বর্ধমানে বেনজির কাণ্ড
উপাচার্যের নিয়োগ বাতিল এক মাসেই
নিয়োগ করা হয়েছিল নভেম্বরের মাঝামাঝি। এক মাসও পুরোয়নি। এমনকী, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হলেও এক দিনের জন্যও সেই পদে বসেননি প্রেসিডেন্সির অধ্যাপক দেবীদাস চট্টরাজ। এর মধ্যেই উপাচার্য-পদে তাঁর নিয়োগ বাতিল করে দেওয়া হল। ‘আইনি জটিলতা’র কারণেই শেষ পর্যন্ত নিয়োগের সিদ্ধান্ত বদল করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে এই ঘটনা নজিরবিহীন।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এক জন ‘শিক্ষাবিদের পক্ষে কাজ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে’ বলে জানিয়ে উপাচার্য সুব্রত পাল গত অক্টোবরে ইস্তফা দেন। কিছু দিন পরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে দেবীদাসবাবুর নাম ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। যদিও পূর্ণ মেয়াদের জন্য নয়, ছ’মাসের জন্য।
ইতিমধ্যে রাজ্যপাল তথা আচার্যের অফিস থেকে এই ব্যাপারে দু’টি নির্দেশিকা বেরিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, দেবীদাসবাবু দায়িত্ব গ্রহণ করলেই উপাচার্যের পদ থেকে অব্যাহতি পাবেন সুব্রতবাবু। তবে দেবীদাসবাবু দায়িত্ব গ্রহণই করেননি। কিন্তু কেন? প্রেসিডেন্সির ওই অধ্যাপকের বক্তব্য, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর এখনও তাঁর ‘লিয়েন’ মঞ্জুর করেনি। তাই প্রেসিডেন্সি ছেড়ে তাঁর পক্ষে বর্ধমানে যাওয়া সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে উচ্চশিক্ষা দফতর ‘আবিষ্কার’ করে, দেবীদাসবাবুর নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মানা হয়নি। দফতরের এক কর্তা বলেন, “ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে সহ-উপাচার্য তাঁর দায়িত্ব পালন করবেন। দেবীদাসবাবুর নাম ঘোষণার আগে বিষয়টি নজর এড়িয়ে যায়। এখন ভুল শুধরে নেওয়া হচ্ছে।”
উচ্চশিক্ষা দফতরের ওই কর্তা জানান, রাজ্যপাল এই নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন। দু’-এক দিনের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি বেরোবে। পরবর্তী উপাচার্য নিযুক্ত হবেন ‘সার্চ কমিটি’ বা অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে। এবং সেই নিয়োগ হবে পূর্ণ মেয়াদ অর্থাৎ চার বছরের জন্য। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে বলে মনে করছেন দফতরের কর্তারা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন নজরে আসার পরে দেবীদাসবাবুর নিয়োগ বাতিল করার জন্য দফতর থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল রাজ্যপালের কাছে। তিনি সেই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন।” দেবীদাসবাবু অবশ্য বুধবার জানিয়েছেন, নিয়োগ বাতিল হওয়ার কথা তাঁর জানা নেই।
মেয়াদ শেষের আগে উপাচার্য ইস্তফা দিলে বা অন্য কোনও ভাবে তাঁর পদ শূন্য হলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো আইন অনুযায়ী রাজ্যপাল তথা আচার্য অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য কাউকে নিয়োগ করতে পারতেন। কিন্তু ২০১০ সালে সেই আইন সংশোধন করা হয়। বলা হয়, ওই অন্তর্বর্তী সময়ে কাজ চালাবেন সহ-উপাচার্য। নতুন সরকারের আমলে অর্ডিন্যান্স জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে নানান সংশোধন হলেও ওই ধারাটির কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। নিয়োগের আগে বিষয়টি খেয়াল করা হল না কেন?
উচ্চশিক্ষা দফতর সদুত্তর দিতে পারেনি। ওই দফতর সূত্রের খবর, দেবীদাসবাবুর নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ওই ধারাটি অগ্রাহ্য করা হয়েছে বলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একাংশ ক্ষোভ জানাতে থাকেন। আইনি বিশ্লেষণের পরে রাজ্য সরকারও শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদল করে। পূর্ণ সময়ের উপাচার্য নিযুক্ত না-হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন সহ-উপাচার্য ষোড়শীমোহন দা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.