লোধাশুলির পথে লুঠপাট, ঘুরপথে ভিন্ রাজ্যের ট্রাক
পুলিশ নিরাপত্তা না দেওয়ায় পশ্চিম মেদিনীপুরের লোধাশুলির জঙ্গল পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে যাতায়াত করতে পারছে না পণ্যবাহী ট্রাক। মুখ্যমন্ত্রী, পরিবহণ মন্ত্রী থেকে রাজ্য পুলিশের কর্তাদের কাছে নিরাপত্তার আর্জি জানিয়েছেন ট্রাক চালক ও মালিকেরা। কিন্তু এখনও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
মাওবাদী হামলার ভয়ে দীর্ঘদিন ঝাড়খণ্ড সীমানা থেকে লোধাশুলি পর্যন্ত ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ট্রাক চলাচল বন্ধ ছিল। রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরে মাস চারেক আগে তা ফের শুরু হয়। ওই পথেই নাগপুর থেকে কপি ও নানা কাঁচা সব্জি, নাসিক থেকে পেঁয়াজ, আঙুর, বেদানা রাজ্যে আসে। চালকদের অভিযোগ, গত কিছু দিন ধরেই ওই পথে মাওবাদী না হলেও সাধারণ দুষ্কৃতীদের উৎপাত শুরু হয়েছে। গত ১৫ দিনে ৬০টিরও বেশি ট্রাকে ছিনতাই হয়েছে। মারধরে জখম অনেকে। যেখানে ক’দিন আগেও হাজার পাঁচেক ট্রাক যাতায়াত করত, সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে অর্ধেকে। ওই ২২ কিলোমিটার পথ এড়াতে আড়াইশো কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে ট্রাকগুলিকে। ফলে তেলের খরচ বাড়ছে। সেই কারণে এই সব আনাজ ও ফলের দাম বাড়ারও আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ মজুমদারের আক্ষেপ, “এমনকী দিনের বেলাতেও পরপর ট্রাক থামিয়ে লুঠতরাজ চলছে। চালকেরা ওই রাস্তায় যেতে চাইছেন না। অথচ ওই রাস্তা দিয়েই ফল, সব্জি-সহ প্রচুর জিনিস রাজ্যে ঢোকে। বিষয়টি আমরা মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্তাদের জানিয়েছি। অবিলম্বে পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে বড়সড় ক্ষতি হবে।”
ট্রাকচালকদের অভিযোগ, ঝাড়গ্রামের বালিভাসা ও মোহনপুরের জঙ্গলেই ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে। মাঝপথে গাছের গুঁড়ি ফেলে আটকানো হচ্ছে ট্রাক। রাস্তায় বিছিয়ে রাখা হচ্ছে ত্রিকোণ লোহার শলাকা, চলতি ভাষায় নাম ‘শিঙারা’। তাতে চাকা ফেঁসে ট্রাক থামতেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে দুষ্কৃতীরা। আতঙ্কে আপাতত বহু ট্রাকই ওড়িশার সম্বলপুর থেকে ৪২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কটক-খড়্গপুর হয়ে আড়াইশো কিলোমিটার ঘুরে রাজ্যে আসছে।
শুধু ট্রাক নয়। ওই রাস্তায় বাস ও অন্য গাড়িতেও ডাকাতি হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবারই একটি বাসের যাত্রীদের মারধর করে সর্বস্ব কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, লোধাশুলি থেকে ঝাড়গ্রামে যাওয়ার পথেও কলাবনি জঙ্গলেও ছিনতাই ঘটে। গাড়ি না থামালে ইটপাথর ছুড়ে মারা হয়। এমনকী, আশঙ্কাজনক রোগী নিয়ে কলকাতায় যাওয়ার পথে অ্যাম্বুল্যান্সেও ডাকাতি হয়ছে। লোহার ‘শিঙারা’য় দু’বার ফেঁসেছিল পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদার গাড়িও। সঙ্গে পুলিশ থাকায় অন্য কিছু ঘটেনি।
পুলিশ অবশ্য তেমন সক্রিয় নয়। ভুক্তভোগীরা জানান, একটি বড় ঘটনা ঘটলে কয়েক দিন রাস্তায় পুলিশ পিকেট বসে বা এক সঙ্গে কয়েকটি গাড়ি ‘এসকর্ট’ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ক’দিন পরেই যে-কে-সেই। তবে ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সুপার গৌরব শর্মার বক্তব্য, “ওই রাস্তায় মাঝে-মধ্যে এমন ঘটনা হয়। বিষয়টি আমরা দেখে নিচ্ছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.