তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামল রাজ্যে তাদের জোটসঙ্গী কংগ্রেস। গরিব মানুষের ‘স্বার্থে’ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। পুরভবনের সামনে কয়েক’শো কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে কংগ্রেসের তরফে সভা করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জনমুখী’ প্রকল্পগুলি গরিব মানুষের স্বার্থে সঠিকভাবে পুর এলাকায় রূপায়িত করা-সহ ১২ দফা দাবিতে এ দিন পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের সমীর দত্তের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। অশোকনগর ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি জীবন সিংহ রায় বলেন, “সাধারণ গরিব মানুষ আমাদের কাছে এসে ক্ষোভ জানাচ্ছেন পুরসভার নানা কাজ নিয়ে। আমাদের কাছে তাঁদের দাবি, ‘আপনারা জোটসঙ্গীকে জানান’। সিপিএম পুর উন্নয়নের ক্ষেত্রে দলতন্ত্র করেছে। তৃণমূলের মধ্যেও কিছু ক্ষেত্রে তা দেখা যাচ্ছে।” জীবনবাবু বলেন, ‘চেয়ারম্যানকে আমরা বলেছি, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আসুন একসঙ্গে কাজ করি। পুর পরিষেবা নিয়ে যেন সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি না হয়। কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি সঠিকভাবে রূপায়ণের ব্যবস্থা করুন।’’ |
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পানীয় জলের লাইন এখনও যে সব এলাকায় পৌঁছয়নি, সেখানে তা বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নলবাহী লাইনের মাধ্যমে সকাল, দুপুর এবং বিকালে মোট ৪৫ মিনিট সময় কম জল দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তাই বিদ্যুৎ এলে পরবর্তী সময়ে সেই ঘাটতি মিটিয়ে দিতে হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সহয়তা করা এবং সর্বত্র পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে হবে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে বাজার সংস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। জোটধর্ম রক্ষা করে পুরসভায় নিয়োগ অনুমোদন করতে হবে। নিকাশি নালাগুলির সংস্কার করতে হবে। প্রজ্ঞানন্দ সেবা সদনে উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা গড়ে তোলা, প্রস্তাবিত হার্ট ক্লিনিক দ্রুত চালুরও দাবি করা হয়েছে। রয়েছে সংস্কৃতি মঞ্চ তৈরির দাবিও। জীবনবাবু জানান, ‘‘ওয়ার্ড কমিটিগুলো কাদের নিয়ে তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে তাঁরা সম্পূর্ণ অন্ধকারে।
পুর কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, নিকাশি নালাগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে বাজারটির দ্রুত সংস্কার করা হবে। জলের অপচয় বন্ধ করতেই সরবরাহের সময় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান সমীর দত্ত বলেন, “কংগ্রেসের মোট ১২ দফা দাবি ছিল। পানীয় জল, বাজার, নিকাশি, সংস্কৃতি মঞ্চ, সেবা সদন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আমরা কি করেছি এবং ভবিষ্যতে আমাদের কি পরিকল্পনা আছে তা ওদের জানানো হয়েছে।” দলতন্ত্রের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বামেদের সময়ে পুরবোর্ডে কোনও বিষয়ে আলোচনা ২০ মিনিটের বেশি গড়াত না। আমরা বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ৪-৫ ঘণ্টা আলোচনা করে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিই।” প্রসঙ্গত এ বারই প্রথম তৃণমূল পুরসভায় ক্ষমতায় এসেছে। ২২টি আসনের মধ্যে ২০টি এককভাবে তৃণমূলের দখলে। পুরভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি জোট না হলেও কংগ্রেস বেশিরভাগ আসনেই প্রার্থী দেয়নি। |