কেতুগ্রামের কান্দরায় রাজ্যের প্রাক্তন পঞ্চায়েত মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গিয়েছিল কৃপাসিন্ধু সাহা এবং হারা শেখকে। শনিবার বিকেলে কান্দরা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে মালগ্রামে সেচখালের ধারে কৃপাসিন্ধু সাহাকে (৪২) গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠল সেই হারা শেখের বিরুদ্ধে। দু’জনেরই বাড়ি কান্দরায়। কৃপাসিন্ধু সাহা কেতুগ্রাম ১ ব্লকে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। হারা শেখ ওই ব্লকেরই তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তারাশঙ্কর পণ্ডিত কেতুগ্রাম থানায় হারা শেখ-সহ তিন জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।
বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “হারা ও কৃপাসিন্ধু এর আগেও পরস্পরের বিরুদ্ধে কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ করেছিলেন। দু’জনকেই পুলিশ খুঁজছিল। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ১০টা নাগাদ কাঁদরা থেকে মোটরবাইকে করে মালগ্রামে যান কৃপাসিন্ধু ও তারাশঙ্কর। সেখান থেকে বিকেলে ফেরার সময় সেচখালের কালভার্টের উপরে অভিযুক্তেরা মোটরবাইকটিকে আটকায়। প্রত্যক্ষদর্শী তারাশঙ্করবাবু পুলিশকে বলেছেন, “আমাদের রাস্তা আটকানোর পরেই গাছের ডাল দিয়ে মারধর করতে শুরু করে। তার পরেই কৃপাসিন্ধুদাকে মাথায় গুলি করে দেয় ওরা। আমি কোনও রকমে ছিটকে হাটমুড় গ্রামের দিকে চলে আসি। ওরা আমাকেও তাড়া করে অনেকটা রাস্তা এসেছিল। গ্রামের লোকজন দেখে ওরা মুর্শিদাবাদের দিকে পালিয়ে যায়।” পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহটি ক্ষতবিক্ষত। মাথা আর গলায় চারটি বুলেটের দাগ আছে।
ঘটনাস্থল থেকে দু’টি কার্তুজ পেয়েছে পুলিশ। কৃপাসিন্ধুবাবু পেশায় কৃষক। তাঁর দুই মেয়ে। এক জন পঞ্চম ও অন্য জন একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। নিহতের স্ত্রী মধুমিতা সাহা বলেন, “তিনটে নাগাদ আমাকে ফোন করে বলল, ‘আমি তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসছি।’ তার পরেই এই ঘটনা। তৃণমূলের কিছু লোক আমার স্বামীকে খুন করল।”
কৃপাসিন্ধুবাবুর বৌদি উন্নতি সাহা বলেন, “আমার দেওর বিধায়কের সঙ্গে থাকত। তাই কেষ্ট মণ্ডলের (অনুব্রত) অনুগামী হারা শেখই ওকে খুন করেছে।”
বিধায়ক সাহানেওয়াজ শেখ বলেন, “যারা খুন করেছে তারা যে দলেরই হোক, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।” তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি, তথা কেতুগ্রামে দলের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, “ওদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। কৃপাসিন্ধু সাহাকে সিপিএমের লোকজনই মেরেছে।” সিপিএম নেতা তপন কাজি অবশ্য এই অভিযোগকে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। |