১৫ দিনে ৩৪ শিশুর মৃত্যু, হাসপাতাল দেখে ক্ষুব্ধ কমিশন
মালদহ সদর হাসপাতালে একের পরে এক শিশু মৃত্যু কেন হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন জাতীয় শিশু আধিকার সুরক্ষা কমিশনের সদস্যরা ( ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রটেকশন অফ চাইল্ড রাইট)। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রায় ৪ ঘন্টা ধরে কমিশনের সদস্য বিনোদকুমার টিকোর নেতৃত্বে ৫ জনের সদস্য মালদহ সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগ থেকে শুরু করে প্রসূতি বিভাগ, লেবার রুম ঘুরে দেখেন। শিশু বিভাগের ভিতরে অসুস্থ শিশুদের সঙ্গে একই বেডে তাদের পরিবারের একাধিক লোকেরা থাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন কমিশনের সদস্য বিনোদকুমার টিকো। তিনি প্রকাশ্যেই বলেন, “এটা হাসপাতাল না হাট! শিশু বিভাগে যত লোক ভিড় জমিয়েছেন, তাতে তো শিশুরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে। এই পরিবেশে শিশু মৃত্যু তো হবেই।”
ওয়ার্ড ঘুরে দেখার পর সাংবাদিকদের বিনোদ কুমার টিকো বলেন, “মালদহ সদর হাসপাতালে যা পরিস্থিতি দেখলাম তাতে আমি খুবই মমার্হত। শিশু বিভাগের যা পরিস্থিতি তাতে অসুস্থ শিশুদের বাঁচানো খুবই কষ্টকর। হাসপাতালে শিশুদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মালদহ সদর হাসপাতালের এই অবস্থার বিষয়টি কমিশনের চেয়ারম্যানকে রিপোর্ট করা হবে।” এদিকে, কমিশনের সদস্যরা হাসপাতালে ঢোকার কিছুক্ষণ আগে বৃহস্পতিবার ভোররাতে শিশু বিভাগে ম্যালিগনেন্ট এনসেফ্যালাইটিসে ৭ বছরের সমিত মণ্ডল নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। এই নিয়ে ৯ নভেম্বর থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ৩৪টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
মালদহ সদর হাসপাতালে বিনোদকুমার টিকো। বৃহস্পতিবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
হাসপাতালের শিশুবিভাগে থেকে লেবার রুমে চূড়ান্ত অব্যবস্থার জন্য অপযার্প্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীকে দায়ী করেন জেলা সদর হাসপাতালের সুপার থেকে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। সদর হাসপাতালের সুপার হিমাদ্রি আড়ি কমিশনের সদস্যদের বলেন, “সদর হাসপাতালে ১০০ জনের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী নেই। ৪৫ জন নার্স নেই। ১০ জনের বেশি চিকিৎসক নেই। পাশাপাশি হাসপাতালে কোন নিরাপত্তা কর্মী নেই। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী চেয়ে বহুবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু কিছুই পাচ্ছি না। হাসপাতালে কোনও নিরাপত্তা রক্ষী না থাকায় যে কেউ যখন তখন হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। বাধা দিলেই রুগীর আত্মীয়েরা গালি দিচ্ছে। চিকিৎসকদের হেনস্থা করছে।” কেন শিশু বিভাগে পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে? কেন শিশুদের সঠিক পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না? কমিশনের সদস্যরা হাসপাতালের শিশু বিভাগের কতর্ব্যরত নার্স, শিশু বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে লিখিত নেন। শিশু বিভাগে সাধারণ ওয়ার্ডে কেন পেয়িং বেডের তালিকা টাঙানো হয়েছে তা নিয়ে কমিশনের সদস্য বিনোদ কুমার টিকো সদর হাসপাতালের সুপারের কাছে কৈফিয়ত চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেন নি। পরে কমিশনের সদস্য সদর হাসপাতালের সুপারকে দ্রুত তালিকা ওয়ার্ড থেকে খুলে ফেলার নির্দেশ দেন। সদর হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর পাশাপাশি জেলায় শিশু পাচার, শিশু শিক্ষা ও শিশু শ্রম নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনের সদস্যরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.