মেঘের পাহাড় ছুঁয়ে
গাড়ি ছুটল নৈনিতাল
স্বর্গের মতো সুন্দর সে শহর। গরম হোক বা বসন্ত, পর্যটকেরা হাজির।
দিনটা ছিল ৫ অক্টোবর। নবমী। সে দিন আমরাও রওনা দিলাম নৈনিতালের দিকে। হিমালয়ের কুমায়ুন রেঞ্জের মধ্যে অবস্থিত নৈনিতাল। লখনউকে ছুঁয়ে ৭ অক্টোবর আইশবাগ স্টেশনে এলাম। সেখান থেকে ট্রেন ধরে পরের দিন সকালে পৌঁছলাম লালকুঁয়া স্টেশনে। সেখান থেকে একটি গাড়ি নিয়ে চলা শুরু হল। এক পাশে পাহাড়, অন্য পাশে গভীর খাদ। রোমাঞ্চকর সে যাত্রা। কিছু কিছু জায়গায় আবার ধস নেমে রাস্তা সরু হয়ে গিয়েছে। রাস্তা পেরোতে গিয়ে তখন শুধু রোমাঞ্চ নয়। যোগ হল আতঙ্কও। গাড়ি ছুটল কৌশানির দিকে। মেঘে আর পাহাড়ে খেলা এখানে দেখার মতো। সেখান থেকে রানিখেত হয়ে পৌঁছলাম নৈনিতালে।
পাহাড়ের কোলে সেই বহুচর্চিত লেক যা নৈনিতালের আকর্ষণকে দ্বিগুণ করে দিয়েছে। লেকের এক দিকে পাহাড়, অন্য দিকে সাজানো রাস্তা। আর তার পাশেই পাহাড় কেটে কেটে বাজার-হোটেল। লেকের পাশে আর পাহাড়ের কোলে হনুমানজীর মন্দির। লেকে বোটিং করার সময় মন্দিরটি বেশ লাগল। লেকের জলে নৈনিতাল সরকার কিছু রাজহাস পালন করে। লেকের অন্য পাশে সেই নয়নাদেবীর মন্দির। কথিত আছে, সতীর দেহচ্ছেদের সময় দেবীর নয়ন পড়েছিল এখানে। তাই ওই স্থান ও লেকের এমন নামকরণ। রাস্তার পাশে একটি মসজিদ। খুবই সুন্দর। রাস্তার উপরে বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে সেই মসজিদের অবস্থান।
(ফাইল চিত্র।)
দ্বিতীয় দিন, বেলার দিকে ফের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। প্রথমে একটি প্রাকৃতিক গুহায় গেলাম। বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে জঙ্গল ও দু’টি গুহা। একটির নাম টাইগার কেভ এবং অন্যটি প্যান্থার কেভ। ভিতরে বেশ ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। কিছু কিছু জায়গায় তো হামাগুড়ি দিয়ে বা প্রায় শুয়েই যেতে হয়। অদ্ভুত এক গা ছমছমে পরিবেশ। এর পরে গেলাম হিমালয় ভিউ পয়েন্ট। সেখান থেকে ত্রিশূল পর্বতের চূড়া দেখা যায়। আমরা তা দেখতে পেলাম। টেলিস্কোপ দিয়ে দেখলাম তিব্বতের পতাকা ঘেরা সীমারেখাও। তার পরে গেলাম চা বাগানে। চায়ের চাষ অল্পই হয়। পাহাড়ের ধাপে ধাপে পাথর কেটে চলছে চাষ। মেয়েরা চা পাতা সংগ্রহ করছে। পাশেই চা তৈরির কারখানাও।
পথ চলতেই চলতেই চোখে পড়ল সরিতাতাল জলপ্রপাত। কোথা থেকে আসছে জানি না। তবে রাস্তার উপরে আছড়ে আশপাশ ভিজিয়ে মনের আনন্দে চলেছে এগিয়ে। এখানকার সব মন্দিরেই প্রচুর ঘণ্টা বাঁধা। কোথাও আবার ঘণ্টার মালা করে রাখা। তৃতীয় দিনে ভীমতাল, সাততাল এ রকম অসংখ্য ছোট বড় তাল দেখে গেলাম হাইরা খান বাবার মন্দিরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, তিনি ছিলেন সিদ্ধপুরুষ। আশ্রম ও মন্দিরে বেশ শান্ত ও মনোরম পরিবেশ। শহর থেকে বেশ দূরে পাইন গাছের জঙ্গলের মধ্যে এই স্থান।
অচিরেই ছুটি ফুরোল। অপূর্ব সব দৃশ্য মনের মণিকোঠায় ভরে পরের দিন চললাম বাড়ির দিকে।

পুজো এক্সপ্রেস
আনন্দবাজার পত্রিকা,
এ ১০, ডক্টরস কলোনি, সিটি সেন্টার,
দুর্গাপুর - ৭১৩২১৬।

durgapuredit@abp.in
(লেখা নির্বাচনে সম্পাদকীয় বিভাগের বিবেচনাই চূড়ান্ত)



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.