ঠান্ডা যুদ্ধ চলছিল অনেক দিনই। এ বার তা প্রকাশ্যে চলে এল। নয়া সংঘাতের থিম অনিল কুম্বলে বনাম তাঁর ক্রিকেট বোর্ড। যার জেরে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কুম্বলে।
ওয়াকিবহাল মহলে কারও কারও মতে যদিও ভারতীয় বোর্ড বললে ভুল বলা হবে। বলতে হবে শ্রীনিবাসনের বোর্ড। স্বার্থসংঘাত ঘটার অভিযোগ উঠেছিল বলে তিনি সরে গেলেন, এটাও ঠিক নয়। শোনা যাচ্ছে কুম্বলের সঙ্গে আসল সংঘাত লেগেছে নতুন প্রেসিডেন্টের। শ্রীনিবাসন চান, বেঙ্গালুরুর জাতীয় অ্যাকাডেমির ক্ষমতা আস্তে আস্তে খর্ব করতে। তিনি নিয়ে এসেছেন স্পেশ্যালাইজ্ড অ্যাকাডেমি কমিটি। নতুন প্রেসিডেন্ট চান, দেশের মধ্যে অ্যাকাডেমি সম্পর্কিত সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হোক তাঁর তৈরি করা নতুন কমিটি।
দক্ষিণ ভারতীয় ক্রিকেট লবির আভ্যন্তরীণ লড়াই এসে পড়ার আশঙ্কাও সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এক দিকে চেন্নাইয়ের শ্রীনিবাসন। অন্য দিকে বেঙ্গালুরু ক্রিকেট সংস্থার প্রধান অনিল কুম্বলে। তবে একা কুম্বলে নন, বোর্ডের ওপর ক্ষুব্ধ জাতীয় অ্যাকাডেমির আরও কয়েক জন পদাধিকারী। এঁদের কেউ কেউ মিটিংয়ে আসাই ছেড়ে দিয়েছেন। |
কুম্বলে চেয়েছিলেন, জাতীয় অ্যাকাডেমির আকাশকে আরও প্রশস্ত করতে। চেয়ারম্যান হওয়ার পরেই তিনি বোর্ডের কাছে এ নিয়ে ব্লু প্রিন্ট জমা দিয়েছিলেন। প্রস্তাব দিয়েছিলেন, দেশের সমস্ত জোনাল অ্যাকাডেমিকে জাতীয় অ্যাকাডেমির ছাতার তলায় আনা হোক। রবিবার জাতীয় অ্যাকাডেমির এক বৈঠকে বোর্ড মিটিংয়ের মিনিট্স বুক খুলে বিস্মিত কুম্বলে আবিষ্কার করেন, তাঁর সমস্ত প্রস্তাবই বোর্ড খারিজ করে দিয়েছে। তৎক্ষণাৎ স্থির করে নেন, অনেক হয়েছে। আর থাকব না।
সোমবার নয়াদিল্লিতে বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠক ছিল। সেখানে নিম্বাসের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত হল। বোর্ডকে নিয়মিত টাকা দিতে পারছিল না নিম্বাস। তাদের ২০০০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক গ্যারান্টিও বাজেয়াপ্ত করেছে বোর্ড। গাওস্করের আইপিএল ফি বাবদ ১০ লক্ষ ডলারের দাবি ফের নাকচ হয়ে গেল। সভায় ছিলেন কুম্বলে। কিন্তু পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন রবিবারেই।
রাতে সংবাদসংস্থাকে কুম্বলে বলেও দেন, “আমার একটা তিন বছরের পরিকল্পনা ছিল এনসিএ-কে নিয়ে। আশা ছিল বোর্ড আমার কথা শুনবে। কিন্তু যদি আমার কথা না-ই শোনা হয়, তা হলে শুধু শুধু চেয়ারম্যান হয়ে বসে থাকার মানে হয় না।” কুম্বলে পদত্যাগ করার পর বোর্ড যে মোহিন্দর পান্ডবকে অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান করেছে, তা থেকেই তাদের মনোভাব পরিষ্কার। পান্ডব নতুন তৈরি স্পেশ্যালাইজ্ড অ্যাকাডেমি কমিটিরও চেয়ারম্যান। আর ক্রিকেটারকূল অশনি সংকেত দেখছে যে, ক্রিকেটাররা প্রশাসনে এলে কি কর্তাদের সঙ্গে যুদ্ধ একেবারে অবশ্যম্ভাবী? |