|
|
|
|
|
|
|
৩৫ বছর পর দ্বিতীয় সংকলন |
কুড়োনো মানিক |
বার্গম্যান তাঁকে বলছিলেন সেই বেড়ালটার কথা, শুটিংয়ের সময় যে তাঁকে খুব বিপাকে ফেলেছিল। তার পরে বলেছিলেন, ‘নেভার ইউজ অ্যানিম্যালস’। বার্গম্যানের সঙ্গে আলাপচারিতার এমনই ছোট ছোট গল্প পরে লিখেছিলেন সত্যজিৎ রায়। কিন্তু সে লেখা আজও কোথাও গ্রন্থিত হয়নি। সেই ১৯৪৯-এ, সত্যজিৎ যখন চলচ্চিত্র-পরিচালক হননি, তখনই ‘দ্য স্টেটসম্যান’-এ প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর চলচ্চিত্র-বিষয়ক একটি লেখা। গ্রন্থিত হয়নি তাও। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা কিংবা ফিল্ম বুলেটিনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা তেমনই ছোট-বড় ২২টি প্রবন্ধ ও কথালাপ নিয়ে এ বার প্রকাশিত হতে চলেছে চলচ্চিত্র বিষয়ে সত্যজিতের দ্বিতীয় ইংরেজি বই ডিপ ফোকাস: রিফ্লেকশনস অন সিনেমা। প্রথমটি, আওয়ার ফিল্মস দেয়ার ফিল্মস প্রকাশিত হয়েছিল আজ থেকে ৩৫ বছর আগে, ১৯৭৬-এ। কলকাতার ‘সোসাইটি ফর দ্য প্রিজার্ভেশন অব সত্যজিৎ রে ফিল্মস’ বা রে সোসাইটির সঙ্গে যৌথ ভাবে বইটি প্রকাশ করছে হার্পারকলিন্স পাবলিশার্স।
|
|
‘দ্য ফিল্ম-মেকার্স ক্র্যাফ্ট’, ‘পেন পোর্ট্রেটস’ এবং ‘সেলিব্রেটিং সিনেমা’ তিন ভাগে সিনেমা নিয়ে সত্যজিতের কলমে চিত্রকথা, ব্যক্তিকথা এবং উদ্যাপনকথার এই সংগ্রহের সম্পাদনায় আছেন সন্দীপ রায়। তাঁকে এ কাজে সহযোগিতা করেছেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, দীপক মুখোপাধ্যায়, অরূপকুমার দে এবং দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। বইটিতে থাকছে বেশ কিছু ফিল্মের স্থিরচিত্র, রেখাচিত্র এবং সত্যজিতের তোলা ছবি। আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারি আইসিসিআর-এর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেন্টারের সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন শ্যাম বেনেগাল, যিনি প্রকাশিতব্য বইটির ভূমিকাও লিখেছেন। ‘রে সোসাইটি’র আয়োজনে ‘রে মেমোরিয়াল লেকচার’-এও এ বার বলবেন তিনি। সোসাইটির পক্ষে অরূপকুমার দে জানালেন, ওই দিন শ্যাম-পরিচালিত সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে তথ্যচিত্রটি দেখানোর পরিকল্পনা আছে। সঙ্গে বইটির পিনাকী দে-কৃত প্রচ্ছদ ও বইটি থেকে নেওয়া সত্যজিতের স্কেচে রবীন্দ্রনাথ।
|
শিল্প-কথা |
