গঙ্গার আরও ৪০ কিলোমিটার এলাকার ভাঙন প্রতিরোধের কাজের দায়িত্ব কেন্দ্রকে দিতে চায় রাজ্য সরকার। ওই কাজে ইঞ্জিনিয়রের প্রয়োজন হলে ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষকে সেই ব্যাপারে সাহায্য করবে সেচ দফতর। সোমবার জেলার সাংসদ, বিধায়ক, জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়রদের সঙ্গে বৈঠকের শেষে রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, “ফরাক্কা ব্যারেজের ৪০ কিলোমিটার উপরে এবং ৮০ কিলোমিটার নিচে গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করছে কেন্দ্রীয় সরকারের ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ। এ বার কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেছি ফরাক্কা ব্যারাজ যেন গঙ্গার আরও ২০ কিলোমিটার উপরে এবং ১৫ কিলোমিটার নিচে পলাশী পর্যন্ত ভাঙন প্রতিরোধের দায়িত্ব নেয়। গঙ্গার সঙ্গে মহানন্দা ও ফুলহারের সংযোজন করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন সেচমন্ত্রী। মানসবাবু বলেন, “মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ভাঙন নিয়ে আমরা ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার ও দফতরের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছি। মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ভাঙনকে জাতীয় বিষয় হিসাবে তুলে ধরেছি। ভাঙন সমস্যার সমাধান করতে কত টাকা লাগবে তার হিসাব চলছে। মালদহের পর মুর্শিদাবাদে বৈঠক করার পর দিল্লিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করা হবে।” ফরাক্কা ব্যারাজের কর্তৃপক্ষের ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করার মতো যথেষ্ট লোকবল নেই বলে অভিযোগ। সেচমন্ত্রী তাঁদের দিয়েই ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করানোর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ এই ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে। সেচমন্ত্রীর জবাব, “আমাদের টাকা কম, ওদের লোক কম। দুটোকে মেলাতে হবে। এতে কাজের কোনও অসুবিধা হবে না।” সেচমন্ত্রী জানান, ফুলহারে বাঁধের উপরে ১৮ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির জন্য সাড়ে ১০ কোটি টাকা এবং মহানন্দায় ৪৮ কিলোমিটার রাস্তার জন্য সাড়ে ২৩ কোটি টাকা রাজ্য সরকার মঞ্জুর করেছেন। ভুতনির ভাঙন রোধের কাজের জন্য ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষকে নো অবজেকশন দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই সেখানে ভাঙন রোধের কাজ করবে। এদিকে, জেলার ভাঙ্গন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে সোমবার থেকে টানা চারদিন ধরে ৭০ কিলোমিটার পদযাত্রার ডাক দিয়েছিলে কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। এদিন তিনি ওই পদযাত্রা স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেন। কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “সংসদ অধিবেশনে লোকপাল বিলের জন্যে দিল্লিতে থাকার নির্দেশ এসেছে। সেই কারণে পদযাত্রা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে পদযাত্রা করব।” এদিন সেচমন্ত্রীর বৈঠকের পরে কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “সেচমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। তবে আমরা ভাঙনের স্থায়ী সমাধানের দাবি থেকে সরছি না। পদযাত্রা করবই।” মালদহের সাংসদের এই আন্দোলন প্রসঙ্গে সেচমন্ত্রী বলেন, “মালদহের জনগণের সমস্যাকে তুলে ধরার জন্য এটা একটা কমর্সূচি।” |