বনগাঁয় চোলাইয়ের দাওয়াই প্রমীলা বাহিনী
ন্ধে হতে না হতেই এলাকায় রমরমিয়ে বিকোত চোলাই। বাড়ির পুরুষেরা বাড়ি ঢুকতেন চোলাইয়ের ঠেকে সারাদিনের রোজগার খুইয়ে। এ নিয়ে সামান্য প্রতিবাদ করলেই স্ত্রীদের কপালে জুটত মারধর। রেহাই পেত না ছেলেমেয়েরাও। এই অবস্থায় অভাবের সংসারে অনটন আরও জাঁকিয়ে বসেছিল। মাঝেমধ্যে মহিলারা একজোট হয়ে বিভিন্ন জায়গায় চোলাইয়ের ঠেক ভেঙে দিলেও চোলাইয়ের থাবা থেকে নিস্তার ছিল না। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগ্রামপুরের ঘটনায় ওই সব মহিলারা এ বার বদ্ধ পরিকর---আর কোনওভাবেই এলাকায় চলতে দেওয়া যাবে না চোলাইয়ের ভাটি, ঠেক। অন্তত বনগাঁ মহকুমায় মহিলারা এই ব্রত নিয়েছেন।
বনগাঁ থানার হরিদাসপুরের মহিলারা জানান, রীতিমতো সভা করে কয়েকশো মহিলা সিদ্ধান্ত নেন চোলাই ভাঁটি ভাঙতে হবে। তাঁরা নেমে পড়েন হাতে টর্চ, লাঠি নিয়ে। এলাকায় ঘুরে ঘুরে ভাঙতে থাকেন ঠেক। স্বামীদেরও কড়া শাসনে রাখতে থাকেন তাঁরা। কিন্তু চোলাই কারবারিরা প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। এমনকী হুমকি দিতে পিছু হটে না তাঁদের স্বামীরাও। প্রথমে পুলিশের সাহায্যও তাঁরা পাননি। কিন্তু এ সব কিছুই তাঁদের পিছু হটাতে পারেনি। ওই মহিলা সংগঠনের সদস্য সন্ধ্যা পাত্র বলেন, “স্বামীদের চোলাই খাওয়া অনেকটাই কমে গিয়েছে এখন। বিক্রেতারাও প্রকাশ্যে চোলাই বিক্রি করতে সাহস পায় না, চুরি করে বিক্রি করে। যখনই খবর পাই তখনই আমরা চোলাইভাঁটি ভেঙে দিয়ে আসি। পুলিশ-প্রশাসনও এখন আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ছেলেমেয়েরাও নির্বিঘ্নে লেখাপড়া করতে পারছে।” একই অবস্থা ছিল গাইঘাটার তিলির মাঠ এলাকাতেও। বাইরে থেকে নয়, এখানেই তৈরি হতো চোলাই। এলাকাটি চোরাচালানের জন্য ‘বিখ্যাত’। এখানেও মহিলারা সংঘবদ্ধ হয়ে অভিযানে নেমে পড়েছেন। মিলছে সাফল্যও। পুলিশ-প্রশাসন ওই মহিলাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
—নিজস্ব চিত্র।
গাইঘাটার বিভূতিভূষণ হল্ট এলাকায় কিছুদিন আগেও রমরমিয়ে চলত চোলাইয়ের কারবার। এখানেও মহিলারা সংঘবদ্ধ ভাবে এগিয়ে আসায় এলাকাটি অনেকটাই চোলাইমুক্ত হয়েছে। প্রথমদিকে ভয়-ভীতি এখানকার মহিলাদেরও দেখানো হয়েছিল। কিন্তু সংগঠিত মহিলাদের আক্রমণের সামনে তারা এখন পালাতে বাধ্য হচ্ছে।
বনগাঁর পাঁচপোতা এলাকার ৫০ জন মহিলাও চোলাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছেন। স্থানীয় পুকুরবাজার, মৎস্যজীবিপাড়া, পাঁচপোতা স্কুল মোড়, নিমতলা পাড়া প্রভৃতি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মহিলারা ভেঙে দিয়েছেন কয়েকটি চোলাইয়ের ঠেক। উদ্ধার করেছেন বহু চোলাই। অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
মহিলাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে পুলিশ। বনগাঁর এসডিপিও জয়ন্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “চোলাইয়ের বিরুদ্ধে মহিলাদের অভিযানে আমরা সবরকম সাহায্য করেছি। করবও। আমার টেলিফোন নম্বরও ওঁদের দিয়েছি। যখনই ওঁরা ডাকবেন তখনই পুলিশ সাহায্যের জন্য ছুটে যাবে। চোলাই কারবারির বিরুদ্ধে পুলিশও কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.