|
|
|
|
|
|
|
৩ ডিসেম্বর ১৩০ তম জন্মদিন |
অন্য নন্দলাল |
অজন্তা ও বাগ গুহার চিত্রাবলি থেকে শুরু করে সাঁওতালদের তৈরি মাটির পাত্র ও তালপাতার বাঁশি পর্যন্ত যে বস্তুতেই তিনি যে রকম সৌন্দর্যের প্রকাশ দেখেছেন, তা-ই ছিল তাঁর কাছে পরম আদরের।’ (ইন্দিরা গাঁধী)। বহু বছর পর হিন্দুস্তান পার্কের আকার প্রকার আর্ট গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে আচার্য নন্দলাল বসুর অন্য রকম ছবির প্রদর্শনী ‘পোস্টকার্ডস অব নন্দলাল বোস’। প্রদর্শনীটির কিউরেটর দেবদত্ত গুপ্ত। নন্দলাল একটা দীর্ঘ সময় ধরে কাছের মানুষদের চিঠি লিখলেই তাকে ভরিয়ে দিতেন ছবি দিয়ে। বাগ ও অজন্তার শিল্পী নন্দলাল থেকে পোস্টকার্ডের নন্দলাল একেবারেই পৃথক।
রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন,
‘ছবি আঁকার মানুষ ওগো পথিক চিরকেলে,
চলছ তুমি আশেপাশে দৃষ্টির জাল ফেলে।
পথচলা সেই দেখাগুলো লাইন দিয়ে এঁকে
পাঠিয়ে দিলে দেশ-বিদেশের থেকে।’
|
|
এই ছবিগুলি ক্ষুদ্র পরিসরে বিশালত্বকে তুলে ধরবার অসামান্য নিদর্শন। জামাতা সন্তোষকুমার ভঞ্জকে হাজারিবাগ থেকে চিঠিতে এঁকে পাঠিয়েছেন সেখানকার মৃৎশিল্পীদের জীবন। কন্যা গৌরীদেবীকে, নাতি প্রদ্যোত ভঞ্জ ও কন্যা যমুনাদেবীর পুত্র সুপ্রবুব্ধ সেনকেও পাঠিয়েছেন এমন বহু ছবি। গৌরীদেবী ও যমুনাদেবীর পরিবার এগিয়ে এসেছেন প্রদর্শনীর সহায়তায়। প্রদ্যোত ভঞ্জ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে দিয়েছেন জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর ‘টাক ডুমা ডুম ডুম’-এর জন্য নন্দলাল বসু অঙ্কিত সমস্ত মূল রঙিন অলংকরণ (সঙ্গে ডান দিকে তারই একটি) ও অসংখ্য দুর্লভ আলোকচিত্র। নন্দবাবুর ছাত্রদের মধ্যে মণীন্দ্রভূষণ গুপ্ত, ইন্দুভূষণ রক্ষিত, প্রভাতমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ননীগোপাল ঘোষের পরিবারের কাছ থেকে ছবি এসেছে। সাহায্য করেছেন সোমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনাথনাথ দাস ও সুশোভন অধিকারী। প্রদর্শনী চলবে ডিসেম্বরের ৫-২৪, ৬ ডিসেম্বর রয়েছে ‘নন্দবাবুকে ফিরে দেখা’ শীর্ষক আলোচনা। এ দিকে উত্তরপাড়া বেঙ্গল স্টুডিয়োয় নন্দলাল বসুর ১৩০টি রেখাচিত্রের প্রতিলিপি নিয়ে প্রদর্শনী ‘চির সুন্দরের রেখাচিত্র’ ৩-১৫ ডিসেম্বর। ভাবনা ও সংকলন অরিন্দম সাহা সর্দারের। প্রকাশিত হবে ছবিগুলির একটি ডিভিডিও।
|
গণদেবতা |
এ শহরে শখের সংগ্রাহকের সংখ্যা কম নয়, কিন্তু আমরা ক’জন সে খবর রাখি? বিশিষ্ট অভিনেতা বসন্ত চৌধুরির শখ ছিল গণেশমূর্তি সংগ্রহের। মৃত্যুর আগে ২০০০-এ প্রায় একশো গণেশমূর্তির এই সংগ্রহ তিনি দান করে যান ভারতীয় সংগ্রহালয়ে। সে সংগ্রহই এ বার দর্শকদের সামনে উপস্থিত হচ্ছে আশুতোষ শতবার্ষিকী হলে। ১ ডিসেম্বর ‘গণেশ’ শীর্ষক এই প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর সরকার, সকাল ১১টায়। এ দিন প্রকাশ পাবে ‘গণদেবতা’ শীর্ষক সচিত্র ক্যাটালগ। এতে গণেশ মূর্তির ইতিহাস, পুরাণ ও বিবর্তন নিয়ে কলম ধরেছেন সংগ্রহালয়ের