অসময়ে ‘ফেরার’ পথে দলমার দামালেরা
হাতিদের মর্জি বোঝা ভার!
‘অসময়ে’ নয়াগ্রাম ছেড়ে দলমায় ফেরার পথ ধরেছে বুনো হাতির পাল। শীতের মরশুমে দলমার দামালদের পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের জঙ্গল ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন বলেই দাবি বন দফতরের। খড়্গপুরের ডিএফও মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, “অসময়ে হাতিরা কেন নয়াগ্রাম ছেড়ে ফেরার পথ ধরেছে, সেটা বোধগম্য হচ্ছে না। হাতির পালটির উপর নজর রাখছেন বনকর্মীরা। গত দশ বছরের রেকর্ড ঘেঁটে দেখা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক মাস আগে দলমার হাতিদের নয়াগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি।”
ওডিশা লাগোয়া নয়াগ্রামে সুবর্ণরেখার তীরবর্তী জমিতে আখ ও নানা রকমের শীতকালীন সব্জি চাষ হয়। পাশাপাশি, ওই সব এলাকায় ধানের ফলনও ভাল। ‘মুখরোচক’ খাবারের টানে ফি-বছর দলমার হাতিরা ঝাড়গ্রাম মহকুমার নয়াগ্রামে যায়। নয়াগ্রাম ব্লক এলাকাটি ঘন জঙ্গলে ঘেরা। প্রতিটি লোকালয়ের আশপাশেই রয়েছে শাল-জঙ্গল। প্রতি বছর মাস তিনেক ধরে হাতির পাল নয়াগ্রামের জঙ্গলে থাকে। হাতির হামলায় ফসল নষ্টের জন্য প্রতি বছর বন দফতরের গড়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হয় চাষিদের। বন দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর ১৯ অক্টোবর হাতির পাল সুবর্ণরেখা পার হয়ে নয়াগ্রামে ঢুকেছিল। এরপর নয়াগ্রাম লাগোয়া ওডিশার জঙ্গলে কিছু দিন কাটালেও প্রায় তিন মাস হাতিরা নয়াগ্রামে ছিল। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি হাতিরা নয়াগ্রাম থেকে দলমায় ফেরার রুট ধরে। তার আগের বছরগুলিতেও কমবেশি একই সময় নাগাদ হাতিরা নয়াগ্রামে এসেছে এবং ফিরে গিয়েছে।
এ বছর ২ নভেম্বর সুবর্ণরেখা পেরিয়ে শ’খানেক হাতির পাল নয়াগ্রামে ঢোকে। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ হাতিরা ওডিশার বেতনটি জঙ্গলের দিকে চলে যায়। মাস খানেক ওডিশায় কাটিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) হাতির পুরো পালটি আচমকা নয়াগ্রামের কেশরেখা, চাঁদাবিলা ও তপোবনের জঙ্গল হয়ে সুবর্ণরেখা পেরিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল ব্লকের দিকে চলে যায়। দলমায় ফেরার ‘রুট’ ধরেছে তারা। বর্তমানে দু’ভাগে হাতির পাল রয়েছে সাঁকরাইলের শঙ্করবনি ও শুশনিগেড়িয়ার জঙ্গলে। সন্ধে হলেই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতিরা। গত কয়েকদিনে সাঁকরাইলের পাথরা ও নাইকানশোলে পাকা ধানের খেতে হামলা চালিয়েছে হাতিরা। এমনিতে মাঠের ফসল কাটা শেষ হয়ে গিয়েছে। কিছু কাটা ধান জমিতে গাদা করে রাখা আছে। বাড়ি নিয়ে যাওয়ার আগেই গাদা করা সেই পাকা ধান খেয়ে সাফ করে দিচ্ছে হাতিরা। দিন দু’য়েক আগে স্থানীয় কাটনিমাড় গ্রামে হাতির হানায় জখম হন এক ব্যক্তি। এলাকায় গোটা দশেক বাড়িও ভেঙেছে হাতির পাল। বন দফতরের ধারণা, ফেরার পথ ধরলেও ভরা-শীতে হয়তো দলমায় যাবে না হাতির পাল। ফের নয়াগ্রামে তাদের ফেরার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না বন দফতর। নয়াগ্রামের ‘নিরাপদ আস্তানা’ ছেড়ে হাতির পাল হঠাৎ কেন ‘বাড়িমুখো’ হল, তা জানতে আপাতত হাড় কাঁপানো শীতেও কালঘাম ছুটছে বনকর্মী ও আধিকারিকদের।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.