আম্পায়ার্স ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমের (ইউডিআরএস) পর অস্ট্রেলিয়া সিরিজে হটস্পট ব্যবহারেও ‘না’ করে দিল ভারতীয় বোর্ড। যে সিদ্ধান্তে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটমহল যারপরনাই অবাক। বিশেষ করে যেখানে চার বছর আগে ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কে গোটা সফরই বাতিল হয়ে যেতে বসেছিল, সেখানে প্রযুক্তির ব্যবহার না হলে ফের বিতর্ক হতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। এ বারও বিতর্কের ভাল সুযোগ থেকে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ায় যে টিভি চ্যানেলে সিরিজের সরকারি সম্প্রসারণ হবে, সেই চ্যানেল নাইন দর্শকদের জন্য ইউডিআরএস এবং হটস্পট দুটোই ব্যবহার করছে।
তবে ইউডিআরএস নয়, বক্সিং ডে টেস্টের আগে ধোনির ভারতের প্রধান চিন্তা হতে যাচ্ছে জাহির খানের ফর্ম। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া চেয়ারম্যান একাদশের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচের দ্বিতীয় দিন বিরাট কোহলির সেঞ্চুরি এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনের চার উইকেটকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ভারতের অভিজ্ঞতম পেসার জাহিরের ফর্ম নিয়ে আশঙ্কা। চোট সারিয়ে দলে ফেরা জাহির এ দিন দুটো স্পেল মিলিয়ে বল করেছেন দশ ওভার। দিয়েছেন ৪১ রান। যার মধ্যে এক বারও উইকেট নেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারেননি তিনি। আরও দুশ্চিন্তার কারণ, এ দিন টানা ফিল্ডিং করতে দেখা যায়নি জাহিরকে। নিজের দুটো স্পেল শেষ হওয়ার পরপরই ড্রেসিংরুমে ঢুকে পড়েন তিনি। ব্যাট হাতেও শূন্য রানে ফিরে যান। সব মিলিয়ে ঘণ্টাখানেকও মাঠে কাটাতে পারেননি জাহির। প্রথম টেস্ট শুরুর আগে ছ’দিনের মধ্যে তিনি ম্যাচ-ফিট হতে পারবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। সঙ্গে ইশান্ত শর্মার চোট নিয়ে তো ধোঁয়াশা রয়েছেই। এ দিনই সেঞ্চুরি পাওয়া অস্ট্রেলীয় ওপেনার কোয়ান বলে দিয়েছেন, চোট সারিয়ে ফেরায় জাহিরের বলের গতি কমে গিয়েছে। উমেশ যাদব আরও জোরে বল করতে পারেন বলেও মনে করছেন কোয়ান। |
প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিন গম্ভীর-সহবাগদের ব্যর্থতা মঙ্গলবার অনেকটাই ঢেকে দিয়ে মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম এগারোয় নিজের জায়গা কার্যত নিশ্চিত করে ফেললেন বিরাট কোহলি। ভারতের ২৬৯ অলআউটের মধ্যে কোহলির একারই অবদান ১৭১ বলে ১৩২ রান। যার মধ্যে রয়েছে ১৮টা বাউন্ডারি এবং দুটো ছয়। রান পেলেন রোহিত শর্মাও (৪৭)। তবে ভারত অধিনায়ক নিজে এ দিন ব্যর্থ (৩)। অস্ট্রেলিয়ার বাঁ-হাতি স্পিনার জন হল্যান্ড ছ’উইকেট তুলে নিলেন। ব্যাট হাতে চেয়ারম্যান একাদশের ডেভিড ওয়ার্নার (২), উসমান খোয়াজা (২৫), ফিল হিউজ-রা (২০) রান না পেলেও সেঞ্চুরি করেন ওপেনার এড কোয়ান (১০৯)। এবং মেলবোর্নে ওয়ার্নারের সঙ্গে ওপেনিং জুটি হিসাবে নিজের দাবি আরও জোরদার করলেন তিনি।
এ দিকে মঙ্গলবারে তাঁর ৫২ রানে চার উইকেট নেওয়া বুঝিয়ে দিচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য ভাল হোমওয়ার্ক করে এসেছেন অশ্বিন। ম্যাচের পর ভারতীয় অফ স্পিনার জানালেন, দ্রাবিড়-লক্ষ্মণদের মতো অস্ট্রেলিয়ায় সফল সিনিয়রদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি কয়েক জন আম্পায়ারের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। “এক বার যদি শেন ওয়ার্নের সঙ্গে কথা বলতে পারি, খুব ভাল হয়। এমনিতে আম্পায়াররা জানিয়েছেন যে, এ দেশেও ম্যাচের চতুর্থ এবং পঞ্চম দিনের উইকেটে বল বেশি ঘোরে,” বলেছেন অশ্বিন। |
অন্য দিকে ভারতীয় ক্রিকেটাররা জানিয়েছেন, বৃষ্টির জন্য মোটেও তাঁরা প্রস্তুতি ম্যাচ বয়কট করতে চাননি। “খবরটা ভিত্তিহীন। শুধু বৃষ্টির জন্য কেউ ম্যাচ বাতিল করে না,” বলেছেন ভারতীয় টিমের মিডিয়া ম্যানেজার জিএস ওয়ালিয়া। পন্টিংদের দেশের মিডিয়া আবার এই খবর রটানোর পিছনে ডানকান ফ্লেচারের ভূমিকা দেখছে। ২০০৫-এর ঐতিহাসিক অ্যাসেজ হারের পর থেকেই অস্ট্রেলীয় মিডিয়ার সঙ্গে প্রাক্তন ইংল্যান্ড কোচ ফ্লেচারের তিক্ততা শুরু। ২০০৬ সালে ভারতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে এসে বর্তমান অস্ট্রেলিয়া কোচ মিকি আর্থারের সঙ্গেও মতবিরোধ হয় তাঁর। |