দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর পেটে লাথি মারার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ওই মহিলার গর্ভপাত হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর স্বামী সুব্রত চক্রবর্তী। এই ঘটনায় তৃণমূলের এক স্থানীয় যুবনেতার নামেও অভিযোগ উঠেছে। কসবার হালতু এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ জয়া চক্রবর্তী (২৮) এবং তাঁর দুই ননদ শেফালি প্রসাদ ও শিপ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে সুশীল বাগ ও শীতল কর্মকার নামে ২ ব্যক্তিকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। জয়ার স্বামী সুব্রতবাবুর অভিযোগ, ধৃতদের পক্ষ নিয়ে কাল রাতেই তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে পাড়াছাড়া করার হুমকি দেন স্থানীয় ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের যুব সভাপতি তারক সরকার। তাঁর স্ত্রীকে লাথি মারার পর অভিযুক্তরা যে তারকবাবুর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়, তাও পুলিশকে জানানো হয়েছে বলে দাবি সুব্রতবাবুর। পুলিশের দাবি, তারকবাবুর নামে লিখিত অভিযোগ নেই। |
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, কার্তিকপুজো উপলক্ষে শেফালি ও শিপ্রাদেবী দিন কয়েক আগে কসবার শরৎ ঘোষ গার্ডেন রোডে তাঁদের ভাইয়ের বাড়িতে আসেন। শুক্রবার রাতে শেফালিদেবী নিজেই গাড়ি চালিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে ফিরছিলেন। বাড়ির সামনে একটি মুদির দোকান রয়েছে। শেফালিদেবীর অভিযোগ, “গাড়ি পার্ক করছিলাম। সেই সময় স্থানীয় বাসিন্দা শীতলকে কিছু বলছিলেন দোকানের মালিক সুশীল। এর কিছু পরেই শীতল জোর করে গাড়িতে ঢুকে অশালীন আচরণ শুরু করে।” শেফালিদেবীর চিৎকার শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন সুব্রতবাবু, তাঁর স্ত্রী জয়াদেবী ও বড়দিদি শিপ্রা।
পুলিশের কাছে সুব্রতবাবুর অভিযোগ, পাড়ার লোকজন ডাকতেই সুশীল এবং শীতল বেপরোয়া হয়ে তাঁর স্ত্রীকে কিল-চড়-ঘুষি মারতে থাকে। লাথি মারা হয় পেটেও। অচৈতন্য হয়ে পড়েন জয়াদেবী। শিপ্রাকেও মারধর করা হয়। স্ত্রীকে নিয়ে দুই দিদির সাহায্যে সুব্রতবাবু বাড়িতে ঢোকেন। কিছু পরে জয়াদেবীর রক্তপাত শুরু হয়। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বাঙুর হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তার তাঁকে দেখে ‘লেবার রুম’-এ নিয়ে যান। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে বললেও সুব্রতবাবুরা রাজি হননি। স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি চলে আসেন সুব্রতবাবু। তিনি ও শেফালিদেবী পরে দাবি করেন, জয়াদেবীর গর্ভপাত হয়েছে। বিধ্বস্ত সুব্রতবাবু রাতেই কসবা থানায় যান। পুলিশের কাছে সুশীল ও শীতলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর কথায়, “থানা থেকে ফিরে দেখি, বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তারকবাবু। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার জন্য ওই যুবনেতা আমাকে পাড়াছাড়া করার হুমকি দেন।” তারকবাবুর দাবি, তিনি গোলমাল মেটাতে যান। পাড়াছাড়া করার হুমকি দেননি। পুলিশ জানায়, এ দিন তারকবাবু অভিযোগ করেন, তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে কয়েক জন স্থানীয় ব্যক্তি ভাঙচুর চালিয়েছে। |