সম্পাদক সমীপেষু...
বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয়ের সংকট
বিগত তিন মাস ধরে আমরা শিক্ষা দফতরের অধীন বিদ্যালয়গুলির কর্তৃপক্ষগণ অত্যন্ত জটিলতায় আছি। এই মুহূর্ত পর্যন্ত জানি না, পরবর্তী বছর এবং তার পরের দিনগুলি সরকার পোষিত বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয়গুলির ভবিষ্যৎ কী? (যদিও, শিক্ষা যুগ্ম তালিকাভুক্ত)
• সরকার পোষিত বিদ্যালয়গুলির সবগুলিই সমান সমদক্ষতার শিক্ষক-শিক্ষিকা নিযুক্ত থাকেন। সকলেই এস এস সি মাধ্যমে নির্বাচিত। তবে অভিভাবকদের পক্ষপাতিত্ব কোনও কোনও বিদ্যালয়ের ওপর কেন? কেন ওই বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্রভর্তির চাপ এত বেশি? এর উত্তর কে দেবে?
• সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি একই অঙ্গনে থাকলে তাদের ভর্তি সরকার নিশ্চিত করেছে (২১-১১)-র নির্দেশিকায়। ধন্যবাদ। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে পড়ালেখা বা ব্যবহারবিধি শিক্ষা খেলাধুলার মাধ্যমে শারীরশিক্ষা কেমন চলছে, কে পর্যবেক্ষণ করবেন? ভর্তি নিশ্চিত হওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির সার্বিক মান আরও কমে যাবে না তো?
• প্রাথমিক ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত কত? একটি শ্রেণির একটি শাখায় কত জন পড়তে পারে বা ভর্তি হতে পারে?
• কোনও ছাত্র/ছাত্রী ৫/৬টি বিদ্যালয়ে লটারিতে সুযোগ পাচ্ছে। আবার কোনও ছাত্র/ছাত্রীর নাম একটি বিদ্যালয়েও উঠছে না। সমাধান কী?
কোন পথে? প্রাথমিক শিক্ষা।
• কেন্দ্রীয় ভাবে সরকারি তত্ত্বাবধানে একটি মাত্র দরখাস্তের মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলিতে সার্বিক কাঠামো অনুযায়ী ছাত্র/ছাত্রী বণ্টন করে দিলে ভাল হয় না কি?
• জাতীয় শিক্ষা আইন অনুযায়ী প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নয়নকল্পে কেবলমাত্র ২৪০.০০ টাকা নেওয়ার বিষয়ে নির্দেশ এসেছে। এটি সাধারণ মাপের সরকার পোষিত বিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে অত্যন্ত আশঙ্কার বিষয়। কারণ, বার্ষিক ৬০০/৭০০ টাকা থেকেই বিদ্যুৎ সংক্রান্ত ব্যয়, পরীক্ষার খরচ, বিশেষ দিন পালনের সার্বিক ব্যয়, নৈশপ্রহরী, সুইপার, গেট পাহারার লোক, জীবনশৈলীর নান্দনিক শিক্ষা, কম্পিউটার শিক্ষা, পুরস্কার, বার্ষিক ক্রীড়া, ম্যাগাজিন ইত্যাদি খরচ মেটানো অসম্ভব হয়। আগামী বৎসর থেকে এই ব্যয় কী ভাবে মেটানো যাবে? বিশেষ করে বিদ্যালয়গুলি যেখানে প্রয়োজন বুঝে নিজেরাই প্রায় প্রতি বৎসরই ৭০/৮০ জনকে এই দেয় অর্থে ছাড় দেন। মনে রাখা দরকার, যারা ভর্তি হয়, তারা আমাদের বিদ্যালয়ের পরিবারেরই সন্তান। তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব বোধহয় আমরা সকলেই যথাযথ ভাবে পালন করি।
শিক্ষকতার জীবন সায়াহ্নে নিজের কাছে নিজেকেই প্রশ্ন শুধু এই ব্যবস্থাকে ৬-১৪ বৎসরের শিশুদের সকলকে শিক্ষার অঙ্গনে আনা নিশ্চিত হবে? না বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয়গুলি আরও গুরুত্ব হারাবে?
বিদ্যালয়গুলিতে প্রথাশিক্ষার পাশাপাশি অন্য আনন্দের জগৎ থাকলেই বিদ্যালয়ে আসার আকর্ষণ বাড়ে। এ ক্ষেত্রে ধনী-বিত্তবান সকলকে এক কাঠামোতে রাখলে বিদ্যালয়গুলি চালানোর জন্য মাননীয় সরকারের কাছে ছাত্র/ছাত্রী পিছু আজকের বাজার দরে কমপক্ষে ৫০০/৬০০ টাকা বার্ষিক অনুদান দেওয়ার অনুরোধ জানাই।
• আমার ৪২ বৎসরের ধারাবাহিক শিক্ষক জীবনে এই বৎসরের মতো নবাগত অভিভাবকদের সঙ্গে এত খারাপ সম্পর্ক কোনও দিন হয়নি। তাই বিদ্যালয় প্রধানদের ভর্তি বিষয়টি স্থির নির্দেশিকা দ্বারা বা কর্মশালার মাধ্যমে একমাত্রিক করার আবেদন রাখি।
• ৬-১৪ বৎসরের সকল শিশুকে শিক্ষার আঙিনায় আনা নিশ্চিত করা বিষয়টি এক সামাজিক আন্দোলন। গণচেতনার মাধ্যমে ও সকলের সমবেত প্রচেষ্টাতেই শুধুমাত্র এর সার্থক রূপায়ণ সম্ভব অন্যথায় যে সুযোগ সুবিধাই সরকার দেন না কেন, তার সুযোগ বেশির ভাগ বিত্তবান অভিভাবকরা নেবেন এবং অপ্রয়োজনে এই অর্থমকুব বিদ্যালয়গুলির দীর্ঘ দিনের কষ্টসাধ্য পরিকাঠামো ও প্রচেষ্টাকে আবারও জীর্ণদশাগ্রস্ত করে দেবে। (সর্বশিক্ষা মিশন, সাংসদ ও বিধায়কদের ধন্যবাদ জানাই পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য)।
• ছোট একটি শিশুকে ছ’টি বিষয়ে পাশ করার পুরস্কার না-দিয়ে একটি বিষয়ের তিরস্কার রূপে অকৃতকার্য করানোর পক্ষে আমাদের বিদ্যালয় নয়। ২০০৪-’০৫ থেকে এই বিদ্যালয়ে কারওকে অকৃতকার্য করা হয় না। বরঞ্চ দুর্বল চিহ্নিত বিষয়টিকে আলাদা ভাবে গুরুত্ব দিয়ে তাকে মানে উন্নত করবার প্রচেষ্টা হয়। এই বিষয়ে সহশিক্ষিকা ও পার্শ্বশিক্ষিকাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়।
• মাস পয়লা মাহিনা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দায়বদ্ধ শিক্ষার সার্বিক উন্নতি ঘটাতে। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট নির্দেশিকা ও সহযোগিতা কাম্য।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.