সাইরেন বাজছে দারুণ জোরে। আনন্দে ছোটাছুটি করছেন বহু মানুষ। আর দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়ার আকাশে আতসবাজির মেলা।
বছর শেষ হওয়ার এক দিন আগেই দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়া ও প্রতিবেশী দ্বীপ টোকিলোর বাসিন্দারা মেতে উঠেছেন বর্ষশেষের আনন্দে। ২৯ ডিসেম্বর, ঘড়ির কাঁটা যখন বারোটার ঘর ছুঁয়েছে, ঠিক তখনই সামোয়ার রাজধানী আপিয়ার কেন্দ্রে সবচেয়ে বড় ঘড়ির নীচে জড়ো হয়েছেন তাঁরা। প্রার্থনা আর অভিনন্দনে ভেসে তাঁরা পৌঁছে গিয়েছেন বছর শেষের রাতে।
কী ভাবে? ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতের পরেই সামোয়া ছুঁয়ে ফেলেছে ৩১ ডিসেম্বরকে। মাঝের দিনটা অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বর সামোয়ার বাসিন্দারা যেন তাঁদের ক্যালেন্ডার থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছেন! আন্তর্জাতিক তারিখরেখার পূর্বে ও পশ্চিমে এক দিনের ফারাক হয়। ১১৯ বছর আগে এক দল মার্কিন ব্যবসায়ী এই দ্বীপরাষ্ট্রের লোকজনকে বুঝিয়ে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনে রাজি করিয়েছিল। এবং বাণিজ্যিক স্বার্থের কথা ভেবেই সামোয়া নিজের সময় পাল্টে আমেরিকার সঙ্গে নিজেদের মিলিয়ে নেয়। কিন্তু বিনিময়ে তাকে মূল ব্যবসায়িক সহযোগী অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের চেয়ে প্রায় ২১ ঘণ্টা পিছিয়ে থাকতে হচ্ছিল। যার খেসারত সামোয়াবাসীকে দিতে হচ্ছিল ভালমতোই। শেষমেশ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সমতা রাখতে গত মে মাসে আন্তর্জাতিক তারিখরেখার পশ্চিমের সময়ের সঙ্গে নিজেদের মেলানোর সিদ্ধান্ত নেয় সামোয়া প্রশাসন। ফলে নিউজিল্যান্ড ও হাওয়াইয়ের মধ্যবর্তী দ্বীপরাষ্ট্রটি এ বার থেকে এক দিন এগিয়ে গেল। ২৯-এর পরেই চলে এল ৩১। বেমালুম গায়েব হয়ে গেল মাঝের ৩০ ডিসেম্বর! বস্তুত, সিডনির থেকেও সামোয়া এখন তিন ঘণ্টা এগিয়ে!
আর তাই আনন্দে মেতে উঠেছেন সামোয়ার অধিবাসীরা। দেশের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই সময় পরিবর্তনে আখেরে লাভের মুখ দেখবে পর্যটন শিল্প। সামোয়ার বাসিন্দাদের অনেকেই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে থাকেন। তাঁদের মধ্যে সময়ের ফারাক না-থাকায় এ বার তাঁরা প্রবাসে বসেও একই সময়ে পারিবারিক অনুষ্ঠান উদ্যাপন করতে পারবেন। |