একদা ইউরোপীয় চিত্রশিল্পীদের হাতে লেখা হয়েছিল এ দেশের ইতিহাস। শিল্পীরা যে কেবল রাজ-প্রতিকৃতি বা সভাদৃশ্য এঁকেছিলেন তা নয়, বরং অত্যন্ত নিখুঁত দৃশ্যায়নে ধরা পড়েছে এ দেশের নিসর্গ, সৌধ-স্থাপত্য অথবা জনজীবন বা বিভিন্ন উৎসবের দৃশ্য। আলোকচিত্রের বিকল্প হিসেবে এ সমস্ত চিত্রকলা এক দিকে যেমন সরকারি নথির প্রয়োজন মিটিয়েছে, অন্য দিকে ও-দেশের একটি বাজারও তৈরি হয়েছিল এ-মত ছবির জন্য। ড্যানিয়েল কাকা ভাইপো, উইলিয়াম হজেস, উইলিয়াম ডেভিস বা জোফানি-র মতো শিল্পীদের আমরা আজও মনে রেখেছি এই শিল্পকীর্তির জন্য, যার মূল্যবান একটা সংগ্রহ দেখা যাবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে। অষ্টাদশ শতকের এই চিত্রকলা নিয়ে এ বার একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করবেন ঐতিহাসিক বরুণ দে। এ ছবির ইতিহাসের সঙ্গে সে সময়ের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বলবেন তিনি, সঙ্গে অজস্র দুর্লভ ছবি। আজ সন্ধে ৬ টায় ‘সাম পার্সপেক্টিভস ইন দ্য অ্যানালিসিস অব এইটিন্থ সেঞ্চুরি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান পোর্ট্রেটস অ্যান্ড ল্যান্ডস্কেপস: কানেক্টিভিটিস বিটুইন আর্ট অ্যান্ড ইম্পিরিয়ালিজম ইন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল’ শীর্ষক আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে। |
|
বিশেষ উদ্যোগ |
ঐতিহ্যবাহী ভবনকে বাঁচাতে হলে তার উপযুক্ত ব্যবহার জরুরি। এ প্রয়াস চলেছে বিশ্ব জুড়েই। নরওয়ের শিল্পী- গোষ্ঠী ‘ভার্ডেনস্টিয়াট্রেট’-এর এমনই একটি উদ্যোগে গাড়ির বাতিল যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে তৈরি ইনস্টলেশন-এর সঙ্গে থাকছে ইউরোপীয় কনসার্ট। আলো-আঁধারির মধ্যে সে এক অদ্ভুত মায়া। ২০১০-এ চিনের গুয়াংঝাউ জাদুঘরে এর প্রথম প্রদর্শনী, তার পরে জার্মানি, নরওয়ে, কানাডা, নিউ ইয়র্ক-সহ বিশ্বের নানা শহরে তা প্রদর্শিত হয়েছে। এ বার তা এই শহরের কারেন্সি বিল্ডিংয়ে, ১০-১৫ ডিসেম্বর। প্রথম দিন হাজির থাকবেন নরওয়ের রাষ্ট্রদূত। প্রদর্শনীর প্রযোজক ইনগার বুরুসেন্ড বলেন, ‘কলকাতার সঙ্গে নরওয়ের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক অনেক গভীর। শিল্পের এই নতুন মাধ্যম সেই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।’ ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ এই ঐতিহ্যবাহী ভবনটি সংস্কার করছে। ইতিমধ্যেই সেখানে বিভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে, তাতে দর্শকের উপস্থিতিও উৎসাহব্যঞ্জক।
|
সাংস্কৃতিক উৎসব |
বাংলার সর্ববৃহৎ জনজাতীয় গোষ্ঠী সাঁওতাল-সহ মেচ, রাভা, ভুটিয়া, মুন্ডা ইত্যাদি হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া কলকাতার মঞ্চে অন্যদের আনাগোনা কম। যেমন, পশ্চিম মেদিনীপুরের বৈগাদের কারাম নাচ বা লোধাদের চাং নাচ। এমন অপরিচিত নৃত্যগীত যেমন থাকছে, আবার দং, সহরাই, দাসায়, বাকপা ইত্যাদিও দেখা যাবে ‘আদিবাসী সাংস্কৃতিক উৎসবে’। রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ বিভাগের পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী