পাচার হওয়া গরুর খুরে
নষ্ট হচ্ছে ফসল
সীমান্তের মাঠে ৬ বিঘা জমি থাকলেও দেড় বছর ধরে দু-মুঠো ফসল তুলতে পারেননি মহিম বিশ্বাস। ৮ বিঘা জমির মালিক অর্ণব মণ্ডলকে চাল কিনে ভাত খেতে হচ্ছে। রানিনগর সীমান্ত এলাকার আবুল শেখ, হজরত শেখদেরও হাল একই। পাচারকারীদের দাপটে সীমান্তের মোহনগঞ্জ, কাতলামারি, হারুডাঙ্গা এলাকার কয়েক হাজার বিঘা চাষের জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। অনেক সময় গবাদি পশুর পায়ের চাপে সদ্য তৈরি হওয়া ফসল পিষে যাচ্ছে। আবার কখনও পাকা ফসলও নষ্ট করছে গবাদি পশু। বিষয়টি নিয়ে রানিনগর ২ ব্লকের বিডিওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন সীমান্তের চাষিরা। ব্লক প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রশাসনের তরফে দাবি জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহে ওই এলাকায় চাষের মাঠ পরিদর্শনে যাবেন ব্লকের কর্তারা।
সীমান্তের মাঠে ফসল নষ্ট হওয়া নতুন ঘটনা নয়। তবে বছর দেড়েক ধরে ওই ঘটনা চরমে পৌঁছিয়েছে। বিশেষ করে সরন্দাজপুর এলাকার চাষিরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত। ওই গ্রামের চাষি মহিম বিশ্বাস বলেন, “সরন্দাজপুর গ্রামে আমার ৬ বিঘা চাষের জমি। বছর দুয়েক আগেও ওই জমিতে তিনটি ফসল হত। অথচ দেড় বছর থেকে দু’মুঠো ফসলও ঘরে তুলতে পারিনি। ছোট একটা ব্যবসা আছে, তাতে কোনওক্রমে সংসার চলে।” একই অভিযোগ আবুল শেখেরও। তাঁর কথায়, “আমাদের এলাকার একটা বড় অংশের চাষিরা পাচারের সঙ্গে নিজেদের জড়িয়ে ফেলেছে। ফলে আমরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছি। তবে এই অবস্থা চলতে থাকলে হয়ত কোনও একদিন আমাদেরও পাচারের পথে নামতে হবে।”
সীমান্তের মোহনগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা সুখেন ঘোষ কাতলামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। তিনি জানান, প্রতি বছরই এমন হবে ভাবতে পারেননি তাঁরা। কিন্তু বছর দেড়েক ধরে পাচারকারীদের অত্যাচার বাড়ছে। তিনি বলেন, “এখন প্রতি রাতে হাজার হাজার গবাদিপশু পাচার হচ্ছে সীমান্ত দিয়ে। আর সীমান্তের দিকে পানি দেওয়ার পথ হিসেবে তারা বেছে নিচ্ছে আমাদের ফসলি জমি।” ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের মহম্মদ মোল্লা বলেন, “পাচারের সঙ্গে এলাকার চাষি জড়িয়ে। যুবকরা কম সময়ে অনেক টাকা রোজগার করতে চাইছে।” প্রায় পরিবারের কেউ না কেউ ওই চক্রে জড়িয়ে পড়েছে। তবে কিছু পরিবার আছেন যাঁরা ওই পথে নামতে পারেনি। এলাকার মানুষ সচেতন না হলে এই সমস্যার সমাধান হওয়া কঠিন।”
রানিনগর ২ ব্লকের বিডিও সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “চাষিরা অভিযোগ করছেন। বিষয়টি বড় চিন্তার। এর আগেও গবাদি পশু পাচার করা নিয়ে বার বার এলাকার মানুষদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার পরেও ওই একই ঘটনা ঘটছে। এ বার কনা হতে হবে। পরিস্থিতি দেখে প্রয়োজনে বিএসএফকে নিয়ে আবার আলোচনায় বসা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.