হাতে টাকা না থাকায় ধান কেনার জন্য কেন্দ্রের কাছে অগ্রিম চাইল রাজ্য। আজ, ১৫ ডিসেম্বর থেকেই পুরোদমে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কথা রাজ্য সরকারের। কিন্তু কেন্দ্র সাহায্য না করলে মাঠে নেমেও পিছিয়ে যেতে হবে বলে খাদ্য দফতর সূত্রের খবর।
বুধবার পাঁচ রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক ডেকেছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শারদ পওয়ার ও খাদ্যমন্ত্রী কে ভি টমাস। সহায়ক মূল্যে ধান কেনাই ছিল প্রধান আলোচ্য বিষয়। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, অসমের পাশাপাশি এ রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিকৃষ্ণ মল্লিকও সেখানে হাজির ছিলেন। রাজ্যের আর্থিক দুর্দশার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, কেন্দ্রের থেকে অগ্রিম না পেলে ধান কেনা সম্ভব হবে না। তাঁর দাবি, খাদ্যমন্ত্রক বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে।
ধানের অভাবী বিক্রি রুখতে এ বছর রাজ্যে ২০ লক্ষ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, গণবণ্টন ব্যবস্থার জন্য রাজ্যের ১১ লক্ষ টন চাল দরকার। বাকি চাল এফসিআই (ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া) কিনে নেবে বলে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন।
রাজ্যের নিজের মোটে ৫০ হাজার টন খাদ্যশস্য রাখার গুদাম আছে। ভাড়া নেওয়া হয়েছে আরও ৩ লক্ষ টন রাখার মতো গুদাম। বাকি চাল রাখার জন্য এফসিআই-এর গুদাম ব্যবহার করতে চেয়েও এ দিন আর্জি জানিয়েছে রাজ্য।
তবে বস্তুত, গত অগস্ট থেকেই সহায়ক মূল্যে ধান কিনতে নেমেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু টাকা না থাকায় তা এখনও গতি পায়নি। কিছু চালকল মারফত ধান কেনা হলেও বহু চাষিই দূরত্বের কারণে সেখানে পৌঁছতে পারেননি। চালকলগুলি এমনিতেই সরকারি দামে ধান কিনতে বিশেষ উৎসাহী নয়। গ্রামে গ্রামে গিয়ে চাষিদের থেকে ধান কিনতেও তারা রাজি হয়নি। শেষমেশ সরকারি সংস্থাগুলিকে সরাসরি বা সমবায় সমিতি মারফত ধান কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তারাও বিশেষ এগোতে পারেনি। রাজ্য সরকারের তিনটি সংস্থা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগম, বেনফেড, কনফেড এবং দু’টি কেন্দ্রীয় সংস্থা নাফেড ও এনসিসিএফ ধান কিনবে বলে স্থির হয়েছে।
মহাকরণ সূত্রের খবর, বেনফেড এবং কনফেড আগেই এত ধার করে বসে আছে যে কোনও ব্যাঙ্কই তাদের নতুন করে ধান কেনার টাকা দিতে উৎসাহী নয়। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যনিগম ৫০ কোটি টাকার তহবিলনিয়ে ধান কিনতে নামছে বলে খাদ্য দফতর সূত্রের খবর। কিন্তু ওই টাকাতেও কয়েক সপ্তাহের বেশি টানা সম্ভব নয়। |