উন্নয়ন সমবায় নিগম লিমিটেড-এর আয়োজনে আজ ও আগামিকাল এই উৎসব। আজ সন্ধ্যায় রবীন্দ্রসদনে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন এই আয়োজনের। দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় উৎসব চলবে পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের পূর্বশ্রী প্রেক্ষাগৃহে। আবার, জনজাতীয়-সহ অন্য লোকায়ত ধারার উৎসব ছিট-কালিকাপুরের লোকগ্রামে ৬-৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়। লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের ১৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এই আয়োজন। বাউল, ঝুমুর, ভাওয়াইয়া, নাটুয়া, গম্ভীরা, লেটো ইত্যাদি ছাড়াও থাকবে দার্জিলিঙের মারুনি নাচ ও পুরুলিয়ার বুলবুলি নাচ। এ দিকে নিসর্গের মধ্যে নিছক আলংকারিক গাছ নয়, এ বার গাছকেই বিষয় করে প্রদর্শনী। ‘বৃক্ষ- আ সাগা অব ট্রিজ’ নামে সেই প্রদর্শনীতে গাছকে ঘিরেই পেন্টিং, আলোকচিত্র, ভিডিয়ো আর্ট ও ইনস্টলেশন পল্লবিত হয়ে উঠেছে। শিল্পী শঙ্কর এস। উইভার্স স্টুডিয়ো সেন্টার ফর দি আর্টসে প্রদর্শনীটি চলবে মঙ্গলবার সন্ধে ৭টা পর্যন্ত।
|
শৃন্বন্তু |
শ্রুতিনাটক পরিবেশনা, লেখা ও গবেষণার কাজটি দীর্ঘ দিন ধরেই করে আসছে দক্ষিণ কলকাতার শৃন্বন্তু। ওদের উদ্যোগেই এ শহরে আয়োজিত হয় সারা বাংলা শ্রুতিনাটক উৎসব। এই কাজের তাগিদ থেকেই ‘ঋদ্ধ’ পত্রিকাটির প্রকাশ এবং এ বছর তা সাতে পা দিল। সাম্প্রতিক সংখ্যায় দুই বাংলা ও প্রবাসী লেখকদের লেখার সঙ্গে রয়েছে সাতটি শ্রুতিনাটক। দক্ষিণ রায়, নারীর অধিকার ও বিরহড় সমাজের ধর্মবিশ্বাস রচনাগুলি উল্লেখযোগ্য। আজ সন্ধে ৬টায় পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অকাদেমিতে নবপঞ্জিকৃত ‘ঋদ্ধ’-র আবরণ উন্মোচন করবেন মৃণাল সেন। থাকবেন দুই বাংলার লেখক-সহ শ্রুতিনাটকের সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্টরা। পরে শৃন্বন্তু-র বাচিক শিল্পীরা পরিবেশন করবেন একটি শ্রুতিনাটক।
|
রজতজয়ন্তী |
মাত্র তিনটি ছিটেবেড়ার টালি-ছাওয়া চালাঘরে ১৯৮৬-র ৬ ডিসেম্বর শুরু হল পঠনপাঠন। ১২৫ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য তখন কেবল বাণিজ্য বিভাগ। একে একে সবই হয়েছে, ২০০৯-এ ন্যাক-এর স্বীকৃতিও এসেছে। ভদ্রেশ্বরের কবি সুকান্ত মহাবিদ্যালয় এখন বৈদ্যবাটি, চাঁপদানি এলাকার ছাত্রছাত্রীদের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান। পূর্বাচল বহুমুখী সমবায় কলোনি সমিতি-র দান করা দুই বিঘা জমিতে দাঁড়িয়ে আছে মহাবিদ্যালয়ের সুদৃশ্য ভবন। শুধু লেখাপড়াই নয়, খেলাধুলা, এন এস এস এবং কম্পিউটার শিক্ষাতেও নজির গড়েছে শিক্ষাকেন্দ্রটি। শিক্ষার্থীরা স্থানীয় গ্রামোন্নয়নের কাজের সঙ্গেও