শ্রমিক সরবরাহের কর্তৃত্ব নিয়ে তিন সংঠনের বিরোধের জেরে প্রায় তিন মাস ধরে কোচবিহার স্টেশন লাগোয়া এলাকায় রেলের মিউজিয়াম তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। ওই ঘটনায় রেল কর্তারা তো বটেই, উৎসাহী বাসিন্দারাও উদ্বিগ্ন। ফের কবে ওই কাজ শুরু হবে তাও স্পষ্ট নয়। তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থাও। সংস্থার তরফে দ্রুত কাজ শুরুর জন্য রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের ডি আর এম সচ্চিদানন্দ সিংহ বলেন, “শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে দ্রুত তা মিটিয়ে মিউজিয়ামের কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।”রেলওয়ে হেরিটেজ কমিটির চেয়ারপার্সন শাঁওলি মিত্র ঘটনার কথা জেনেছেন। তিনি বলেন, “বিষয়টি জানি। রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।” |
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে তকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে রেলের মিউজিয়াম তৈরির শিল্যানাস করেন। সাড়ে ৩ কোটিরও বেশি টাকাও বরাদ্দ হয়। কোচবিহার স্টেশনের কাছে কাজ শুরুও হয়। প্রায় তিন মাস ধরে তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের পরে ওই স্টেশনে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন তৈরির পরেই সিটু ও আইএনটিইউসির সঙ্গে নয়া সংগঠনের যে চাপানউতোর শুরু হয়। রেলের মিউজিয়াম তৈরির কাজে কে শ্রমিক সরবরাহ করবে নিয়ে গোলমাল চরমে ওঠে।
তৃণমূল কংগ্রেসের আইআইএনটিটিইউসি নিয়ন্ত্রিত এন এফ রেলওয়ে কন্ট্রাক্টর অ্যান্ড লেবার অর্গানাইজেশনের সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “সিটু ও ইনটাক ছেড়ে বহু সমর্থক আমাদের সংগঠনে যোগ দেওয়ায় কোচবিহার ষ্টেশনে ইউনিট হয়েছে। কিন্তু ওই দুই সংগঠন আমাদের শ্রমিকদের কাজে নেওয়া যাবে না বলে ঠিকাদারের কর্মীদের ফতোয়া দেয়। সে জন্যই সমস্যা হয়েছে।’’ সিটুর রেল শ্রমিক সংগঠনের কোচবিহার ষ্টেশন ইউনিটের সম্পাদক গোপাল কড়ি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “ওই অভিযোগ ভিত্তিহী। আমাদের কেউ অন্য কোনও সংগঠনে যাননি। পুর এলাকায় স্টেশন হলেও তৃণমূল গ্রাম থেকে লোক নিয়ে সংগঠন করে মিউজিয়ামের কাজে শ্রমিক দিলে প্রকৃত মজুররা বঞ্চিত হবেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। সে জন্যই আপত্তি করতে হয়েছে।”
ইনটাকের কোচবিহার জেলা সভাপতি সুধারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ও দাবি করেছেন, তাঁদের সংগঠনের কেউ শিবির বদল করেননি। তিনি বলেন, “নিয়মের বাইরে গিয়ে কোনও সংগঠন শুধু নিজেদের লোককে কাজ দিতে চাইলে সমস্যা তো হবেই। এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার পরেও আইএনটিটিউসি জটিলতা বাড়াচ্ছে।’’ তিন সংগঠনের এমন বিরোধের জেরে কাজ পুরোপুরি থমকে রয়েছে।
কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির কর্তা অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “গোটা ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। সমস্যা যাই থাক তা মিটিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করা দরকার। ডি আর এম কে এ নিয়ে চিঠিও দিয়েছি।” ওই মিউজিয়ামের ঠিকাদার সংস্থার তরফে সোমেন সরকার জানান,যে ভাবে জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে তাতে কাজ পড়ে থাকলে খরচও দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। |