চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র স্ট্যানলির হাতে-ধরা প্রদীপের আলোতেই শুরু হতে যাচ্ছে
কলকাতার প্রথম ‘আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব’। আগামী ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নন্দন-১ প্রেক্ষাগৃহে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে।
স্ট্যানলি অবশ্য ওর আসল নাম নয়। আসল নাম পার্থ গুপ্তে। কিন্তু ‘স্ট্যানলি কা ডাব্বা’ ছবির দৌলতে ছোটরা তো পার্থকে চেনে ওই নামেই। স্কুলে কেন যে স্ট্যানলি টিফিন-বাক্স আনে না, তা ছোটরাই সবচেয়ে ভাল জানে। পার্থর বাবা অমোল গুপ্তেই এই ছবির কাহিনিকার এবং পরিচালক। অমোলের কাহিনিসূত্র থেকেই তৈরি হয়েছিল আমির খানের ‘তারে জমিন পর’।
এমনিতে দশ দিনের কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শিশির মঞ্চে বিকেলের একটি শো বরাবর ‘ছোটদের ছবি’র জন্য বরাদ্দ থাকত। এ বারেই সেটি তুলে দেওয়া হয়েছিল। তারপর ডিসেম্বরে এই উৎসব। ‘স্ট্যানলি’ ছাড়াও ১৩টি দেশ থেকে আনা প্রায় ১৬৭টি ছোটদের ছবি থাকবে কলকাতার এই প্রথম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে। উৎসবের আয়োজক, ‘শিশু কিশোর অ্যাকাডেমি’র চেয়ারম্যান অর্পিতা ঘোষ জানান, ২২ থেকে ২৭ ডিসেম্বর নন্দন-রবীন্দ্রসদন-শিশির মঞ্চ-স্টার প্রেক্ষাগৃহে তিনটি শো-তে দেখানো হবে ওই সব ছবি। আগ্রহীদের জন্য থাকবে সিনেমা নিয়ে ওয়র্কশপ। দেখানো হবে বিভিন্ন দেশে ছোটদের তৈরি ২৭টি ছবিও। এবং সেটাই শেষ নয়। ছোটরা গলায় ডেলিগেট কার্ড ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়াবে এই উৎসবে। তাদের মা-বাবা এবং অভিভাবকেরা অবশ্য বিনামূল্যে ‘ডেলি পাস’ পাবেন। জানা গেল, সরকারি আনুকূল্যে আয়োজিত এই উৎসবের বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা।
|
কিন্তু ডিসেম্বরে তো সাধারণত টালিগঞ্জের পরিবেশকরা ফেলুদা এবং বিভিন্ন ছোটদের ছবি রিলিজ করেন। এ বারও ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ এবং ‘রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য’ নামে দুটি ছোটদের ছবি আছে এই মরসুমে। তা হলে আবার উৎসব কেন? কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব থেকে ছোটদের স্লটটাই বা তুলে দেওয়া হয়েছিল কেন? অর্পিতার বক্তব্য, “বড়দের উৎসবে ছবি দেখতে ছোটরা বিশেষ যেত না। ছোটদের জন্য চাই তাদের নিজস্ব উৎসব। তাই এই পরিকল্পনা।”
আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে
কলকাতা অবশ্য পথিকৃৎ নয়। শিশুদিবস উপলক্ষে ‘চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া’র উদ্যোগে ১৪ নভেম্বর থেকে হায়দরাবাদে সপ্তাহব্যাপী একটি চলচ্চিত্র উৎসব হয়। সেই উৎসব এ বারে ১৭ বছর পেরিয়ে গেল। সেখানে ছবিগুলির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও হয়, এ বারেই ইরানের একটি ছবি সেরার শিরোপা পেয়েছিল। অর্পিতা অবশ্য জানালেন, কলকাতার প্রথম উৎসবে সে রকম পুরস্কারের ব্যাপার থাকছে না।
পুরস্কার না-থাকাই সব নয়! আজকাল ছোটদের ছবি মানে থ্রি-ডি চশমা লাগিয়ে ‘হ্যারি পটার’, ‘টিনটিন’ বা ‘লর্ড অফ দ্য রিংস’! কিন্তু এই উৎসবে কোনও ছবিই থ্রি-ডি নয়। ‘বর্ন ফ্রি’, ‘দ্য কিড’, ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’, ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘সফেদ হাতি’র মতো ধ্রুপদী ছবিরই আধিক্য। “এ বার তাড়াতাড়ি সব করতে হল। পরের বার থেকে থ্রিডি ছবি নিশ্চয় থাকবে,” প্রতিশ্রুতি দিলেন অর্পিতা। |