প্রাক্তন অধিকর্তা শ্যামলকান্তি চক্রবর্তী, সঙ্গে শিপ্রা চক্রবর্তী। থাকছে সংগ্রাহক হিসেবে বসন্তবাবুর অভিজ্ঞতার কথাও। বই প্রকাশের পর ‘গণেশ: মূর্তিচিন্তা’ নিয়ে বলবেন শ্যামলবাবু। সংগ্রহশালার ভাঁড়ারে জমে থাকা শিল্পবস্তু সাধারণের সামনে নিয়ে আসাই মূল লক্ষ্য, জানালেন বর্তমান অধিকর্তা অনুপ মতিলাল। প্রদর্শনী চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ১১-৫টা প্রতিদিন। সঙ্গে পোর্সেলিনের গণেশমূর্তি, প্রদর্শনী থেকে।
|
|
ব্রাত্যজন |
‘‘আমি ব্রাত্য বসু, এখন নতুন থিয়েটার করছি না, আশা রাখছি একদিন আবার করব। কিন্তু এই যে থিয়েটার করছি না, ফলে খোলা মনে অনেক কথা বলতে পারছি। আমি জানি থিয়েটারের বহু মানুষ আছেন, যারা এসব পড়ে আমাকে গালি দেবেন যেমন, তেমনই অনেকে আমাকে সমর্থনও করবেন। আর আমি ওই সমর্থন চাইছি। সরব হোক বা নীরব আমি চাইছি। কারণ ‘দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি’।’’ ব্রাত্যজন নাট্যপত্র-এর তৃতীয় সংখ্যার (নভেম্বর ’১১) সম্পাদকীয়তে লিখেছেন সম্পাদক। প্রায় সাড়ে ছশো পাতার এই নাট্যপত্রে প্রবন্ধ, নাটক, অনুবাদ নাটক, ‘ইচ্ছে’র চিত্রনাট্য, বিবিধ। আছে দুটি ক্রোড়পত্রও, ক্যানভাসার ও ব্যোমকেশ নাটক দুটি নিয়ে একটি আর মনোজ মিত্রকে নিয়ে আর একটি। মনোজ মিত্রের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ব্রাত্য। জানালেন, নাট্যপত্রের পাশাপাশি এই বইমেলায় ব্রাত্যজন প্রকাশ করবে তিনটি বইও, একটি ব্রডওয়ে থিয়েটার নিয়ে, লিখেছেন শোভন গুপ্ত, দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের লেখা পল্টুদা বলেন যা এবং নাট্যের নানা দিক নিয়ে আর একটি।
|
শিবচন্দ্র |
সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজের প্রথম সম্পাদক শিবচন্দ্র দেব ছিলেন মহর্ষির চেয়ে ৬ বছর, আর কেশবচন্দ্রের চাইতে ২৭ বছরের বড়। দু’দফায় সমাজের ভাঙন নিয়ে এঁদের সঙ্গে মতান্তর ঘটলেও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক কিন্তু বজায় ছিল। আর ন’বছরের ছোট বিদ্যাসাগরও শিবচন্দ্রকে খুবই সম্মান করতেন। এই মানুষটির জন্মের দু’শো বছর পার হল গত ২০ জুলাই। শিবচন্দ্র স্বগ্রাম কোন্নগরের উন্নতিতেও আত্মনিয়োগ করেছিলেন। কৃতজ্ঞ কোন্নগরবাসী শিবচন্দ্রের জন্মদ্বিশতবর্ষ উদ্যাপনে পুনঃপ্রকাশ করেছেন তাঁর দুষ্প্রাপ্য জীবনকথা, আর সেই সঙ্গে সংক্ষিপ্ত জীবনী। শিবচন্দ্রের জীবনকাল (১৮১১-১৮৯০) গোটা ঊনবিংশ শতাব্দী জুড়ে। তাই এ বার শ্রদ্ধার্ঘ্যস্বরূপ প্রকাশ পাচ্ছে উনিশ শতকের বাংলা নামে একটি সংকলন গ্রন্থ (পারুল)। অলোক রায় ও গৌতম নিয়োগী সম্পাদিত প্রায় চারশো পাতার এই গ্রন্থে রয়েছে উনিশটি নিবন্ধ। নিশীথরঞ্জন রায়ের শিবচন্দ্রের ওপর একটি অপ্রকাশিত মূল্যায়ন ছাড়া নবীন ও প্রবীণ গবেষকদের লেখায় সমৃদ্ধ বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ২৮ নভেম্বর বিকেল ৬টায়, জীবনানন্দ সভাঘরে। থাকবেন অমলেন্দু দে ও অন্য বিশিষ্টজন।
|
নতুন সৃষ্টি |
