লোকপাল নিয়ে বিরোধী-অনৈক্যই প্রকট
লোকপাল বিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের ডাকা সর্বদল বৈঠকে আজ প্রত্যাশা মতোই সর্বসম্মতি হয়নি। কিন্তু বিলের খুঁটিনাটি নিয়ে শাসক জোটের মধ্যে ঐক্য থাকলেও, বিরোধী শিবিরের হাজার মতান্তর সামনে চলে এসেছে। কোনও বিষয়ে সরকারের সঙ্গে বামেরা সহমত, তো বিজেপির তাতে আপত্তি রয়েছে। আবার কখনও এর উল্টোটা। এই পরিস্থিতিতে সরকার কিন্তু আশাবাদী যে, সংখ্যার জোরে সংসদে লোকপাল বিল পাশ করাতে কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু প্রশ্ন হল, মন্ত্রিসভায় যে চূড়ান্ত লোকপাল বিল অনুমোদিত হতে চলেছে, তার স্বরূপ ঠিক কী হবে? আজকের বৈঠকেও তার কোনও স্পষ্ট দিশা মেলেনি।
সর্বদল বৈঠকের পর সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, চলতি অধিবেশনে বিলটি পেশ করার ব্যাপারে সরকার আজ কোনও আশ্বাস দেয়নি। কিন্তু আমরা চাই, বিলটি এ বারই সংসদে পেশ হোক। পরে সরকারি সূত্রে বলা হয়, চলতি অধিবেশনেই লোকপাল বিলটি পেশ ও পাশ করানোর ব্যাপারে সরকার সব থেকে আগ্রহী। কারণ, মনমোহন সিংহ-সনিয়া গাঁধী এ বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। এর জন্য প্রয়োজনে অধিবেশনের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে, অথবা জানুয়ারিতে ডাকা হবে সংসদের বিশেষ অধিবেশন।
লোকপাল নিয়ে সর্বদল বৈঠক। আলোচনার টেবিলে অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ, লালকৃষ্ণ আডবাণীর মুখোমুখি
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী, প্রণব মুখোপাধ্যায়, পি চিদম্বরম,
এ কে অ্যান্টনি-সহ কেন্দ্রের অন্য মন্ত্রীরা। বুধবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই
আজকের সর্বদল বৈঠকে যে সর্বসম্মতি হবে না, তা প্রত্যাশিতই ছিল। তবু কৌশলগত কারণেই এই বৈঠক ডাকা হয়। এর মধ্য দিয়ে কংগ্রেস যেমন বার্তা দিতে চেয়েছে, লোকপাল বিল নিয়ে একতরফা কোনও সিদ্ধান্ত সরকার নেয়নি, আবার অণ্ণা হজারে শিবিরকেও অপ্রাসঙ্গিক করে তোলা গিয়েছে। কারণ অণ্ণাদের বিভিন্ন দাবির বিরোধিতায় বৈঠকে সরব হয়েছে বিরোধীরাও। বামেরা স্পষ্টই জানিয়েছে, কারও অনশনের চাপে যেন সংবিধানকে জলাঞ্জলি দেওয়া না হয়। লোকপালকে যেন সংবিধানের মাথায় ‘ভগবানের’ স্তরে নিয়ে যাওয়া না হয়।
এ দিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ হতেই লোকসভার নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায় ইঙ্গিত দেন, কিছু রক্ষাকবচ রেখে সরকার প্রধানমন্ত্রীর পদকে লোকপালের আওতায় রাখতে আগ্রহী। তবে আমলাতন্ত্রের নিচু স্তর তথা ‘গ্রুপ সি’ কর্মীদের লোকপালের আওতায় রাখার সমস্যা রয়েছে। বরং তাদের ওপর কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনার নজর রেখে নির্দিষ্ট সময়ান্তরে লোকপালের কাছে রিপোর্ট পেশ করুক।
কেন্দ্রের এই প্রস্তাবে বিজেপি আপত্তি করলেও বামেরা সহমত। সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্তের কথায়, ষাট লক্ষ ‘গ্রুপ সি’ কর্মীর ওপর লোকপালকে নজর রাখতে গেলে বিপুল সংখ্যক কর্মী চাই। তা ছাড়া লোকপাল প্রধানমন্ত্রী থেকে আমলাতন্ত্রের নিচু স্তর পর্যন্ত নজর রাখবে এই প্রস্তাব অযৌক্তিক।
শুধু ‘গ্রুপ সি’ কর্মচারীদের বিষয়ে নয়, লোকপালের আওতায় সিবিআই-কে রাখা নিয়েও মতান্তর রয়েছে। খোদ সিবিআই ডিরেক্টর এ ব্যাপারে তাঁর আপত্তির কথা আজ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। এই অবস্থায় সিবিআই-এর ডিরেক্টর নিয়োগের জন্য একটি কমিটি গড়ার সূত্র নিয়ে সর্বসম্মতির চেষ্টা চলছে। সেই কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ও লোকপাল বা কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনার। তবে, প্রধানমন্ত্রীর পদকে লোকপালের আওতায় রাখা নিয়ে আজ এনডিএ-র মধ্যেও মতান্তর দেখা গিয়েছে। বিজেপি এটা চাইলেও আপত্তি জানিয়েছেন তাঁদের শরিক সংযুক্ত জনতা দলের নেতা শরদ যাদব। একই ভাবে প্রধানমন্ত্রী পদকে লোকপালের আওতায় রাখা নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছেন লালু প্রসাদ-রামবিলাস পাসোয়ানও।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.