বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে চিকিৎসার যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তাই এ বার স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চলেছে একটি বেসরকারি হাসপাতাল।
হাওড়ার ফুলেশ্বরের মনসাতলায় মুম্বই রোডের ধারে ১৬ বিঘা জমিতে গড়ে ওঠা ওই হাসপাতালের এক প্রান্তে গড়া হয়েছে নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যেখান থেকে প্রতিদিন ১.৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্তারা। তাঁদের হিসেবে, হাসপাতালে বিদ্যুৎ লাগবে ৮০০ কিলোওয়াট। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার গ্রিডে দেওয়া হবে। তা থেকে উপার্জন হবে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই চুক্তি হয়ে গিয়েছে বলেও তাঁদের দাবি। |
ফুলেশ্বরে নবনির্মিত হাসপাতালের বিদ্যুৎকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র |
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় একাধিক স্বাস্থ্য প্রকল্প, এমনকী ‘সিক নিউ বর্ন ইউনিট’ খোলার কাজও আটকে থাকছে, সেখানে এ রাজ্যেই একটি হাসপাতালে নিজেদের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ নিজেরাই উৎপাদন করার নজিরকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারাও। দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “এই প্রকল্পটি যদি সফল হয়, তা হলে তা আমাদেরও পথ দেখাবে।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ১০০ শতাংশ পরিবেশ-বান্ধব। তাঁরা জানিয়েছেন, জ্বালানি আসবে কাঁথি এবং তমলুক থেকে। ওই দু’জায়গায় চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁরা নিজেদের জমির একাংশে ধনচে গাছ চাষ করবেন। এই গাছ তিন মাসের মধ্যেই বেড়ে ওঠে। তার কাঠ জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হবে। তা ছাড়া, যে জমিতে ওই চাষ হবে, সেই জমিতে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেন যুক্ত হবে। যা অন্যান্য চাষের সহায়ক হবে। চাষিদের সমস্ত খরচ জোগাবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীদের খাওয়ানোর জন্য সব্জিচাষ হচ্ছে হাসপাতালে। যাঁদের মানসিক অবসাদ রয়েছে, তাঁরা সব্জি খেতের পাশে সবুজে ছাওয়া ‘গ্রাম’-এ কিছু দিন থেকে চিকিৎসার সুযোগ নিতে পারেন।
ক্যানসার চিকিৎসক শুভাশিস মিত্রের নেতৃত্বে ৫০ জন চিকিৎসকের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এই হাসপাতাল। এঁরা সকলেই দীর্ঘদিন বিদেশের
বিভিন্ন হাসপাতালে কাজ করেছেন। সব ছেড়ে এ বার মেতেছেন এই হাসপাতাল গড়ার কাজে। শুভাশিসবাবুর কথায়, “অনেক দিন ধরে ভাবছিলাম, রাজ্যে কিছু একটা করব। অনেক আলোচনা করেছি। তার পরে সকলে একমত হলাম যে একটি আধুনিক হাসপাতাল খুব জরুরি।” মাস ছয়েক ধরে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা শুরু হয়ে গিয়েছে। কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, অল্প কিছু দিনের মধ্যেই চালু হবে ৫০০ শয্যার অন্তর্বিভাগ। |