নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নতুন করে আর হকার বসতে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে অবিচল রাজ্য। নিজেদের মঙ্গলহাটের ব্যবসায়ী দাবি করে বঙ্কিম সেতুর উপরে বসতে আসা হকারদের ফের হটিয়ে দিয়ে সেটাই বুঝিয়ে দিল পুলিশ। পাশাপাশি, এসএসকেএম চত্বরের ফুটপাথেও নতুন করে হকার বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তেই অটল থাকছে সরকার। মঙ্গলবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “স্কুল বা হাসপাতালের চত্বরে কোনও মতেই আর নতুন করে হকার বসতে দেওয়া হবে না। তার পরিণাম যা-ই হোক না কেন। পিজি-র সামনে থেকে তুলে দেওয়া হকারদের জন্য বিকল্প জায়গা খুঁজতে বলা হয়েছে পুলিশকে।”
তবে পুরমন্ত্রী এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, পুরনো হকারদের এখনই উচ্ছেদ করা হবে না। এ দিন ফিরহাদ বলেন, “সরকার হকারদের বিরুদ্ধে নয়। আমরা নতুন ব্যবস্থা করছি যাতে নানা ধরনের লোক, পুলিশের একাংশকে টাকা দিয়ে হকারদের ভয়ে ভয়ে ব্যবসা করতে না হয়। গোটা বিষয়টি পরিকল্পনা করার জন্য সরকার মিউনিসিপ্যাল ভেন্ডিং কমিটি গঠন করবে।”
যানবাহন ও পথচারীদের নিরাপত্তার কারণে হাওড়ার বঙ্কিম সেতু থেকে হকার উচ্ছেদ করা হয়েছিল আগেই। একই ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এসএসকেএম হাসপাতালের সামনে থেকে সম্প্রতি কিছু হকারকে উঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
এ দিন সকালে ফের বঙ্কিম সেতুতে বসতে যান উচ্ছেদ হওয়া একদল হকার। পুলিশ ফের তাঁদের হটিয়ে দিলে উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে মঙ্গলহাটের কয়েকশো ব্যবসায়ী সেতুর উপর থেকে উঠিয়ে দেওয়া ওই হকারদের বিক্ষোভে যোগ দেন। বিক্ষোভকারীরা সেতু অবরোধ করে বসে পড়েন। অবরোধ চলে প্রায় এক ঘণ্টা। সাতসকালে এই ঘটনার জেরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সেতুতে আটকে পড়ে প্রচুর স্কুলপড়ুয়ার গাড়ি। অভিভাবকেরা কেউ কেউ হেঁটে হাওড়া স্টেশন থেকে গাড়ি ধরে ছেলেমেয়েদের স্কুলে নিয়ে যান।
বঙ্কিম সেতুর ওই হকারদের দাবি, প্রতি মঙ্গলবার ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত তাঁদের সেতুর উপরে বসতে দিতে হবে। দাবি না মানলে অবরোধ চলবে বলে হুমকি দেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা। নামানো হয় র্যাফ ও বিশাল পুলিশবাহিনী। মৃদু লাঠিচার্জ করে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেয় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
হাওড়া মঙ্গলাহাট হকার সমিতির সহ-সম্পাদক তাপস দাস বলেন, “আমরা সেতুতে বসে ছিলাম। পুলিশ বাধা দিলে আমরা উঠে যাই। তার পরেও আমাদের ১৯ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এমনকী, আজ জামিনও দেয়নি। এই অবস্থা
চলতে থাকলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” |