মেঘটা কাটল বটে। তবে আংশিক।
সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অরূপ বিশ্বাসের মধ্যস্থতায় টলিউডের টেকনিশিয়ান এবং প্রযোজকদের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আপাতত ২৫ শতাংশ বেতন বাড়ানো হবে টেকনিশিয়ানদের। আর সেটা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
রবিবার সকালে ৪০ শতাংশ বেতন বাড়ানোর দাবিতে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন টেকনিশিয়ানরা। যার জেরে থেমে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি ছবির শু্যটিং। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল আরও কিছু ছবির ভবিষ্যৎ। তার পরেই জট কাটাতে সোমবার বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়। ৪০ শতাংশের দাবি মেনে নেওয়া না হলেও ঠিক হয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে প্রযোজক এবং টেকনিশিয়ানরা আবার আলোচনা করে বাকি ১৫ শতাংশ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
কয়েক মাস আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টালিগঞ্জের বিধায়ক অরূপ বিশ্বাসকে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ভালমন্দ দেখাশোনার কথা বলেছিলেন। সেইমতো টলিউডের এই অচলাবস্থায় এগিয়ে আসেন অরূপবাবু। এ দিনের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে তিনি বলেছেন, “ইন্ডাস্ট্রি একটা পরিবারের মতো। আর সব পরিবারের মতোই আমাদের পরিবারেও কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আমরা বসে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পেরেছি। ইন্ডাস্ট্রির সামনে এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়। আমাদের লক্ষ্য, সেই গতি যাতে স্তব্ধ না হয়ে যায়।”
২৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও পুরো দাবি না মেটায় টেকনিশিয়ানরা খুশি নন। টেকনিশিয়ানদের ফেডারেশনের তরফে অপর্ণা ঘটক বললেন, “২৫ শতাংশ বৃদ্ধি আমরা মেনে নিয়েছি। তবে ৪০ শতাংশ বাড়ালে আমরা সন্তুষ্ট হতাম। কিন্তু প্রযোজকরা রাজি নন। তবে আমরা আশাবাদী খুব দ্রুত আমাদের দাবিপূরণ হবে।” বৈঠকে উপস্থিত ভেঙ্কটেশ ফিল্মের মহেন্দ্র সোনি জানালেন, তাঁরাও টেকনিশিয়ানদের বেতন বাড়াচ্ছেন। তবে ভবিষ্যতে এই সব ব্যাপারে নিয়ম এবং নির্দেশিকা রাখা হবে। সেগুলি শীঘ্রই তৈরি করা হবে।
মহেন্দ্র সোনি এই প্রসঙ্গে জানালেন টেকনিশিয়ানদের কল টাইম সংক্রান্ত সমস্যার কথা। তিনি বললেন, “আগে বেশির ভাগ শু্যটিং টালিগঞ্জেই করা হত। কিন্তু এখন সারা কলকাতায় শু্যটিং হয়। কিন্তু টেকনিশিয়ানদের কল টাইম শুরু হয় যখন তাঁরা টালিগঞ্জে আসেন। তার পর তাঁরা হয়তো কোনও শু্যটিং স্পটে পৌঁছন দু’ঘণ্টা পরে। যাতে ক্ষতি হয়ে যায় প্রযোজকদের।” তাই সোনির প্রস্তাব: শু্যটিং স্পট থেকেই কল টাইম শুরু হোক। একই সঙ্গে তিনি জানালেন, টেকনিশিয়ানদের আচরণ-সংক্রান্ত কিছু বিধির প্রস্তাব করা হবে। পরের বার বেতন বাড়ানোর আগেই সেগুলো তৈরি হয়ে যাবে। তবে টলিউডে অনেকের আশঙ্কা, এই কল টাইম নিয়ে আবার জটিলতা তৈরি হতে পারে। আপাতত তাই সমাধানের একটা ধাপ পেরনো গেল ঠিকই, কিন্তু তার পাশাপাশি টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে প্রযোজকদের এই বিতণ্ডায় প্রকাশ্যে চলে এল টলিউডের অন্দরের জটিলতা। এগিয়ে যাওয়ার গল্পে এই জটিলতা যাতে কোনও বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেটা দেখাই এখন চ্যালেঞ্জ টলিউডের। |