যুক্ত। বর্তমান শিক্ষার্থী প্রায় ১৫০০ জন। ক্রমশ বাড়ছে নতুন বাড়ির চাহিদা, বলছিলেন অধ্যাপিকা কিঙ্কি চট্টোপাধ্যায়, প্রয়োজন একটি ভাল প্রেক্ষাগৃহেরও। এরই মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে ২৫টি বছর। এই উপলক্ষে বছরভর আয়োজিত হল নানা অনুষ্ঠান। নানা পরিকল্পনা রূপায়ণের প্রত্যাশা নিয়ে রজতজয়ন্তী বর্ষের সমাপ্তি অনুষ্ঠান আজ, মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।
|
জানি নাই তো |
কবিপত্নী মৃণালিনী দেবীর বিয়ে হয়েছিল দশ বছর বয়সে, ২৪ অগ্রহায়ণ ১২৯০ বঙ্গাব্দ, ৯ ডিসেম্বর ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ। সতেরো-দিন-কম উনিশ বছর দাম্পত্যজীবন যাপনের পর মাত্র ঊনত্রিশ বছর বয়সে ৭ অগ্রহায়ণ ১৩০৯, ২৯ নভেম্বর ১৯০২ তাঁর জীবনাবসান হয়। আক্ষেপ করে পত্নী-বিয়োগের পর কবি বলেছিলেন, ‘আমার এখন আর কেউ নেই, যাকে সব কথা বলা যায়।’ ‘স্মরণ’ কবিতাগুচ্ছ তাঁর পত্নী বিয়োগশোকের সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। কাব্যে উপেক্ষিতা এমন এক জনকে নিয়ে সল্টলেক পূর্বশ্রী প্রেক্ষাগৃহে ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ টায় নিবেদিত হবে এক দৃশ্য-শ্রুতি-আলেখ্য ‘জানি নাই তো তুমি এলে’। বিন্যাস ও পরিচালনায় শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়, গানে পারমিতা চট্টোপাধ্যায় ও অনিন্দ্য ভট্টাচার্য। শ্রুতিনাটকে মুখ্য দুই চরিত্রে জগন্নাথ বসু ও ঊর্মিমালা বসু। পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের সঙ্গে অনুষ্ঠানটি যৌথ ভাবে আয়োজন করেছে পাইকপাড়া ইম্প্রেশন।
|
আলোর কারবারি |
কফি হাউসের আড্ডায় হঠাৎই একদিন ঠিক হল বইমেলা হবে। বারো-চোদ্দোটা স্টলও ঠিক হল, কিন্তু আলো? লাহাবাড়ির জামাই বিমল ধর বললেন, ‘কেন? আমাদের হারু তো আছে, ওই করবে আলো।’ সেই শুরু, আজ পঁয়ত্রিশ বছর কলকাতা বইমেলাকে আলোকিত করছিলেন হারুবাবু, হারাধন দে (১৯৫১-২০১১)। শুধু কি তাই? সেই যে বেঙ্গল ইলেক্ট্রিকের মিস্ত্রি হয়ে প্রথম গিয়েছিলেন গঙ্গাসাগর মেলা, তার পরে আজ বিয়াল্লিশ বছর সাগরমেলার আলোর ভারও তাঁরই। বারো বছর বয়সে কলকাতায় এসে বারো টাকার তার কিনে বারোটা টিউবলাইট দিয়ে সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ আলো করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন যিনি, এ বছরও ম্যাডক্স স্কোয়্যার পুজো সেজেছিল তাঁরই আলোয়। বিভিন্ন পুজোয় আলো দেওয়া, বিভিন্ন বনেদি বাড়ির ওয়ারিং করাই ছিল তাঁর প্রথম দিকের কাজ। যে বছর কলকাতা বইমেলা পুড়ে গেল, পুড়ে গিয়েছিল অন্যের কাছ থেকে আনা তাঁর অনেক সরঞ্জাম, আবার সে বছরই পুড়ে গিয়েছিল গঙ্গাসাগরে তাঁর গোডাউনও। কিন্তু ছাই-চাপা আলো আবার জেগে উঠেছিল। সে আলো জেগেই আছে, শুধু প্রয়াত হলেন সেই আলোর কারবারি।
