তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গেল বাঁকুড়া পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধিদের ছ’টি আসন। রবিবার ওই স্কুলের নির্বাচন হয়। তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর তিন জন করে প্রার্থী সেখানে জয়ী হন। তৃণমূলের বাঁকুড়ার বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্রের মনোনীত ছ’জন ও তাঁর দলেরই বাঁকুড়ার পুর প্রধান শম্পা দরিপার মনোনীত ছ’জন প্রার্থীর লড়াই হয়েছে। জেলার এই দুই শীর্ষ নেতার দ্বন্দ্ব অবশ্য নতুন নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনেই তা দেখেছে শহরবাসী।
ওই স্কুলে অভিভাবক প্রতিনিধির ৬টি আসনের জন্য তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মোট ১২ জন ও ৫ জন নির্দল প্রার্থী ছিলেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট এখানে তাদের মনোনীত প্রার্থী দাঁড় করায়নি। তাই এই নির্বাচনের ফল নিয়ে শহরের বাসিন্দাদের বেশ কৌতূহল ছিল। স্কুল নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঐক্যমত না হওয়া নিয়ে দুই নেতা-নেত্রী পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ শানিয়েছেন। কাশীনাথবাবুর অভিযোগ, “আমাদের দলের মধ্যে একতা নেই। শম্পা নিজের দম্ভ দেখাতে গিয়ে আমার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নিজের প্রার্থী দাঁড় করালেন।” কাশীবাবুর বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগ তুলেছেন শম্পা দেবী। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “কাশীবাবু নিজেকে সব কিছুর ঊর্দ্ধে ভাবতে শুরু করেছেন। স্কুল ভোটে তিনি ইচ্ছা করে আমার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নিজের প্রার্থী দিলেন। এই আবস্থার জন্য তিনি-ই দায়ি।” কাশীবাবুর সঙ্গে শম্পাদেবীর দ্বন্দ্ব বিধানসভা নির্বাচনের দিন আরও এক বার প্রকাশ্যে এসেছিল। এই স্কুলেরই বুথে শম্পাদেবীর বিরুদ্ধে তাঁর নির্বচনী এজেন্ট দেওয়া নিয়ে গড়িমসি করার অভিযোগ তুলেছিলেন কাশীবাবু।
দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করার জন্য দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি কাশীনাথ মিশ্র অভিযোগ তুলেছেন বর্তমান জেলা সভাপতি তথা আবাসন মন্ত্রী শ্যাম মিশ্রের বিরুদ্ধে। কাশীবাবুর অভিযোগ, “শ্যামবাবুই দলের মধ্যে গ্রুপবাজি সৃষ্টি করেছেন। সারা জেলায় গোষ্ঠিদ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে তিনি হাত গুঁটিয়ে বসে রয়েছেন।” শ্যামবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “কাশীবাবু যা খুশি বলছেন। ইদানিং তিনি দলের সকলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলছেন। ওই স্কুলের নির্বাচন নিয়ে আমি কিছু জানি না।” রাজ্যের শরিকদলের নেতাদের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনোরঞ্জন বসু বলেন, “তৃণমূল অশান্তি সৃষ্ট করত বলেই আমরা প্রার্থী দিইনি।” অন্য দিকে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে ছাতনার ঝুঁজকা হাইস্কুলে তৃণমূল ৫-১ এবং ওন্দার পুনিশোল হাইস্কুলে তৃণমূল ৬-০ আসনে জয়ী হয়। দু’টি স্কুলে আগে সিপিএম জয়ী হয়েছিল। |