স্কুলেই মার খেয়ে অজ্ঞান প্রধান শিক্ষক
স্কুল কমিটির সম্পাদক কে হবেন, তা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে স্কুলেই মার খেলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। অশোকনগরের গুমা রবীন্দ্র বিদ্যাপীঠের ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কল্যাণচন্দ্র দাসকে বৃহস্পতিবার কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বেধড়ক মারেন বলে অভিযোগ।
মার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন কল্যাণবাবু। কয়েক বার বমি করে জ্ঞান হারান। প্রথমে বারাসত জেলা হাসপাতাল ও পরে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কল্যাণবাবুকে ভর্তি করানো হয়।
স্থানীয় তৃণমূলের একাংশের দাবি, ‘এক্তিয়ার বহির্ভূত’ ভাবে কল্যাণবাবু নিজের পছন্দের এক জনকে স্কুল-সম্পাদক হিসাবে চাইছেন। কল্যাণবাবু অবশ্য এ কথা মানেননি। দিন কয়েক আগেই অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের দিন ঘোষণাকে ঘিরে অশোকনগর বয়েজ সেকেন্ডারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককেও মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
হাসপাতালের পথে আহত প্রধানশিক্ষক। ছবি: পার্থসারথি নন্দী
বারাসত হাসপাতালে এক চিকিৎসকের উপস্থিতিতে কল্যাণবাবুর জবানবন্দি নেয় বারাসত থানার পুলিশ। রেকর্ড করা ওই বক্তব্য পরে অভিযোগ আকারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অশোকনগর থানায়। পুলিশ সূত্রের খবর, জবানবন্দিতে কল্যাণবাবু স্কুল পরিচালন সমিতির প্রাক্তন সম্পাদক পরিমল পাল, সমিতির বর্তমান সদস্য রঞ্জিত দাস-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযুক্তদের বেশির ভাগই তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত। কল্যাণবাবু বলেন, “তৃণমূলের একাংশ আমার উপরে হামলা চালিয়েছে।”
খাদ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, “ঘটনাটি নিন্দনীয়। পুলিশকে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কারও কোনও সুপারিশ মানা হবে না। দলের কেউ যুক্ত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় ভাবেও তদন্ত হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ৩১ জুলাই গুমা রবীন্দ্র বিদ্যাপীঠের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে জয়ী হয় তৃণমূল। এত দিনেও নতুন পরিচালন সমিতি কাজ শুরু করতে পারেনি। কিছু দিন আগে ওই সমিতি গঠনের জন্য সভা হয়। সভায় পঞ্চায়েত মনোনীত তৃণমূল কর্মী গৌতম মালাকার সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হন। কিন্তু তৃণমূলের একাংশ তাঁকে মানতে চাননি। এ দিন নতুন সম্পাদককে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল পরিমলবাবুর। স্থানীয় রাজনীতিতে গৌতমবাবু ও পরিমলবাবুর ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীর অনুগামী বলেই পরিচিত। সকাল থেকেই স্কুলের সামনে জড়ো হতে থাকেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। দুপুর ১টা নাগাদ বেশ কিছু তৃণমূল সমর্থক স্কুলে ঢুকে পড়েন। অভিযোগ, তাঁদেরই কয়েক জন কল্যাণবাবুর উপরে চড়াও হন। শিক্ষাকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। জ্যোতিপ্রিয়বাবু সম্প্রতি স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ আলাউদ্দিনকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন আলোচনার মাধ্যমে সম্পাদক পদের সমস্যা মেটাতে। এ দিন গোলমালের সময়ে শেখ আলাউদ্দিন এবং গুমা-১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান বিজন দাসও ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধেও গোলমালে মদতের অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ। আলাউদ্দিনের অবশ্য দাবি, “বেআইনি ভাবে কল্যাণবাবু নিজের পছন্দের এক জনকে সম্পাদক করতে চাইছেন। এ দিন ৬ জন অভিভাবক প্রতিনিধি এর প্রতিবাদ করতে স্কুলে যান। কল্যাণবাবুকে মারধর করা হয়নি। ধাক্কা লেগে তিনি পড়ে যান।” একই দাবি বিজনবাবুরও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.