|
রাজার চিঠি |
নাৎসি কনসেনট্রেশন শিবিরে একদা বন্দিরা অভিনয় করেছিলেন রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’। সেই তথ্য আজ ইতিহাস, এবং ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি এ বার মঞ্চে। ‘রেনেসাঁ’ নাট্যদল সেই ঘটনা অবলম্বনে নির্মাণ করেছে নাট্যপ্রযোজনা ‘রাজার চিঠি’। রাষ্ট্রীয় হিংসার প্রতিবাদে আত্মশক্তির জাগরণের এই নাটকে পাত্রপাত্রীর সংখ্যা অনধিক ষাট। অভিনয়ে সমাজের তথাকথিত মূল স্রোতের অভিনেতাদের পাশাপাশি আছেন দৃষ্টিহীন, ফুটপাথবাসী, জনজাতীয়দের মতো প্রান্তিক মানুষজন। এই নাটকের নির্মাণের মূল দায়িত্বে শুভাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। এ ছাড়াও, জড়িয়ে আছেন সুমন মুখোপাধ্যায়, জয় সেন, গৌতম ঘোষ, মহম্মদ আলির মতো নাট্য-ব্যক্তিত্ব। প্রথম অভিনয় আগামী কাল, মধুসূদন মঞ্চে, সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায়।
|
রবীন্দ্র-স্মরণ |
একদা আত্মপরিচয়ের মতোই তিনি বলেছিলেন, ‘এ কথা সকলেরই জানা, আমি নেহাত একজন কবি’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বাক্য বিনয়বাচন বটে, কিন্তু একটি গভীর অর্থে সত্য। ‘রবীন্দ্রনাথের জন্মসার্ধশতবর্ষ উদযাপনে নানা কিছু হচ্ছে, কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে কবিরা কী ভাবে স্মরণ করছেন, তা নিয়ে তেমন কিছু দেখা গেল না’, জানাচ্ছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। সেই ভাবনাই পল্লবিত হয়ে আই সি সি আর-এ দু’দিনের অনুষ্ঠান। ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকার আয়োজনে ৭-৮ ডিসেম্বর প্রায় চল্লিশ জন কবির কবিতায় রবীন্দ্র-স্মরণ। ‘নিছকই বন্দনা নয়, কেউ ভিন্নমতও ব্যক্ত করতে পারেন’, জানাচ্ছেন ‘কৃত্তিবাস’-এর আদি এবং নব পর্যায়ের সম্পাদক সুনীল। থাকছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং সৌমিত্র মিত্রের কণ্ঠে রবীন্দ্র কবিতা। রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে একটি বক্তৃতা দেবেন সুধীর চক্রবর্তী। এ ভাবেই, কথায় ও কাব্যে রবীন্দ্রনাথকে ফিরে দেখা। বাংলার আদি-কবির নামাঙ্কিত পত্রের আয়োজনে মহাকবির স্মরণ। |
নাচের তালে |
মঞ্চে শরীর নয়, প্রথমে ক্যানভাসে ছন্দিত হত তুলি, তাঁর হাতে। রীতিমতো মুম্বইয়ে জে জে স্কুল অব আর্টস এবং লন্ডনে রদেনস্টাইনের কাছে আঁকা শিখতেন তিনি। কিন্তু সব বদলে দিলেন আনা পাভলোভা। চিত্রশিল্পী অস্তে গেলেন, নৃত্যশিল্পীর উদয় ঘটল। প্রায় নব্বই বছর আগে লন্ডনে উদয়শঙ্করের সেই নৃত্যজীবন শুরু, আজও, তাঁর মৃত্যুর পরেও তা বহমান। ভারতীয় নৃত্যের জগতে তিনি আজও প্রেরণায় প্রাণবন্ত। সেই প্রেরণা মনে রেখে শুরু হচ্ছে সাত দিনের উদয়শঙ্কর