হস্টেলে খাওয়াদাওয়ার দিকটি তাঁরাই দেখেন। খরচও আসে তাঁদের পকেট থেকে। এমনকী, চাল-ডাল-সব্জিও কেনেন নিজেরাই। অথচ, হস্টেলে খাবারের মান খারাপ, এই অভিযোগ তুলে সেই ছাত্রেরাই মঙ্গলবার ভাতের থালা নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অফিসের সামনে।
বিক্ষোভ দেখানোর জন্য যে অছিলার অভাব হয় না, এ দিন তা বুঝিয়ে দিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের ছাত্রদের সেই দল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওঁরা তো নিজেরাই হস্টেলের রান্নাঘর চালান। সেই খাবারের মান খারাপ হওয়ার দায় তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিতে যাবেন কেন?।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, এ দিন অফিসের দরজা খোলার পরেই মেন হস্টেলের ৬০-৭০ জন ছাত্র থালা-বাটি বাজিয়ে গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারী ছাত্রদের হাতে থালাভর্তি ভাতও ছিল। খাবারের মানের পাশাপাশি আরও কিছু অভিযোগ তোলেন ওই ছাত্রেরা। স্লোগান আর চিৎকারের জেরে মুহূর্তেই উত্তেজনা ছড়ায় ওই চত্বরে। |
বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের তরফে সুস্বাগত পড়িয়া বলেন, “হস্টেলের খাবারের মান খারাপ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে কোটি কোটি টাকা অনুদান পান। অনেক গরিব ছাত্র হস্টেলে থাকতে বাধ্য হন। অন্তত তাঁদের কথা ভেবে অনুদানের টাকার সামান্য খাবারে ভর্তুকির জন্য দেওয়া হোক বলে দাবি জানিয়েছি।” এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, “বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকে কোনও দিন হস্টেলের আবাসিকদের খাবারে ভর্তুকি দেওয়া হয়নি। তাই এ নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই।”
বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের আরও বক্তব্য, ভারতের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্টেলের ছাত্রদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেটের সংযোগ দেওয়া হয়। এখানে তা দেওয়া হয় না। তাই বিনামূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার দাবিও এ দিন জানান তাঁরা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য সিদ্ধার্থ দত্ত বলেন, “ইন্টারনেটের বিষয়টি নিয়ে কর্মসমিতিতে আলোচনা হয়েছে। ছাত্রপিছু মাত্র ৫০ টাকা করে দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ছাত্রেরা তা দিতে রাজি হননি। পরে ছাত্র কল্যাণ পর্ষদের বৈঠকে ছাত্রদের ফের জানাতে বলা হয়েছিল, তাঁরা কত দিতে পারবেন। সে বিষয়ে এখনও কিছু তাঁরা কিছু জানাননি।” তবে হস্টেলে ইন্টারনেট-পরিষেবা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগ্রহী বলেই জানান সিদ্ধার্থবাবু।
তা হলে বিক্ষোভ কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তার বক্তব্য, “সামনে তো ছাত্র-সংসদ নির্বাচন। ভোটের আগে একটু গা-গরম করা আর কি! প্রতি বছরই এ সব হয়।” |