ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা
হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজ অনুমোদন হারাচ্ছে ২৪ নভেম্বর
লদিয়ার বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ‘আইকেয়ার ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসাচর্’ (আইআইএমএসআর)-এর অনুমোদন বাতিল করছে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ২৪ নভেম্বর ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন হারাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কয়েক দিন আগেই এই মেডিক্যাল কলেজের ‘এসেনশিয়্যালিটি সার্টিফিকেট’ বাতিল করেছে রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের সঙ্কট আরও গভীর হল।
স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন বাতিল হওয়া মানে ওই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের বৈধতা বা স্বীকৃতি থাকবে না। তাঁরা স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন পাবেন না। স্বাস্থ্যকর্তারাই মনে করছেন, মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই)-র তরফে অনুমোদন বাতিল করা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
প্রসঙ্গত, হলদিয়ার প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ ওই মেডিক্যাল কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি। টেলিফোনে লক্ষ্মণবাবুকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর স্ত্রী তমালিকা পণ্ডা শেঠের দাবি, “আগামী ২৫ নভেম্বর এমসিআই আমাদের শুনানির জন্য ডেকেছে। সেখানে আমাদের কথা বলার একটা সুযোগ থাকছে। তার আগে আমরা কোথাও কিছু বলব না।”
একই ভবনে মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ দেখিয়ে আইআইএমএসআর কর্তৃপক্ষ বিধিভঙ্গ করেছে বলে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এর পর গত অক্টোবরে কলেজ কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয় রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু কলেজ যথাযথ জবাব দিতে পারেননি বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।
স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনোজ ঘোষ বলেছেন, “ওঁদের আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ওঁরা তা করতে পারেননি। আমরা পরিদর্শনে গিয়েও দেখেছি, ওই মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ক্ষেত্রে কোনও নিয়মকানুন মানা হয়নি। তাই ২৪ নভেম্বর হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন তুলে নেওয়া হচ্ছে।” রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এটা হওয়ারই ছিল। এই রকম ছন্নছাড়া ভাবে তৈরি কোনও মেডিক্যাল কলেজ কখনও অনুমোদন পেতে পারে না। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় আমাদেরও জানিয়েছে যে তারা অনুমোদন প্রত্যাহার করছে।”
ওই মেডিক্যাল কলেজে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড কোনও ছাত্র ভর্তি করেনি। ম্যানেজমেন্ট কোটায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা দিয়ে ৮৮ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হন। অনুমোদন বাতিল হলে তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে? তাঁদের জন্য স্বাস্থ্য দফতর বা স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবছে? এমসিআই সচিব সঙ্গীতা শর্মা আগেই বলেছিলেন, “হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন বাতিল হলে রাজ্য সরকারকেই ছাত্রদের দায়িত্ব নিতে হবে। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ভাগ করে তাঁদের ভর্তি করে নিতে হবে।”
কিন্তু শিক্ষাস্বাস্থ্য অধিকর্তা স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, “স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন বাতিল হওয়া মানে ওখানকার ছাত্ররা বৈধ নন। তাঁদের দায়িত্ব আমরা নেব না। ছাত্রছাত্রী ভর্তির আগেই নোটিফিকেশন দেওয়া হয়, হলদিয়া মেডিক্যালে যাঁরা ভর্তি হবেন তাঁরা নিজেদের দায়িত্বে হবেন। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পাশ কাউকে আমরা ওখানে পাঠাইনি। তার পরেও যাঁরা কথা না-শুনে ম্যানেজমেন্ট কোটায় ঢুকেছেন তাঁদের তো ভুগতেই হবে।”
কিন্তু রাজ্য সরকার যে ওই মেডিক্যাল কলেজকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার সময় লিখিত জানিয়েছিল, যে কোনও সমস্যা হলে ছাত্রছাত্রীদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তার কী হল?
জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেডিক্যালের সিলেকশন বোর্ডের প্রধান উৎপল দত্তের কথায়, “সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যে জানিয়েছে, কোনও সমস্যা হলে ছাত্রছাত্রীরা কলেজ কর্তৃপক্ষের থেকে তাঁদের টাকা ফেরত চাওয়া ছাড়া আর কোনও সুবিধা পাবেন না। তবে এর পর যদি সুপ্রিম কোর্ট আমাদের ছাত্রদের দায়িত্ব সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ দেয়, তা আমাদের মানতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.