কমিউনিস্টদের ‘নিজের মতো করে ভাবতে’ পরামর্শ দিলেন প্রবীণ নেতা এবং রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্র। একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, মার্ক্সবাদীরা কি মানুষকে কাছে টানার সাহস হারিয়ে ফেলছেন?
প্রয়াত সাংসদ এবং আরএসপি-র তাত্ত্বিক নেতা ত্রিদিব চৌধুরীর জন্মশর্তবর্ষের অনুষ্ঠানে সোমবার মৌলালি যুবকেন্দ্রে অশোকবাবু বলেছেন, “মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদকে পুঁথি পড়ার মতো না-পড়ে, ধনতন্ত্রকে সেলাম জানানোর জন্য ঝাঁপিয়ে না-পড়ে, নিজের মতো করে ভাবতে হবে। এটা সম্ভব হবে, যদি মানুষগুলি আমাদের ভালবাসেন, আমাদের বিশ্বাস করেন। এখন চারপাশ দেখে মনে হয়, মানুষকে কাছে টানার সাহস মার্ক্সবাদীরা কি দেখাতে পারছেন না?” প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতার পরামর্শ, “আমি বিশ্বাস করি, আমরা যদি তাঁদের ভালবাসতে পারি, তা হলে মানুষ কাছে আসবেন।”
অশোক মিত্র |
সংসদীয় রাজনীতিতে থেকে, দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলেও ত্রিদিববাবু যে চিন্তাবিদ ছিলেন এবং পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজনীতিতে এই চিন্তার ধারা ‘শুকিয়ে গিয়েছে’, এ কথাই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন অশোকবাবু। কারও নাম না-করলেও মাক্সর্বাদকে ‘পুঁথি পড়ার মতো করে পড়া’ এবং ‘ধনতন্ত্রকে সেলাম’ বলতে অশোকবাবু প্রকৃত পক্ষে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, নিরুপম সেনদেরই প্রচ্ছন্ন কটাক্ষ করেছেন বলে বাম সূত্রের ব্যাখ্যা। অনুষ্ঠানের আর এক বক্তা, ত্রিদিববাবুর প্রাক্তন সহকর্মী এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অমল রায়ও কমিউনিস্টদের পুরনো জীবনচর্যার কথা তুলে ধরেন। তাঁর কথায়, “আমরা মানুষের সঙ্গে থেকেছি। তাঁদের ছেঁড়া কম্বলের তলায় শুয়েছি। যা পেয়েছি, খেয়েছি।” সেই অনাড়ম্বর জীবনযাপন থেকে বামপন্থীরা সরে যাওয়ায় মানুষও তাঁদের পাশ থেকে সরে গিয়েছেন, এমনই ইঙ্গিত ছিল নবতিপর অমলবাবুর।
আরএসপি-র কার্যনির্বাহী রাজ্য সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী এ দিনের অনুষ্ঠানে বলেন, “এমন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি, যার কোনও অভিজ্ঞতা আগে আমাদের ছিল না। অদ্ভুত এক সময়। তবে ইতিহাস এ ভাবেই চলে। ইতিহাস প্রবহমান ধারা।” মনোজ ভট্টাচার্য, বিশ্বনাথ চৌধুরী, অমর চৌধুরী, তপন হোড়, সুকুমার ঘোষের মতো আরএসপি-র রাজ্য নেতারা অনুষ্ঠানে ছিলেন।
|