|
|
|
|
|
বেরোল পার্ট ওয়ানের ফল |
পাঁচশো টাকা দিলেই দেখা
যাবে পরীক্ষার খাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা |
|
নম্বর কমবেশি নিয়ে মামলায় আদালত বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষার খাতা তলব করে। এ বার ছাত্রছাত্রীরা চাইলেই তথ্যের অধিকার আইন মেনে তাঁদের উত্তরপত্রের প্রতিলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিলিপি পেতে হলে প্রতিটি পত্রের জন্য ৫০০ টাকা ফি দিয়ে আবেদন জানাতে হবে। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়।
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ, বিএসসি পার্ট ওয়ান পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে। বিকম পার্ট ওয়ান পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে ৩০ নভেম্বর। ওই তিনটি পরীক্ষার খাতা দেখার জন্য ৪ জানুয়ারির মধ্যে কলেজের কাছে আবেদন জানাতে হবে পরীক্ষার্থীদের। পুনর্মূল্যায়নের আবেদনও জানাতে হবে ওই তারিখের মধ্যে। কলেজের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনর্মূল্যায়ন এবং খাতা দেখার আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৯ জানুয়ারি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা সোমবার বলেন, “ওই তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে তথ্যের অধিকার আইন মেনে খাতা দেখানো হবে। তবে যে-পড়ুয়া একই সঙ্গে পুনর্মূল্যায়ন এবং খাতা দেখার জন্য আবেদন জানাবেন, তাঁর পুনর্মূল্যায়নের ফল প্রকাশিত হবে আগে। এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা পুনর্মূল্যায়নের পরে খাতাগুলি দেখার সুযোগ পাবেন।” পশ্চিমবঙ্গ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন (ওয়েবকুটা) বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তরুণ পাত্র এ দিন বলেন, “পরীক্ষকদের অধিকাংশই মন দিয়ে খাতা দেখেন। পরীক্ষার্থীদের খাতা দেখানো হলে তাঁদের মনোযোগ আরও বাড়বে বলে আশা করা যায়। মূল্যায়নে ত্রুটিবিচ্যুতির সম্ভাবনাও কমবে। তাই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার খাতা দেখানোর সিদ্ধান্ত সমর্থন করি।”
এ বছর বিএ পার্ট ওয়ান অনার্সে পাশ করেছেন ৯৫.৫৪ শতাংশ ছাত্রছাত্রী। বিএসসি অনার্সে পাশের হার ৯৩.০৮ শতাংশ। বিএ পার্ট ওয়ান জেনারেলে পাশ করেছেন ৮৮.৭৬ শতাংশ। বিএসসি জেনারেলে পাশের হার ৮২.৯৯ শতাংশ। বিকমের মতোই বিএ এবং বিএসসি-তেও অনেকের ফল অসম্পূর্ণ রয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে।
এ দিন প্রায় এক লক্ষ পরীক্ষার্থীর ফল প্রকাশিত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৪৩০০ পরীক্ষার্থীর ফল অসম্পূর্ণ বলে জানান পরীক্ষা নিয়ামক ওঙ্কারসাধন অধিকারী। তিনি বলেন, “এ বছর কলেজগুলি বাধ্যতামূলক ভাষার পরীক্ষা নিয়েছে। সেই নম্বর ঠিকঠাক জমা পড়েনি বলে ৩৯০০ পরীক্ষার্থীর ফল অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছে। এ ছাড়া অনার্স ও জেনারেলের অন্যান্য বিষয়ের জন্য ফল অসম্পূর্ণ রয়েছে ৪০০ জনের।” এমনকী অনার্সের একটি বিষয়ের ১৩১ জন পরীক্ষার্থীর নম্বর রবিবার সন্ধ্যায় জমা পড়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।
বিকমের ক্ষেত্রে এ বার ১১০০ পরীক্ষার্থীর ফল অসম্পূর্ণ ছিল। ৩০ নভেম্বর ফলপ্রকাশের পরে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও এ-পর্যন্ত তার অর্ধেক নম্বরও জমা পড়েনি বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, “কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতির জন্য ছাত্রছাত্রীদের দুর্ভোগ কখনওই কাম্য নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সহ-উপাচার্য (শিক্ষা)-কে অনুরোধ করব।” উপাচার্য জানান, ভাষার পরীক্ষা যখন হয়েছে, তখনও ছাত্রছাত্রীদের রোল নম্বর কলেজে পৌঁছয়নি। কলেজের রোল নম্বর অনুসারেই পরীক্ষা দিয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। তাই খাতা দেখা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও নম্বর জমা পড়তে দেরি হয়েছে বলে অনেক পরীক্ষক তাঁকে জানিয়েছেন। তবে আগামী বছর যাতে এ ধরনের কোনও কারণে পরীক্ষার্থীদের সমস্যা না-হয়, বিশ্ববিদ্যালয় সে-দিকে নজর রাখবে বলে জানান সুরঞ্জনবাবু। |
|
|
|
|
|