নৃত্যোৎসব। রাজ্য সঙ্গীত অ্যাকাডেমি আয়োজিত এই উৎসবে এ বার আসছেন ইউক্রেনের নৃত্যশিল্পী হানা স্মারনোভা। ইতিহাস বলছে, উদয়শঙ্করের নৃত্যশিল্পী হয়ে ওঠার প্রেরণার মতো কাজ করেছিলেন এক রুশ নৃত্যশিল্পীই, আনা পাভলোভা। শুধু বিদেশ নয়, রবীন্দ্রসদনে ৮-১৪ ডিসেম্বর উৎসব ভরে উঠবে সারা দেশের নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যদলের উপস্থাপনায়। এ ছাড়া অ্যাকাডেমির নানা শিক্ষাক্রমের কাজও চলছে জোরকদমে, জানালেন অ্যাকাডেমির সচিব মালবশ্রী দাস। |
|
|
|
প্রয়াণ |
কলেজ-পত্রিকায় তাঁর একটি লেখা পড়ে শিক্ষক জনার্দন চক্রবর্তী আশীর্বাদ করেন, তুমি ভবিষ্যতে অনেক সফলতা লাভ করবে। শুধু কৃতী ছাত্র নন, গবেষক-শিক্ষক-পরিকল্পনাকার হিসেবে বিপুল শ্রদ্ধা অর্জন করতে পেরেছিলেন সত্যেশ চক্রবর্তী। কুমিল্লার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৩০-এর ১৬ অক্টোবর জন্ম, বাবা ছিলেন বিশিষ্ট আইনবিদ নগেশচন্দ্র চক্রবর্তী। ভবানীপুর মিত্র ইনস্টিটিউশন ও প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা, ভূগোল নিয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর দুটিতেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। ঈশান স্কলারশিপ ও ব্রহ্মমোহন মল্লিক স্বর্ণপদক পান। লন্ডনে পিএইচ ডি। প্রেসিডেন্সি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, এবং জোকার আই আই এম ছাড়াও বিদেশের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব পোর্ট ম্যানেজমেন্ট-এর অধিকর্তার দায়িত্ব ছাড়া পাঁচ বছর স্টেট প্ল্যানিং বোর্ডের পূর্ণ সময়ের সদস্য ছিলেন, কলকাতার উন্নয়ন-পরিকল্পনা গড়ে তোলায় তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। গবেষক ও সুপণ্ডিত মানুষটির সহজ সরল ব্যবহার, আড্ডার মেজাজ দেখে তাঁর বিদ্যাচর্চার পরিমাপ করা সম্ভব ছিল না। ছাত্রদের কথা মাথায় রেখে একদা বাংলায় লিখেছিলেন স্কুলপাঠ্য ভূগোল বই, আবার আন্তর্জাতিক স্তরে তাঁর গবেষণাপত্রের সংখ্যা বিপুল। দ্য পোর্ট অব ক্যালকাটা: ১২৫ ইয়াসর্ তাঁর সম্পাদিত একটি মূল্যবান বই, তা ছাড়া সলিড ওয়েস্ট ডিসপোজাল, রিসাইক্লিং অব প্লাস্টিকস, গ্লোবাল ওয়ার্মিং সিনারিও, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর বইগুলি উল্লেখযোগ্য। ব্যস্ত মানুষটি সুযোগ পেলেই ভারতীয় মার্গ সঙ্গীত ও শিল্পকলা চর্চায় মন দিতেন। কবি বিষ্ণু দে-র বড় মেয়ে রুচিরা দেবী তাঁর স্ত্রী। অল্প দিনের অসুস্থতার পর বিশিষ্ট এই মানুষটি সম্প্রতি চলে গেলেন। ১৩ নভেম্বর বিড়লা অ্যাকাডেমিতে এক স্মরণসভায় শ্রদ্ধা জানালেন অশোক মিত্র, ধৃতিকান্ত লাহিড়ীচৌধুরী, বরুণ দে, রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায় এবং অন্যেরা। |
|
|
|
|
|
|
|