন জানান, ১৯৬৮-র বিধ্বংসী বন্যায় তিস্তা নদী সংলগ্ন পূর্ত বিভাগের এই জায়গাটিতে পলির আস্তরণ পড়েছিল। পূর্ত বিভাগের কর্মীরা সেই আস্তরণ সরিয়ে সরঞ্জামগুলিকে রেখেছিলেন সযত্নে। স্টিম রোলারটিও ছিল তার মধ্যে। অবসরপ্রাপ্ত হেড ফিটার বৃদ্ধ শংকরপ্রসাদ গুহের স্মৃতি যথেষ্ট তীক্ষ্ন। ১৯৫৩-য় পূর্ত বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। রোলারটি নিয়ে কাজ করছেন অন্য কর্মীদের সঙ্গে। মূলত রোলারের মেরামতির দিকটি তিনি দেখতেন। জানালেন, রোলারটি দেখভালের জন্য রয়্যাল ইনস্পেকটররা আসতেন। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, কোচবিহার, রায়গঞ্জ সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রাস্তা নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল রোলারটি। উপ-সহকারী ইঞ্জিনিয়ার অমিয়সিন্ধু গুহ’র মতে, যন্ত্রের বিবর্তনের ধারা সংরক্ষণের জন্য প্রামাণ্য দলিল থাকা আবশ্যক। সে কাজ করবে এই যন্ত্র। তবে বর্তমানে রোলারগুলির সংরক্ষণে খানিকটা ঘাটতি চোখে পড়ে। এগিয়ে চলেছে বিজ্ঞান। তৈরি হয়েছে নতুন যন্ত্র। এখন ভাইব্রেটর রোলারের যুগ। স্টিম রোলারের প্রয়োজন আজ ফুরিয়েছে। তবে এই যন্ত্রগুলি অতীতের স্মারক তো বটেই।
|
সম্মান |
মালদহের ইংলিশবাজার কেন্দ্রের বিধায়ক ও মালদহ পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে ‘বাংলাদেশ বার অ্যাসোসিয়েশন’ বিরল সম্মানে ভূষিত করল। গত ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় ‘বাহাই পার্সোনাল ল’ শীর্ষক এক আলোচনা চক্রে যোগ দিতে কৃষ্ণেন্দুর নেতৃত্বে সাত সদস্যের আইনজীবীদের এক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ যান। ঢাকা সুপ্রিম কোর্টে অনুষ্ঠিত সেই সভায় কৃষ্ণেন্দু বাবুকে ‘গেস্ট অব অনার’ সম্মান জানানো হয়। ওঁর বাগ্মিতায় সে দেশের আইনজীবী মহল মুগ্ধ। সভায় পৌরোহিত্য করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জনাব মিজানুর রহমান।
|
উত্তরের কড়চা বিভাগে
ছবি ও লেখা দিলে
পুরো
নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করবেন।
উত্তরের কড়চা
এ বি পি প্রাঃ লিমিটেড
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড
শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১ |
|
|
|
|
|
|