|
|
|
|
ক্ষুব্ধ কৃষক সংগঠনগুলি |
ধান কেনা নিয়ে অচলাবস্থা পূর্বে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
গোলায় বোরো ধান ছিলই। মাঠ থেকে আমন ধান তোলার কাজও প্রায় সারা। কিন্তু বাজারদর কমে যাওয়ায় ধান বিক্রি করে আয়ের সংস্থান বন্ধ হওয়ার মুখে। সরকার সহায়ক-মূল্যে ধান কেনার প্রচার করলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ চাষিদের। যদিও জেলা খাদ্য দফতরের দাবি, সরকারি ভাবে ধান কেনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে, প্রয়োজনীয় টাকা না থাকায় সেই কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ দিকে, জেলার কৃষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী চাষিদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনছেন।
জেলা খাদ্য দফতর ও জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে জেলা থেকে ১৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। মোটা ধানের সহায়ক-মূল্য কুইন্টাল প্রতি ১০৮০ টাকা ও সরু ধানের ক্ষেত্রে ১১১০ টাকা ধার্য হয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ধান কেনা শুরু হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল সরকার। সেই মতো জেলার ৩৪টি চালকল ও বিভিন্ন সমবায় সমিতিগুলিকে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়। অল্প অল্প করে ধান কেনা শুরুও হয়ে গিয়েছে বলে দাবি জেলা খাদ্য দফতরের। তাদের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়ে গিয়েছে। জেলার খাদ্য নিয়ামক নবরাজ বড়ুয়া বলেন, “জেলায় ধান কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চালকলগুলি ধান সংগ্রহ করছে। ধান কেনার গতি এখন কিছুটা কম থাকলেও ফেব্রুয়ারির দিকে বাড়বে।” কয়েকটি সমবায় সমিতি ধান কেনার কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে জেলা পরিষদও।
কিন্তু অধিকাংশ এলাকাতেই চাষিরা ধান বিক্রি করতে পারছেন না বলে অভিযোগ কৃষক সংগঠনগুলির। পূর্ব মেদিনীপুরের ‘জেলা কৃষিজমি জীবন-জীবিকা রক্ষা কমিটি’র আহ্বায়ক অমর দাসের অভিযোগ, “চালকল ও সমবায় সংস্থাগুলিতে ধান বিক্রি করতে গিয়েও ফিরে আসতে হচ্ছে চাষিদের। নানা অজুহাত দেখিয়ে চালকল মালিকেরা হয়রান করছে চাষিদের। আর সমবায় সমিতিগুলি টাকার অভাবে দেখিয়ে ধান কিনছে না।” অমরবাবুর আরও অভিযোগ, “সহায়ক-মূল্যে বিক্রির সুযোগ না পেয়ে চাষিরা ব্যবসায়ীদের কাছে কুইন্টাল প্রতি ৮০০-৯০০ টাকায় ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। চালকলগুলি আবার ওই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান কিনছে।” ইতিমধ্যেই এই নিয়ে জেলা পরিষদে স্মারকলিপি দিয়েছে কমিটি। আজ, শুক্রবার জেলাশাসকের কাছেও স্মারকলিপি দেবে তারা।
সরকারের ধান কেনার ঢিমে গতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ‘সারা ভারত কৃষক ও খেতমজুর সংগঠন’ও। সংগঠনের জেলা সম্পাদক নন্দ পাত্রের অভিযোগ, “সহায়ক-মূল্যে ধান কেনা হবে বলে ঢাকঢোল পিটিয়ে চাষিদের জানানো হলেও এখন নানা অজুহাত দেখানো হচ্ছে। এটা প্রতারণারই সামিল। অবিলম্বে সহায়ক-মূল্যে ধান কেনা শুরু না হলে আমরা আন্দোলন শুরু করব।” সরকারি ভাবে ধান কেনার ব্যবস্থায় ত্রুটির কথা মেনে নিয়ে জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন, “ধান কেনার জন্য খাদ্য দফতরের যে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। ফলে কৃষকেরা সমস্যায় পড়েছেন। এ বিষয়ে আমরা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
|
|
|
|
|
|