শীতের শুরুতে নাট্যোৎসবের হাত ধরে উৎসবের আমেজে ফিরেছে কৃষ্ণনগর। সঙ্গে বাহারি মেলা। দুয়েরই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে শহরের আনাচে কানাচে।
নভেম্বরের শুরু থেকেই কৃষ্ণনগর রবীন্দ্র ভবনে শুরু হয়েছে একের পর এক নাটকের উৎসব। নভেম্বরের ৮ ও ৯ তারিখে সিঞ্চনের সহযোগিতায় নাটকের আয়োজন করেছিল ‘গোবরডাঙা নকশা’। জেলা ও জেলার বাইরের মোট ৪টি দল নাটক মঞ্চস্থ করে। প্রতি বছরই শীতের শুরু থেকেই একাধিক নাট্যোৎসবের আয়োজন করা হয়। গত দশ বছর ধরে নাট্যোৎসবের আয়োজন করে আসছে ‘পরম্পরা’ নাট্যগোষ্ঠী। এ বারও ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত রবীন্দ্র ভবনে নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে তারা। উপস্থিত থাকবেন পঙ্কজ মুন্সি, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, বিভাস চক্রবর্তী, মনোজ মিত্র, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, গৌতম দে, দেবশঙ্কর হালদার, সোহিনী সেনগুপ্ত প্রমুখ।
কৃষ্ণনগরের এই নাট্য উৎসবে যোগ দিতে আসছে বাংলাদেশের নাট্যগোষ্ঠী ‘ঢাকা থিয়াটার আর্ট ইউনিট’। পরম্পরার সম্পাদক শিবনাথ ভদ্র বলেন, “যত দিন যাচ্ছে এই নাট্যোৎসব জনপ্রিয় হচ্ছে। নাটকের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। দশ বছর আগে দশর্ক সংখ্যা আড়াইশোও ছাড়াত না। সেখানে এখন আমরা দর্শকদের জায়গা দিতে পারছি না। বহু মানুষ ফিরে যান।”
২৫ থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছিল থিয়েটার নাট্যগোষ্ঠীও। সংগঠনের সম্পাদক মুখর প্রামাণিক বলেন, “আমরা বছরভর বিভিন্ন জেলায় নাটকের অনুষ্ঠান করি। কিন্তু আমরা সকলেই এই নাট্যোৎসবের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। নিজের শহরে মঞ্চে উঠে নাটক করার একটা আলাদা অনুভূতি আছে।”
১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর রবীন্দ্র ভবনে নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে থিয়েটার অঙ্গন। তাদের নিজস্ব প্রযোজনার পাশাপাশি থাকছে নবদ্বীপ ও বগুলার দু’টি নাট্যগোষ্ঠী। সংগঠনের এক অভিনেতা প্রদীপ সরকার বলেন, “এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে আমরা শহরের মানুষকে বেশ কিছু ভাল নাটক উপহার দিতে চাই।”
নদিয়ার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিক অলোক সান্যাল বলেন, “এখানে সারা বছরই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসব হয়। শীতকালে কৃষ্ণনগর সঠিক অর্থে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। এই সময়টা রবীন্দ্র ভবন ফাঁকা পাওয়াই মুস্কিল। অনেক আগে থেকেই দিন ধরে বুকিং করা হয়ে যায়। সেখানে একের পরে এক চলতে থাকে নাটকের উৎসব। থাকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও।”
নাটকের পাশাপাশি কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে শীতকাল জুড়ে বসে মেলাও। ডিসেম্বরের ২৩ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত চলবে জেলা বইমেলা। ৮ থেকে ১৭ জানুয়ারি রয়েছে সাংস্কৃতিক মেলার আয়োজনও। |