মিলল তরুণীর দেহাবশেষ |
ধৃতেরা সিআইডি হেফাজতে, খোঁজ চলছে সুচিত্রার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম ও সিউড়ি |
গুলিতে ‘আহত’ মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রা মাহাতোর চিকিৎসা করার অভিযোগে ধৃত হাতুড়ে ভূদেব মাহাতো এবং সুচিত্রাকে পালানোয় ‘সাহায্যকারী’ সন্দেহে ধৃত যুবক পিন্টু টুডুকে আরও জেরার প্রয়োজনে হেফাজতে নিল সিআইডি। রাষ্ট্রদ্রোহ, মাওবাদীদের সাহায্য ও ষড়যন্ত্রের ধারায় অভিযুক্ত করে ভূদেব-পিন্টুকে বুধবার ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। সিআইডি ধৃতদের ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চাইলেও ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম রোহন সিংহ ৭ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন। |
|
জামবনির গিধনি এলাকায় উদ্ধার হওয়া মাথার খুলি। ছবি: দেবরাজ ঘোষ |
এ দিনই জামবনির গিধনি অঞ্চলের কানাইশোল জঙ্গলে এক তরুণীর দেহাবশেষ উদ্ধারকে ঘিরে রহস্য ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বুড়িশোলে নিহত হন কিষেণজি। জেলা পুলিশ ও সিআইডি-র দাবি, কিষেণজির সঙ্গী মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রাও ‘গুলিবিদ্ধ’ হন। বুড়িশোল থেকে কানাইশোলের দূরত্ব প্রায় ১৬ কিমি। উদ্ধার হওয়া দেহাবশেষের সঙ্গে বুড়িশোলের ঘটনার যোগ নেই বলেই মনে করছে পুলিশ। তরুণীর পরিচয় ও মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
|
ভূদেব মাহাতো |
|
পিন্টু টুডু |
সিআইডি-র দাবি, ‘গুলিবিদ্ধ’ সুচিত্রাকে সাইকেলে চাপিয়ে হাতুড়ে ভূদেব মাহাতোর বেনাশুলির বাড়িতে নিয়ে যান পিন্টু। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সুচিত্রাকে ফের সাইকেলে চাপিয়ে পিন্টুই চিলকির দিকে পৌঁছে দেন। সুচিত্রা সংগঠনের কয়েক জনকে নিয়ে ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে যান বলে অনুমান পুলিশের। যে কারণে মঙ্গলবার থেকেই জামবনি, বেলপাহাড়ির ঝাড়খণ্ড সীমানায় জোরদার তল্লাশি চালাচ্ছে বাহিনী। ওড়িশা লাগোয়া নয়াগ্রামের বড়নিগুইয়ের জঙ্গলেও মাওবাদী নেতা রঞ্জন মুণ্ডা, সব্যসাচী পণ্ডার সন্ধানে পুলিশ-সিআরপি তল্লাশি চালাচ্ছে।
ভূদেব-পিন্টুর আইনজীবী দেবনাথ চৌধুরী আদালতে বলেন, “এফআইআরে ভূদেববাবু ও পিন্টুর নাম নেই। যে সাইকেলটি পিন্টুর বলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, সেটি ‘লেডিজ’ সাইকেল। অথচ সংবাদমাধ্যমে সিআইডি দাবি করেছে, জেন্টস্ সাইকেলের সামনের রডে সুচিত্রাকে বসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল পিন্টু।” সিআইডি-র তরফে আদালতে জমা দেওয়া ফরওয়ার্ডিং রিপোর্টেও লেখা নেই, সুচিত্রা সাইকেলের কোন দিকে বসেছিলেন। অন্য একটি মামলার সূত্রে এ দিন ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হয় অনু ওরফে কল্পনা মাইতিকে। |
|
পুলিশ সুপারের সঙ্গে আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী। বুধবার। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। |
‘সরকার কিষেণজিকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে’ লেখা পোস্টার সাঁটা ছিল অনুর বুকে। পুলিশের গাড়িতে ফেরার সময় অনু জানান, কিষেণজির হত্যার প্রতিবাদে ৫ ডিসেম্বর মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দিরা অনশন করবেন।
বুধবার সিউড়িতে পুলিশ সুপারের কাছে অস্ত্র-সহ আত্মসমর্পণ করেছেন বরুণ দাস নামে এক মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য। খয়রাশোল থানার তারাপুরে তাঁর বাড়ি। এসপি নিশান্ত পরভেজের দাবি, “লালগড় আন্দোলন, খয়রাশোল, রাজনগর, দুবরাজপুরে বিভিন্ন নাশকতায় যুক্ত ছিলেন তিনি।” |
|