চা শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দায় ভাগ করে নিতে কেন্দ্রকে ফের আর্জি জানাল রাজ্য সরকার।
১৯৫১ সালের ‘প্ল্যান্টেশন লেবার’ আইন অনুযায়ী, চা শ্রমিকদের রেশন, বাসস্থান, ন্যূনতম চিকিৎসা ইত্যাদি জোগানোর দায় শুধু বাগান মালিকদেরই। যে কারণে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি উঠলেই এই খরচের কথা বার বার তুলে ধরেন তাঁদের একটা বড় অংশ। এই সমস্যা আরও প্রবল বন্ধ চা বাগানে। কারণ, সেখানেও এই সব সুবিধা পেতে মালিকদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে বাধ্য হন কর্মীরা। কিন্তু সেই সময় মজুরি থেকে রেশন, প্রায় সবই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গভীর সঙ্কটের মুখে পড়েন তাঁরা। ২০০১ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে শুধু এই কারণে অনাহার ও অপুষ্টিতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বন্ধ বাগানে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক বা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু হয়েছে বলে গত অগস্টেই বিধানসভায় অভিযোগ করেছিলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। |
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২০০৩ সালে একটি আন্তর্মন্ত্রক কমিটি তৈরি করে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক ছিল। ওই কমিটির সুপারিশ ছিল, শ্রমিকদের রেশন, বাসস্থান ইত্যাদির দায়ভার শুধু মালিকদের বহন করতে হলে রুগ্ণ হয়ে পড়বে বাগানগুলি। তাই এই দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে। তাই শ্রমিকদের সামাজিক খাতের খরচের ৫০% বহন করুক কেন্দ্র। ৪০% দিক মালিকেরা। আর বাকি ১০ শতাংশের দায় নিক রাজ্য।
শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু জানান, ওই সুপারিশ সামনে রেখেই শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তার দায়ের ভাগ নিতে কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছে রাজ্য। একই সঙ্গে তাঁরা চান, শ্রমিকদের পঞ্চায়েত ব্যবস্থার অধীনে এনে সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পগুলির সুবিধা দিতে। এর জন্য আইন সংশোধনের পথেও এগোচ্ছে শ্রম দফতর।
পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “আমরা চাই পঞ্চায়েতের জন্য কেন্দ্রের বাসস্থান, জল সরবরাহ, বিদ্যুৎ, রেশন ইত্যাদি নিয়ে যে সব দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্প রয়েছে, তার সুবিধা চা বাগানেও প্রসারিত হোক। চা শ্রমিকেরা মূলত উপজাতি গোষ্ঠীভুক্ত। ফলে তাঁদের আরও বেশি করে তা পাওয়া জরুরি।” |