হুগলি
সাড়ে তিন মাস বেতন আটকে, সমস্যায় ছয় মহিলা
‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ না হওয়ায় প্রায় তিন মাস বেতন পাচ্ছেন না হুগলি জেলার ৬ জন স্বাস্থ্য সহায়িকা। যদিও একই পরিস্থিতিতে ওই পদে আরও অনেকে বেতন পেয়ে গিয়েছেন। স্বভাবতই ক্ষুব্ধ ছয় ‘বঞ্চিত’ মহিলা।
গত ২৪ অগস্ট কলকাতায় টাউন হলে স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক এবং কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভাতে ৪৫৮ জন স্বাস্থ্য সহায়িকা (হেল্থ অ্যাসিস্ট্যান্ট) নিয়োগের নির্দেশ দেন তিনি। তাঁদের উদ্দেশে বলেন, “পুজোর আগে এটা সামান্য উপহার। তোমরা বেতন পেয়ে গুরুজনদের কিছু কিনে দিও।”
মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণার প্রেক্ষিতে ২ সেপ্টেম্বর ৪৫৮ জন মহিলার নিয়োগ-সংক্রান্ত নির্দেশ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে পৌঁছেও যায়। হুগলির ক্ষেত্রে নিয়োগ হন ১৩ নার্সিং পাস করা তরুণী। এঁদের মধ্যেই ৬ জনের বেতন আটকে গিয়েছে।
সৌমিতা ঘোষাল, শম্পা রং এবং অমৃতা দাস নিযুক্ত হয়েছেন ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে। অঞ্জু সামন্তের চাকরি হয়েছে শিয়াখালা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কাবেরী সামন্ত কাজ করছেন আমোদপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নার্গিস বেগম নিযুক্ত হয়েছেন পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এঁরা সকলেই কাজে যোগ দিয়েছেন গত ১৫-১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
এই ছয় মহিলার দাবি, পুলিশ ভেরিফিকেশন না হওয়ায় তাঁদের বেতন আটকালেও বাকিরা কিন্তু বেতন পাচ্ছেন। আরামবাগ ট্রেজারি থেকে বাকিদের যদি বেতন আটকানো না হয়, তা হলে তাঁদের ক্ষেত্রে একই পরিস্থিতিতে উল্টো নিয়ম কেন? এই মহিলাদের বক্তব্য, পুলিশি তদন্তে কোনও কারণে ‘ত্রুটি’ পাওয়া গেলে এমনিতেই চাকরি থাকবে না। প্রশাসনিক পদক্ষেপ করারও সুযোগ থাকছে। তা সত্ত্বেও এ ভাবে মাসের পর মাস বঞ্চিত করা হচ্ছে কেন? এ বিষয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে শুরু করে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে দরবার করেও তাঁরা সুফল পাননি বলে অভিযোগ। দুঃস্থ পরিবারের মেয়ে শম্পা রংয়ের বাবা তপনবাবু সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীকেও এ ব্যাপারে ফ্যাক্স-বার্তা পাঠিয়েছেন বলে জানালেন। তাঁর কথায়, “মেয়ে মাইনে না পাওয়ায় আমাদের খুবই কষ্টের মধ্যে দিন কাটছে। বাকি মেয়েদের পরিবারেরও একই হাল।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক উন্মেষ বসু বলেন, “বিষয়টি মেটানোর প্রক্রিয়া চলছে।”
পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট আসতে ‘দেরি হয়’ বলে মেনে নিয়েছেন আরামবাগের ট্রেজারি অফিসার রবিরঞ্জন দাস। ৬ জন বাদে বাকিদের বেতন ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ডাক্তারি শংসাপত্র দেখে বেতন ছেড়ে দিয়েছি।” অন্য দিকে, হুগলির ট্রেজারি অফিসার (১) শঙ্করপ্রসাদ কুমার (এঁর কাছেই আটকে ছ’জনের বেতনের কাগজপত্র) বলেন, “ট্রেজারি আইন অনুযায়ী, পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।” কিন্তু অন্য ট্রেজারি অফিস পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট ছাড়াই বেতন অনুমোদন করল কী ভাবে? শঙ্করপ্রসাদবাবু বলেন, “তাঁরা ব্যক্তিগত ভাবে উদ্যোগী হয়েছেন। আমি নিয়মে বাঁধা থাকতে চেয়েছি।”
কিন্তু সরকারি আইনের জটিলতায় এ ক’টি মাস বেতন না পেয়েও মুখ বুজে কাজ করে যেতে হচ্ছে ছয় মহিলাকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.