‘অনুপস্থিত’ বুদ্ধকে নিয়ে যাদবপুরের সম্মেলনেই প্রশ্ন
দীর্ঘ দিন যে এলাকার বিধায়ক ছিলেন তিনি, সেই যাদবপুরেই দলের নিচু তলার সম্মেলনে প্রশ্ন উঠল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে। ভোটে হেরে যাওয়ার পরে কেন আর যাদবপুরে আসেননি বুদ্ধবাবু, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। পলিটব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক কেন বারবার এড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন সিপিএমের নিচু তলার কর্মীরা। সিপিএম সূত্রের খবর, যাদবপুর মধ্য-১ নম্বর লোকাল কমিটির সদ্যসমাপ্ত সম্মেলনে রাজাপুর এলাকার এক দলীয় সদস্য প্রশ্ন তুলেছেন বুদ্ধবাবুর যাদবপুর ‘এড়িয়ে চলা’ নিয়ে। সম্মেলনে ওই সদস্যের বক্তব্য ছিল, নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পরে বুদ্ধবাবু আর কোনও দিন যাদবপুরে এলেন না। তা হলে কি উনি এত দিন নির্বাচনের জন্যই যাদবপুর কেন্দ্রে আসতেন? নির্বাচনের পরে যাদবপুর বিধানসভা এলাকায় সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা বিরোধী দলের হাতে নানা ভাবে ‘আক্রান্ত’ হচ্ছেন। অথচ ‘দুঃসময়ে’ দলীয় সদস্যদের পাশে থাকলেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
শুধু যাদবপুরই নয়, বুদ্ধবাবু কেন পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে যাচ্ছেন না, সেই বিষয়ও প্রশ্ন তুলেছেন কিছু সদস্য। তাঁদের বক্তব্য, দলের কেন্দ্রীয় স্তরের বৈঠকে বুদ্ধবাবুর না-যাওয়ার বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে স্পষ্ট হওয়া উচিত। তাঁরা ‘বিভ্রান্ত’ হচ্ছেন। একই অবস্থা হচ্ছে দলের নিচু তলার কর্মীদের। বিধানসভা নির্বাচনে দলের পরাজয়ের পর থেকে কলকাতার বাইরে পলিটব্যুরো বা কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে যাননি বুদ্ধবাবু। সিপিএমের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে বলা হয়েছে, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার জন্যই পলিটব্যুরোর সদস্য বুদ্ধবাবু বিমানে বা ট্রেনে লম্বা সফর করে কলকাতার বাইরে বৈঠকে যোগ দিতে যেতে পারছেন না। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্তরের বৈঠকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে দলের নিচু তলায় চর্চা হচ্ছিলই। খাস যাদবপুরেই সম্মেলন পর্বে তার প্রতিফলন ঘটল। ওই সম্মেলনে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর ‘অসংযত’ কথা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। কয়েক জনের অভিমত, সংবাদমাধ্যমে রাজ্য সম্পাদক এমন সব উক্তি করছেন, যা মানুষ ভাল ভাবে নিচ্ছেন না। মানুষের কাছে নিচু তলার কর্মীদের ‘জবাবদিহি’ করতে হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এর আগে বিরাটির একটি লোকাল কমিটির সম্মেলনে বিমানবাবুর মন্তব্যের প্রতিবাদে ‘নিন্দা প্রস্তাব’ নেওয়া হয়েছিল।
যাদবপুর এলাকায় দলের ভরাডুবির জন্য সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য খোকন ও চন্দনা ঘোষ দস্তিদারের কার্যকলাপকে দায়ী করে কিছু সদস্য অভিযোগ করেন, দলীয় ক্ষমতায় বলীয়ান হয়ে ওই নেতা-নেত্রী দম্পতি নানা ‘অনৈতিক’ কাজ করেছেন। বুদ্ধবাবুর ‘স্বচ্ছ’ ভাবমূর্তি থাকা সত্ত্বেও মানুষ খোকনবাবু-সহ কয়েক জন নেতার আচরণে তিতিবিরক্ত হয়ে বিরোধীদের ভোট দিয়েছেন। সম্মেলনে উপস্থিত জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর দুই সদস্য খোকনবাবু ও বটকৃষ্ণ রায়কে ‘কটূক্তি’ও করা হয়। কয়েক সপ্তাহ আগে যাদবপুর-১ জোনাল কমিটির সম্পাদক তথা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য স্বপন (সমরেন্দ্র) রায়কে দলের সব পদ থেকে অপসারিত করেছে জেলা সিপিএম। যাদবপুর মধ্য-১ লোকাল সম্মেলনে কয়েক জন স্বপনবাবু ও খোকনবাবুর কার্যকলাপ নিয়ে সরব হয়েছেন। এমনকী, যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা, প্রাক্তন এক মন্ত্রীর ‘প্রশ্রয়ে’ ওই দুই নেতা ‘যথেচ্ছাচার’ চালিয়েছে বলে কয়েক জন সদস্যের অভিযোগ। জেলা সিপিএমের একাংশের মতে, প্রাক্তন মন্ত্রী বলতে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে উদ্দেশ করেই অভিযোগ উঠেছে। তিনি যাদবপুর বিধানসভার বাসিন্দা। এক সময় খোকনবাবু ও স্বপনবাবু ছিলেন কান্তিবাবুর ‘ঘনিষ্ঠ’। ‘তপ্ত’ আলোচনার পরে প্রস্তাবিত নতুন কমিটির তালিকাও অস্বীকার করেন অধিকাংশ সদস্য। প্রোমোটারি ও ইমারতী দ্রব্যের ব্যবসায় জড়িত এমন ক’জনের নাম তালিকায় আছে বলে অভিযোগ তুলে প্রস্তাব নাকচ করেন তাঁরা। তালিকা নিয়ে ফের কথা হবে বলে জেলা সিপিএম সূত্রের খবর।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.