পঞ্চম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি করা নিয়ে গণ্ডগোল বাঁধল পুরুলিয়া জেলা শিক্ষা দফতরে। পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন স্কুলে ভর্তির জন্য মঙ্গলবার দুপুরে সেখানে লটারি করা হচ্ছিল। লটারিতে ভাল স্কুলের নাম না ওঠায় অভিভাবকদের একাংশের সঙ্গে শিক্ষা দফতরের কর্মীদের বচসা বাঁধে। অভিযোগ, এর পরেই কয়েক জন অভিভাবক কয়েকটি কাঠের চেয়ার ভাঙচুর করে।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রাধারানি মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “লটারির ফল মনঃপূত না হওয়ায় অভিভাবকদের ভিড়ে থাকা কয়েক জন কাঠের চেয়ার ভাঙচুর করে। আমাকে লক্ষ্য করেও কাঠের টুকরো ছোড়া হয়। ভয়ে আমরা অফিসের ভিতরে ঢুকে। পড়ি।” উপস্থিত পুলিশকর্মীরা পরিস্থিতি সামাল দেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) হৃষিকেশ মুদি বলেন, “যে সব ছাত্রছাত্রী পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারেনি, তাদের অন্যস্কুলে ভর্তি করার জন্য এ দিন জেলা শিক্ষা দফতরে লটারির আয়োজন করা হয়। সামান্য গণ্ডগোলের জেরে কিছু ক্ষণ লটারির কাজ ব্যাহত হয়। পরে অবশ্য নিবিঘ্ন বাকি কাজ শেষ হয়েছে।” |
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া শহরের কোনও স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি না হতে পারা ছাত্রছাত্রীদের আবেদনের ভিত্তিতে এ দিন লটারির আয়োজন করা হয়। ৫০৫ জন ছাত্র ও ৪১৩ জন ছাত্রীর আবেদন জমা পড়েছিল। প্রশাসনের নির্দেশে জেলার ১১টি হাইস্কুল ও ৩টি জুনিয়ার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বলে কোথায় পঞ্চম শ্রেণিতে কত আসন শূন্য পড়ে রয়েছে তার তালিকা করা হয়।ছাত্রছাত্রীদের সেই সব স্কুলে ভর্তি করা জন্য লটারি করা হচ্ছিল। অভিভাবকদের ক্ষোভ, বার বার জুনিয়ার হাইস্কুলগুলির নাম লটারিতে উঠে আসছিল। তখন অভিভাবকদের মধ্যে গুঞ্জন ওঠে, জুনিয়ার হাইস্কুলে ভর্তি করা হলে নবম শ্রেণিতে সন্তানদের কোথায় ভর্তি করা যাবে? ফের তো সেই একই সমস্যা তৈরি হবে। স্কুলগুলির মধ্যে জিলা স্কুল ও রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের নাম না থাকায় ক্ষোভ ছড়ায়। অভিভাবকরা এ নিয়ে সরব হলে শিক্ষা দফতরের কর্মীদের একাংশ তাঁদের ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ। এর পরেই গোলমান বাঁধে, বারান্দায় রাখা কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ কর্মীরা দৌড়ে এসে শিক্ষা দফতরের কর্মীদের অফিসের ভিতরে ঢুকিয়ে দেন।
পরে জেলা স্কুল পরিদর্শক বলেন, “জিলা স্কুল ও রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয় জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অধীনে নয়। ওই স্কুলগুলিকে নিয়ে তাই লটারি করা যায়নি। লটারির আগে অভিভাবকদের সব জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্বচ্ছ ভাবে সব কিছু করার পরেও যা ঘটল, তা নিন্দনীয়। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।” |