সরকার পক্ষের আর্জি ছিল, অভিযুক্তকে জেল হাসপাতালে সরানো হোক। অভিযুক্তের আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলের জামিনের আবেদন জানান।
বৃহস্পতিবার দু’পক্ষেরই আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক চৌধুরী হেফাজত করিম। তাই চলতি বছরটা এসএসকেএম হাসপাতালেই কাটাতে হচ্ছে আমরি-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত, সেখানকার ডিরেক্টর রাধেশ্যাম অগ্রবালকে। সোমবার, ২ জানুয়ারি রাধেশ্যামকে আলিপুর আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে এসএসকেএমে রাধেশ্যামকে জেরা করতে পারবেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
বিচারক এসএসকেএমের মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে আরও একটি রিপোর্ট চেয়েছেন। সোমবারেই সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। জেল হাসপাতালে চিকিৎসার কী ব্যবস্থা রয়েছে, সেই বিষয়ে আলিপুর জেল-কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দিতে বলেছেন বিচারক।
৯ ডিসেম্বর অসুস্থ হয়ে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন রাধেশ্যাম। ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে ওই হাসপাতালের অন্য ছয় ডিরেক্টরের সঙ্গে রাধেশ্যামকেও অভিযুক্ত করে পুলিশ। আদালত তাঁকে এসএসকেএমে রেখে চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছিল। আদালতের নির্দেশে তাঁর জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গড়া হয়। এ দিন রাধেশ্যামের অসুস্থতার কথা জানিয়ে তাঁর আইনজীবী এস কে কপূর জামিনের আর্জি জানান। অভিযুক্তের অন্য আইনজীবী অমিত ভট্টাচার্য আদালতে বলেন, “আমার মক্কেল ১৯৯৫ থেকেই নানা ধরনের অসুখে ভুগছেন। তাঁর বাইপাস অপারেশনও হয়েছে। এখনও তাঁর হৃদ্যন্ত্রে তিনটি ব্লকেজ রয়েছে। |
জামিন দেওয়া হলে বাইরের কোনও হাসপাতালে ওঁর চিকিৎসা হতে পারে।” সে-ক্ষেত্রেও তিনি সশরীরে আদালতে হাজিরা দিতে পারবেন বলে আইনজীবীরা সওয়াল করেন। তাঁরা বলেন, প্রয়োজন হলে ভিডিও-সম্মেলনও করা যেতে পারে। আইনে এর সংস্থান রয়েছে।
অভিযুক্তের আইনজীবীদের সওয়ালের বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবী শক্তি ভট্টাচার্য ও বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, রাধেশ্যামের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। সে-ক্ষেত্রে জেল হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করানো হোক। প্রয়োজনে জেল সুপারের সুপারিশে এসএসকেএম বা অন্য সরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করানো যেতে পারে। সরকার পক্ষের দাবি, প্রথম দিন থেকেই রাধেশ্যাম অসুস্থতার কথা বোঝাতে চাইছেন। আসলে তিনি ৯ ডিসেম্বর অগ্নিকাণ্ডের কথা শোনার পরে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। এ কথা তিনি তদন্তকারী অফিসারের কাছে স্বীকার করেছেন বলেও সরকারি আইনজীবীরা জানান। তবে রাধেশ্যামের ছেলে আদিত্যবর্ধন অগ্রবাল এবং বিবাহিত মেয়ে প্রীতি সুরেখার সম্পর্কে কোনও তথ্য তিনি তদন্তকারীদের জানাতে চাননি বলে সরকার পক্ষের অভিযোগ। এ দিন রাধেশ্যামের তরফে জানানো হয়, জেল হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার পরিকাঠামো নেই। বিচারক আলিপুর জেলের সুপারের কাছ থেকে একটি রিপোর্ট তলব করেন। জেল হাসপাতালে হৃদ্রোগ, অস্থি, মানসিক রোগ এবং মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে কি না, তা জানাতে বলা হয়েছে রিপোর্টে। |