পুরুষদের সাজের একঘেয়ে ধুতি, পঞ্জাবি, শার্ট, ট্রাউজারের জগতে তাঁর শিল্পভাবনা নিয়ে এসেছিল আধুনিকতার ছোঁয়া। এই শহরের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গার পুরুষেরা সেজেছেন সে সব পোশাকে। তাঁরই হাত ধরে ধীরে ধীরে ফ্যাশন জগতে এসেছে পুরুষদের জন্য নানা অ্যাক্সেসরিজও। শর্বরী দত্তের সে সব শিল্পসংগ্রহ দেখে শুধু অল্পবয়সীরাই নন, নিজেদের জন্য ডিজাইনার সাজ বেছে নিয়েছেন মধ্যবয়স্ক ভারতীয় পুরুষও। তাঁর কাজের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের শিল্পকলা উঠে এসেছে এ দেশের ফ্যাশন জগতে। এই বছর পূর্ণ হল পুরুষ ফ্যাশন জগতের সেই পথ প্রদর্শকের কর্মজীবনের দুই দশক। সে উপলক্ষে সম্প্রতি এক ফ্যাশন শো-এ শহর দেখল শর্বরী দত্তের কিছু নতুন সৃষ্টি।
|
আল আমীন বার্তা |
পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম সমাজে আধুনিক শিক্ষার প্রসারে ‘আল আমীন মিশন’-এর ভূমিকা প্রশ্নাতীত। গত ২৬ বছর ধরে পিছিয়ে পড়া একটা সমাজের বহু ছেলেমেয়ে সেখানে পড়াশোনা করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। আধুনিক শিক্ষা ও চিন্তার প্রসারে মিশনের এই উদ্যোগ মুসলমান সমাজকে নতুন আত্মবিশ্বাসে উত্তীর্ণ করছে। মিশনের কর্ণধার নুরুল ইসলাম মনে করেন, সরকার বা কোনও রাজনৈতিক দল বা কোনও সম্প্রদায়কে দায়ী না করে, পিছিয়ে পড়া সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নিজেদের উদ্যোগী হতে হবে। ‘যে সম্প্রদায় নিজেদের উন্নতির চেষ্টা করে না, আল্লাহ্ তাদের উন্নতি করে না।’কোরানের এই বাণী তাঁর প্রেরণা। মুসলমানের এই শিক্ষা অভিযাত্রায় শামিল হল নতুন ত্রৈমাসিক ‘আল আমীন বার্তা’। পত্রিকাটি সুসম্পাদিত, ঝকঝকে ছাপা। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সাহিত্য চর্চায় বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য মুসলিম ব্যক্তিত্বের বিস্তারিত পরিচিতি, উজ্জ্বল প্রাক্তনীদের কথা, মিশনের বিভিন্ন ক্যাম্পাস-সংগঠনের খবরাখবর ছাড়াও নানা লেখা থাকছে।
|
বাংলা গান |
একদা ‘ধ্রুবপদ’ পত্রিকার বাংলা গান সংক্রান্ত সংখ্যাটি অবলম্বনে সুধীর চক্রবর্তীর সম্পাদনায় সম্পূর্ণ নতুন বিন্যাসে একটি নতুন বই বেরল: বাংলা গান/অদীন ভুবন (কারিগর)। বইটির চারটি অধ্যায়ে আঠারোটি লেখা। প্রথম পর্বে এগারোটি নিবন্ধ, যার মধ্যে দু’টি আগে প্রকাশিত, কিন্তু নবরূপে পুনর্বিন্যস্ত। দ্বিতীয় পর্বে চারটি ও তৃতীয় পর্বে নজরুল সম্পর্কিত দু’টি পুনর্মুদ্রণ, চতুর্থ পর্বে সম্পাদকের নেওয়া শঙ্খ ঘোষের লিখিত সাক্ষাৎকার। রচনাদির একটি লেখায় সুমন চট্টোপাধ্যায় (কবির সুমন) জানাচ্ছেন, ‘তিরিশোত্তর বাংলা আধুনিক গানে সুরের ক্ষেত্রে যে অসাধারণ সৃজনশীল কাজ হয়েছে, তা যে-কোনও জাতির গর্বের বিষয় হওয়া উচিত।’ সোমনাথ ঘোষের প্রচ্ছদ আর সুব্রত চৌধুরীর অলংকরণ বইটির অঙ্গসজ্জায় অভিনবত্ব এনেছে, সঙ্গে শোভন মুদ্রণ। বইটি ‘এ দেশের সংগীত-সংস্কৃতিতে এক প্রয়োজনীয় সংযোজন বলে বিবেচিত হবে বিশ্বাস করি।’ সম্পাদক জানিয়েছেন তাঁর আত্মপক্ষ-এ। |
