সমস্যায় পড়লে ফন্টুদি’র পরামর্শ আর পাওয়া যাবে না। এটা ভাবতেই পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামা-মামিমা। শনিবার সকালে খবরটা পাওয়ার পরেই বীরভূমের রামপুরহাটের কুশুম্বা গ্রামে মমতার মামার বাড়িতে তাই অভিভাবক হারানোর শোক নেমে এসেছে। আর পাঁচ জনের কাছে তিনি গায়ত্রীদেবী বলে পরিচিত হলেও ভাই-বোনেদের কাছে ফন্টুদি নামেই পরিচিত ছিলেন।
সাত বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে গায়ত্রীদেবী ছিলেন সবার বড়। গায়ত্রীদেবীর এক মাত্র ভাই অনিল মুখোপাধ্যায়। শনিবার সকালে কুশুম্বা গ্রামে গিয়ে দেখা গেল শোকের পরিবেশ। অনিলবাবু বলেন, “শুক্রবার রাতে দিদির অবস্থা বাড়াবাড়ি হয়েছে শোনার পর থেকেই খুব উদ্বেগের মধ্যে ছিলাম। সকাল পৌনে ৯টায় মমতার মেজভাই অমিতের ছেলে ফোন করে দিদির মৃত্যু সংবাদ দেয়। ছোট ছেলে মৃণাল আসানসোলে চাকরি করে। ওকে খবরটা জানাই। সঙ্গে সঙ্গে সে কলকাতায় বেরিয়ে পড়ে।” তিনি জানান, এ বারও ভাইফোঁটা নিতে কালীঘাটে গিয়েছিলেন। তখন গল্প করেছিলেন। এসএসকেএম হাসপাতালে অসুস্থ দিদিকে দেখতে গিয়েছিলেন। তখন অবশ্য গায়ত্রীদেবীর সঙ্গে কথাবার্তা হয়নি।
মমতার মামিমা তাপসী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে গায়ত্রীদেবীর বিশেষ সখ্য ছিল। তাঁর কথায় ঘুরেফিরে গায়ত্রীদেবীকে নিয়ে স্মৃতির নানা টুকরো উঠে আসছিল। তিনি বলেন, “ফন্টুদি আমাদের পরিবারের মাথা ছিলেন। কোনও রকম সমস্যা হলেই তাঁর পরামর্শ চাওয়া হত।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৈতৃক বাড়ি চাকাইপুর, কুশুম্বা গ্রামের পাশেই। মমতার বাবা প্রমিলেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ১৯৬৫ সালে গায়ত্রীদেবী কলকাতায় চলে যান। তার পরে মাঝেমধ্যে আসতেন। তাপসীদেবী বলেন, “মমতারা যখন খুব ছোট তখন ওদের নিয়ে গরমের ছুটিতে দিদি প্রতি বছর এখানে বেড়াতে আসতেন। পান খেতে খুব ভালবাসতেন। আট বছর আগে ফন্টুদি শেষ এসেছিলেন। তখন অনেক গল্প করেছি।” চোখ ছলছল করে ওঠে তাপসীদেবীর। ফের বলেন, “মেয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে উনি বলেছিলেন মমতা শুধু আমার একার নয়। মমতা সবার।” |