|
|
|
|
তৃণমূল আমলেও পুলিশের খাতায় নাম সাউদের |
সৌমেন দত্ত • কাটোয়া |
শুধু সিপিএমের আমলে নয়, রাজ্যে ক্ষমতার হাতবদলের পরেও জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে কেতুগ্রামের তৃণমূল নেতা সাউদ মিঞার বিরুদ্ধে। বোমা বানানোর অভিযোগে গত ৩১ অক্টোবর পুলিশ নিজেই সেই মামলা রুজু করেছে। তবে তা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি।
গত বছর দুই সিপিএম কর্মী ও এক ডিওয়াইএফ কর্মী খুনে অভিযুক্ত সাউদ। কিন্তু ‘সিপিএমের পুলিশ’ মিথ্যা মামলায় সাউদকে ফাঁসিয়েছিল বলে তৃণমূল নেতারা দাবি করেন। গত রবিবার বর্ধমানের কেতুগ্রামে পুলিশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে তৃণমূল যে জনসভা করে, সেখানে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের পাশে সাউদও মঞ্চে হাজির ছিলেন। বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কেতুগ্রামের দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁকে বারবার কথা বলতেও দেখা যায়। কিন্তু পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেনি।
পরের দিন আনন্দবাজার পত্রিকায় এই সংবাদ প্রকাশের পরেই চন্দ্রনাথবাবুরা মহাকরণে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (পুলিশ তাঁরই দায়িত্বে) সঙ্গে দেখা করেন। পরে চন্দ্রনাথবাবু দাবি করেন, সাউদ আদৌ দুষ্কৃতী নন। বরং ভাল কাজ করছেন। মুখ্যমন্ত্রীকেও তাঁরা সে কথাই জানিয়েছেন। অনুব্রতবাবু দাবি করেন, “সিপিএম নেতারা থানায় বসে পুলিশের সহযোগিতায় মিথ্যা অভিযোগ করত।” তাঁর মতে, সাউদও তেমনই ষড়যন্ত্রের শিকার। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ফিরে কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ বলেন, “যত দিন ফয়সালা না হচ্ছে ওর লুকিয়ে থাকাই ভাল।”
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৩১ অক্টোবর কেতুগ্রামের কোমরপুর হাটতলায় একটি ক্লিনিক থেকে প্লাস্টিকের প্যাকেটে ৪টি বোমা উদ্ধার হয়। ক্লিনিকের মালিক রামপ্রসাদ রায়কে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় তিনি জানান, সাউদ-সহ ছ’জন বোমা তৈরির জন্য জড়ো হয়েছিল। পুলিশের গাড়ি দেখে তারা পালিয়ে যায়। এর পরেই পুষ্পেন্দু জানা নামে কেতুগ্রাম থানার এক পুলিশকর্মী ছ’জনের বিরুদ্ধেই বোমা তৈরি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ (কেস নং ২৮৫/১১, তারিখ ৩১-১০-২০১১) দায়ের করেন। কেস ডায়েরিতে তিনি লিখেছেন, ক্লিনিকে বোমা থাকার খবর পেয়েই সে দিন তাঁরা তল্লাশিতে গিয়েছিলেন (জিডি নং ১১০৯)। প্রাথমিক প্রমাণ মেলায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৮৬ ও ১২০বি ধারা এবং বিস্ফোরক আইনের ৩/৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূল নেতারা এখন এ ওর দিকে বল ঠেলছেন। এ দিন চন্দ্রনাথবাবু বলেন, “আমি তো পুরো বিষয়টি জানি না। অনুব্রত মণ্ডল জানেন। তাঁকেই জিজ্ঞাসা করুন।” অনুব্রতবাবুর প্রতিক্রিয়া, “পুলিশ কী বলছে, তাতে কী এসে গেল!” তবে কি পুলিশ মিথ্যা অভিযোগ করেছে? অনুব্রতবাবুর জবাব, “এলাকার বিধায়কের সঙ্গে কথা বলুন।” বিধায়ক
শেখ সাহানেওয়াজের মতে, “পুলিশ তো এ রকম অনেককেই ধরছে। এটুকু বলতে পারি, বোমা বানানো কাকে বলে সেটাই সাউদ জানে না।”
সাউদ নিজেও দাবি করেছেন, “৩১ অক্টোবর আমি এলাকায় ছিলাম না। পুলিশ কেন আমাকে ফাঁসাচ্ছে বুঝতে পারছি না।” বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “আমরা পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছি। সাউদের খোঁজ চলছে।” |
|
|
|
|
|