নিধুবাবুর গান |
কানু ছাড়া যেমন গীত নাই, নিধুবাবু ছাড়া তেমনই টপ্পা নেই। সংগীতরসিক প্রবীণেরা প্রায় সকলেই নিশ্চয় স্বীকার করবেন এ কথা। আর বাংলা সংগীতে টপ্পার সেই কিংবদন্তি রামনিধি গুপ্তের গান এ বার তাঁর জীবনের পাঠ-অভিনয়ের সঙ্গে। ভাবনা, উপস্থাপনা ও গানে ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়, নিধুবাবুর ভূমিকায় সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, ‘শ্রীমতী’ কাঞ্চনা মৈত্র এবং নিধুবাবুর জীবনের গল্প বলবেন রায়া ভট্টাচার্য। গানের সঙ্গে এই জীবন-পাঠ আগামিকাল, মঙ্গলবার বিড়লা অ্যাকাডেমিতে সন্ধে সাড়ে ছটায়।
|
প্রয়াণ |
ষাটের দশকের গোড়ায় কলকাতার এক ইংরেজি দৈনিকে স্বাধীনতা সংক্রান্ত একটি নিবন্ধ নজর কেড়েছিল অনেকেরই। লেখা পড়ে উৎসাহ দেন কলেজের বিশিষ্ট শিক্ষকরা। সেই থেকে সুদীর্ঘকাল নিজেকে ইতিহাস চর্চায় নিয়োজিত রেখেছিলেন লাডলিমোহন রায়চৌধুরী। কলকাতায় ১৯৪০-এর ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্ম। বাবা পরিতোষ, মা অপর্ণা। মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন ও প্রেসিডেন্সি কলেজের ইতিহাসের এই ছাত্রটি শিক্ষক হিসাবে পেয়েছিলেন সুশোভন সরকার, ত্রিপুরারি চক্রবর্তীকে। লাডলিমোহন সরকারি কলেজে অধ্যাপনার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে ইন্দিরা গাঁধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য লেখ্যাগার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদের অধিকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। লেখ্যাগার থেকে নানা নথি উদ্ধার করে বহু প্রবন্ধ ও গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি। গোয়েন্দা রিপোর্টে রাজনৈতিক সাধু ও রামকৃষ্ণ মিশন, আজাদ হিন্দ ফৌজের কোর্টমার্শাল ও গণবিক্ষোভ, শিকল ভাঙ্গার গান, ক্ষমতা হস্তান্তর ও দেশবিভাগ, কুইট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট ১৯৪২: আ কালেকশন অব ডকুমেন্টস ইত্যাদি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বই। প্রয়াত হলেন সম্প্রতি, রেখে গেলেন গ্রন্থ ও মূল্যবান নথিপত্রের সংগ্রহ। স্ত্রী ছবি দেবী আর কন্যা নৈরঞ্জনা তা রক্ষা করছেন ভবিষ্যৎ গবেষকদের স্বার্থে।
|
শূন্যতার আখ্যান |
এই সব ছবিতে আছে শূন্যতার বিচিত্র আখ্যান। সিগাল ফাউন্ডেশন ফর দ্য আর্টস এবং তসবির-এর যৌথ আয়োজনে স্বপন নায়কের সাম্প্রতিক প্রদর্শনী ‘বিইং অ্যান্ড নাথিংনেস’ আসলে থাকা এবং না-থাকার মাঝখানে একটি অদ্ভুত দোলাচল। চৌকোনা চিত্রপটে অনেকখানি শূন্যতা। কখনও আকাশ, কখনও বা ভূমি। সেই সব পটে যেন হঠাৎই আঁচড় কেটেছে এক-একটি অবজেক্ট। পাখি। হাতগাড়ি। রাস্তার দাগ। গাছ। কখনও আবার মানুষ। সুখ্যাত এই চিত্রসাংবাদিক আলোকচিত্রী হিসাবে জাতীয় বৃত্তিতে সম্মানিত। এ বার তাঁর ছবিতে কবিতার আভা। ‘মাঝে মাঝে এক-একটা জায়গায় গিয়ে কিছু দিন থাকতাম, ঘোর লাগত যেন, তা থেকেই এই সব ফ্রেম’, জানালেন স্বপন। ‘সিগাল আর্টস অ্যান্ড মিডিয়া রিসোর্স সেন্টার’-এ আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত (২-৮টা) চলবে প্রদর্শনী। সঙ্গে তারই একটি ছবি। এ দিকে স্পেক্ট্রাম আর্টিস্টস সার্কল-এর ৩৬তম প্রদর্শনী দেখা যাবে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের এই প্রদর্শনীতে আছেন ১০ জন শিল্পী।
