|
|
|
|
পরিবেশ ও সৌন্দর্য রক্ষায় সরবে হোর্ডিং |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শহরের সৌন্দর্যায়নের লক্ষ্যে রাজ্যের সব নদী-জলাশয় এবং পার্কের সামনে থেকে সমস্ত হোর্ডিং সরিয়ে ফেলতে বলল রাজ্য সরকার। ওই সব হোর্ডিংয়ের মধ্যে যেগুলি বেআইনি, সেগুলি ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই ভাঙা হবে বলে মঙ্গলবার জানান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ওই সব চত্বরে হোর্ডিং লাগানোর বৈধ লাইসেন্স রয়েছে যাদের, তাদেরও আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে হোর্ডিং সরিয়ে নিতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি, সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে গঙ্গার পাড়ে কংক্রিটের পায়ে-চলা পথ তৈরির বিষয়ে বিষয়ে প্রতিরক্ষা দফতরের অনুমতি এখনও মেলেনি বলেও এ দিন জানিয়েছেন পুরমন্ত্রী।
পুরমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ দিন গঙ্গাবক্ষে নগর সৌন্দর্যায়ন কমিটির বৈঠক বসে। ফিরহাদ পরে জানান, সারা রাজ্যেই নদী-জলাশয় ও পার্কের সামনে থেকে হোর্ডিং সরানোর এই নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেআইনি হোর্ডিংগুলি ভেঙে দেবে সংশ্লিষ্ট পুরসভা, কেএমডিএ এবং মৎস্য দফতর। বাইপাসের ধারে ক্যাপ্টেন ভেড়িও এর আওতায় পড়বে বলে এক সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
মন্ত্রী জানান, নদী, জলাশয় বা পার্কের মুখ ঢেকে দিচ্ছে হোর্ডিং। সেগুলি সরানো হলে এক দিকে যেমন ওই সব পার্ক, জলাশয় এবং নদীতীরের সৌন্দর্যায়ন হবে, তেমনই বাড়বে পাখিদের আনাগোনা। তাই পরিবেশ রক্ষা ও সৌন্দর্যায়ন উভয়ের লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত। |
|
গঙ্গাবক্ষে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র। |
নগরোন্নয়নসচিব দেবাশিস সেন বলেন, “বৈধ লাইসেন্সধারীদের জন্য রাজ্য সরকার হোর্ডিং লাগানোর বিকল্প জায়গা দেওয়ার কথা ভাববে। তবে, নদী, জলাশয় ও পার্কের সামনে থেকে হোর্ডিং সরানোর নীতিগত সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সার্বিক ভাবে সর্বত্রই বেআইনি হোর্ডিং সরিয়ে দেওয়ার কাজ চলবে।” এ ব্যাপারে একটি সরকারি কমিটি ইতিমধ্যে প্রথম পর্যায়ে পার্ক সার্কাস কানেক্টর, ই এম বাইপাস, বিমানবন্দর, রাজারহাট, নিউ টাউনের ‘গ্রিন করিডর’ এলাকাজুড়ে হোর্ডিং-সমীক্ষার কাজ চালিয়েছে। ওই সব রাস্তার পাশের ৩৩০টি হোর্ডিংয়ের কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে। তার মধ্যে ৯৭টি হোর্ডিং বেআইনি বলে চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলিও ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ভেঙে দেওয়া হবে।
অন্য দিকে, কলকাতা সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে প্রিন্সেপ ঘাট থেকে মিলেনিয়াম পার্ক পর্যন্ত ১৫ মিটার চওড়া কংক্রিটের ১ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন ‘পাথওয়ে’ গড়তে প্রতিরক্ষা দফতরের অনুমতি মেলেনি এখনও। ফিরহাদ বলেন, “প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি তাঁর মন্ত্রকের অধীন গঙ্গার পাড়ের জমিতে সৌন্দর্যায়ন ও মেরামতির অনুমোদন দিলেও নতুন করে স্থায়ী নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য নগরোন্নয়ন সচিব প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।”
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, পুর-সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সৌন্দর্যায়ন কমিটির সদস্যেরা এ দিন হাওড়ার দিকে বিদ্যাসাগর সেতুর কাছে এইচআরবিসি-র জমি দেখতে যান। সেখানেই ৯ একর জমিতে ‘কলকাতা আই’, ‘মেরিনা’ (জলক্রীড়ার পরিকাঠামো) করার পরিকল্পনা হয়েছে। তবে প্রস্তাবিত রোপওয়ে কলকাতা থেকে হাওড়ার দিকে গিয়ে যেখানে নামবে, সেই জমি রেলের।
তাই প্রয়োজনীয় জমি চেয়ে রাজ্যের তরফে রেলকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে বলে ফিরহাদ হাকিম জানান।
পুরমন্ত্রী জানান, যারা ‘লন্ডন আই’ তৈরি করেছে, সেই সংস্থাও ‘কলকাতা আই’ নির্মাণে আগ্রহী। সংস্থার প্রতিনিধিরা ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির প্রথম দিকে কলকাতায় আসছেন। আরও কয়েকটি সংস্থা ওই নির্মাণের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কাজের বরাত কাকে দেওয়া হবে, তা বিশেষজ্ঞ কমিটি ঠিক করবে। ফিরহাদ বলেন, “এইচআরবিসি-র জমিতে মেরিনা তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই পাঁচটি সংস্থা আগ্রহ প্রকাশ করছে। তাদের মধ্যে থেকে যোগ্যদের তালিকা করতে বলা হয়েছে পর্যটন দফতরকে। ওই তালিকার ভিত্তিতে ইঞ্জিনিয়ার ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঠিক হবে কারা কাজের বরাত পাবে।” |
|
|
|
|
|