|
শ্রুতিতে চৌরঙ্গী |
শংকরের চৌরঙ্গী পঞ্চাশে পড়ছে এ বছর। আর এই সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলা সাহিত্যের পক্ষে সুখবর, জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা উপন্যাসটি শ্রুতিতে স্থান পেতে চলেছে বিবিসি রেডিওয়। আগামী বছরের মার্চেই চৌরঙ্গী শোনা যাবে বিবিসি রেডিয়োর চ্যানেল থ্রি-তে। খবরটি একেবারে ঘোড়ার মুখের, জানাচ্ছেন এই শ্রুতি-চৌরঙ্গীর শংকর জয় সেনগুপ্ত। চতুরঙ্গ-এর বিশ্রী এ বার শংকর। কেমন লাগছে ইব্রাহিম আলকাজির সুযোগ্য শিষ্যটির? ‘‘বিবিসি-তে কাজ করাটা খুব ইন্টারেস্টিং। আমাদের ঔপনিবেশিক জীবনের টুকরোগুলো খুব গভীরে গিয়ে ধরতে চান ওঁরা।’’ জয় এর আগে বিবিসি-র জন্যই করেছেন শূদ্রকের ‘মৃচ্ছকটিকম্’ এবং বিক্রম শেঠের ‘আ সুটেবল বয়’। আর এর পরে পর্দায় দেখা যাবে তাঁকে, দুটি বাংলা ছবিতে। সৌগত রায়বর্মনের ‘তবে তাই হোক’ আর পার্থ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পথঘাট’। |
|
|
|
মহাস্থবির |
ছবিটি পরিমল গোস্বামীর তোলা,
হিমানীশ গোস্বামীর সৌজন্যে। |
বাড়ি থেকে পালিয়ে বোম্বাইয়ে। তার পর নানা ঘাট ঘুরে এ শহরের এক খেলার সরঞ্জামের দোকানে চাকরি। কিন্তু মনের মধ্যে ছিল ছবি করার ইচ্ছে। প্রথমে লাহৌরের এক চলচ্চিত্র-প্রতিষ্ঠানে এবং পরে নিউ থিয়েটার্স লিমিটেডে পরিচালক। বাংলা সাহিত্যের ‘মহাস্থবির’ এ ভাবেই পরিচালনা করেছেন বেশ কয়েকটি ছবি কপালকুণ্ডলা, সরলা, ইহুদি-কি-লেড়কি, সুধার প্রেম ইত্যাদি। নিজে খুব কাছে থেকে যে জগৎকে দেখেছিলেন তার কথা লিখেওছিলেন প্রেমাঙ্কুর আতর্থী (১৮৯০-১৯৬৪)। ‘তখনকার দিনে অর্থাৎ নির্বাক ছবির যুগে ছবি তোলায় অনেকরকম হাঙ্গামা ছিল যা এখন নেই... বোম্বাইয়ে যখন প্রথম যাই, তখন সেখানকার স্টুডিয়ো-মালিকদের বলেছিলাম, আসল শুটিং করবার আগে আমি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়ে দিন কয়েক এক রিহার্সাল করতে চাই। আমার কথা শুনে তারা হেসে উঠেছিল। বলেছিল, বাংলা দেশের ওসব চাল বোম্বাইয়ে চলবে না’। পিতা মহেশচন্দ্র ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের প্রচারক, ‘আদর্শ পুরুষ’ গ্রন্থের রচয়িতা। প্রেমাঙ্কুর প্রথাগত উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত না হলেও নিজের চেষ্টায় নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন। ১৯৫০-’৫১-য় ‘সাপ্তাহিক বসুমতী’ পত্রিকায় ধারাবাহিক লিখেছিলেন ‘নির্বাক যুগের ছায়ালোকের কথা’। তারই এক সটীক সচিত্র সংস্করণ প্রকাশিত হল (অরুণা প্রকাশন)। বইটিতে বিস্তারিত টীকা করেছেন সৌম্যেন পাল ও প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত। |
|
|
|
|
|
|
|